চিটাগাং ভাইকিংসকে জেতালেন তাসকিন-রঙ্কি
লুক রঙ্কির তান্ডবের পর মিসবাউল হকদের মন্থর ব্যাটিং। এক ইনিংসেরই দুই রূপ ছিল চিটাগাং ভাইকিংসের। রান তাড়ায় রংপুরের ইনিংসেও থাকল উত্থান পতনের গল্পে ভরা। শেষে গিয়ে হেরেছে ১২ রানে। তিন উইকেট নিয়ে ভাইকিংসের বোলিং হিরো তাসকিন আহমেদ।
টস হেরে আগে ব্যাট করে যেভাবে শুরু করেছিলেন রঙ্কি, রান যেতে পারত দুইশ ছাড়িয়ে। শেষ ১০ ওভারের অস্বাভাবিক শ্লথ ব্যাটিংয়ে ভাইকিংস পায় ১৬৬ রানের পুঁজি। পরে ব্যাট করে ওই রান তাড়া করতে পারেনি মাশরাফির দল। ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেটে ১৫৫ রানে গিয়ে থেমেছে তাদের ইনিংস।
রান তাড়ায় শুরুতেই রংপুরের চমক। জনসন চার্লসের সঙ্গে ওপেনিংয়ে নামিয়ে দেওয়া হয় জিয়াউর রহমানকে। তবে ক্লিক করেনি তা। দুই ওপেনারই ফিরেছেন ২০ রানের মধ্যে। ওয়ানডাউনে নামা মোহাম্মদ মিঠুন ছিলেন ছন্দে। ১৫ বলে ২১ রান করে অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বলে ব্যাট ছুঁইয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।
পঞ্চম উইকেটে ৪৯ রানের জুটি গড়ে দলকে জেতার রাস্তাতেই রেখেছিলেন রবি বোপারা ও শাহরিয়ার নাফীস। তাসকিনের এক স্পেলে তছনছ হয়ে যায় তা। তাসকিনের পর পর তিন বলে তিন পড়ে রংপুর রাইডার্সের। শাহরিয়ার নাফীসকে বোল্ড করার পরের বলেই সামিউল্লাহ শেনওয়ারি ফ্লিক করে ক্যাচ দুলে দেন মিড উইকেটে। হ্যাটট্রিক বলেও উইকেট পড়েছে। তবে থিসিরে পেরার শট থেকে বলে পা লাগিয়ে নন স্ট্রাইকিং প্রান্তের স্টাম্প ভাঙ্গেন তাসকিন। দুর্ভাগ্যজনক রান আউটে থেমে যায় বোপারার ৩৮ রানের ইনিংস। থিসিরা পেরেরা এসে চার ছয়ে মাতিয়ে রেখেছিলেন রংপুরের গ্যালারি। তাসকিন ছেঁটেছেন তাকেও। ছক্কা পেটাতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দেন ১১ রান করা পেরেরা। ওভারপ্রতি ১০ করে রান তুলার সমীকরণে ৭ উইকেট হারিয়ে তখনই অনেকটা ব্যাকফুটে মাশরাফির দল।
অথচ এদিনও বিশাল স্কোর গড়ার মওকা পেয়েছিল চিটাগাং ভাইকিংস। লুক রঙ্কির তান্ডব মন্থর ব্যাটিংয়ে নষ্ট করেছেন মিসবাহ উল হকরা।
মাশরাফির প্রথম ওভারে ১২, সোহাগ গাজীর প্রথম ওভারে ১৫ , নাজমুল অপুর প্রথম ওভারে ২৩। টস হেরে ব্যাট করতে সব মিলিয়ে প্রথম ৩ ওভারেই ৫০ রান তুলে ফেলেছিল চিটাগাং ভাইকিংস। মাত্র ১৯ বলে ফিফটি করে ফেলেন রঙ্কি। সেই রঙ্কি ৩৫ বলে ৭৮ করে আউট হতেই একদম উলটো চিত্র। ঠিক আগের ম্যাচের মতো দশা ভাইকিংসদের। প্রথম ১০ ওভারে স্কোরবোর্ডে ছিল ১১২ রান। এবারও আগের ম্যাচের মতো শেষ ১০ ওভারে তারা করে ৫৪ রান। প্রথম ১০ ওভারে বাউন্ডারি এসেছে ১৭টি, পরের ১০ ওভারে বাউন্ডারি এলো মাত্র ১টি! চার নম্বরে নেমে মিসবাহ উল হক ৩০ বলে মাত্র ১ বাউন্ডারিতে করেন ২৯ রান। প্রায় অচেনা ইংলিশ লুইস রেইস ১৬ বলে করেন ১০। ছয় নম্বরে নেমে ১২ বলে ১৫ রান করে অপরাজিত ছিলেন এনামুল হক বিজয়। ২০ ওভারের শেষ ৪ উইকেট হারিয়ে ভাইকিংস করতে পারল ১৬৬ রান।
রকেট গতিতে ছুটতে থাকা ভাইকিংসদের প্রথম আঘাত দেন মাশরাফি মর্তুজা। আগের ম্যাচে ৩৮ রান করা সৌম্য এদিন নিষ্প্রভ। ৭ রান করেই মাশরাফির স্লোয়ার তুলে দেন লং অফে। বরাবর কুড়িতেই বুড়ি দিলশান মুনাবিরা। এবারও ওয়ানডাউনে নেমে আউট হয়েছেন ২০ রান করে। এরপরও দর্শকদের জন্য বিরক্তির জুটির শুরু। বয়সের ভারে ন্যুজ মিসবাহ আর বাংলাদেশের কন্ডিশনে হাঁসফাঁস করা লুইস বাউন্ডারি মারা দূরে থাক স্ট্রাইক রোটেটও করতে পারছিলেন না। পেরেরার বলে আউট হয়ে লুইস তবু নিস্তার দিয়েছেন। মিসবাহ আর আউটই হননি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
চিটাগাং ভাইকিংস: ১৬৬/৪ (রঙ্কি ৭৮, সৌম্য ৭, মুনাবিরা ২০, মিহবাহ ৩০*, রেইস ১৬, বিজয় ১৫* ; বোপারা ২/১৪, পেরেরা ১/১৬)
রংপুর রাইডার্স:১৫৫/৮ (চার্লস ১, জিয়া ১১, মিঠুন ২৩ , বোপারা ৩৮ , শাহরিয়ার নাফীস ২৬, শেনওয়ারি ০, পেরেরা ১১, মাশরাফি ১৩, গাজী ১১, মালিঙ্গা ১৪ )
টস: রংপুর রাইডার্স
ফল: চিটাগাং ভাইকিংস ১১ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ
Comments