প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা পদত্যাগ করছেন। বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির দপ্তরে তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন প্রধান বিচারপতির পদত্যাগপত্র পৌঁছানোর কথা দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ২ অক্টোবর এক মাস ছুটির কথা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বরাবর চিঠি পাঠান প্রধান বিচারপতি। প্রথমে ১ নভেম্বর পর্যন্ত ছুটিতে থাকার কথা থাকলেও পরে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত ছুটিতে থাকার ইচ্ছার কথা জানান তিনি। বিচারপতি সিনহা ১৩ অক্টোবর অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে দেশ ছাড়েন।
সেই হিসাব অনুযায়ী গতকাল তার ছুটি শেষ হয়। ছুটি শেষ হওয়ার ব্যাপারে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সাথে গতকাল যোগাযোগ করা হলে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, প্রধান বিচারপতি ছুটি বাড়িয়েছেন কি না তিনি জানেন না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, চিকিৎসার জন্য গত ৬ নভেম্বর তিনি অস্ট্রেলিয়া থেকে সিঙ্গাপুর যান। অসুস্থ মেয়েকে দেখতে গতকাল সেখান থেকে তিনি কানাডার উদ্দেশে যাত্রা করেন।
ছুটি চেয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রধান বিচারপতির চিঠির ব্যাপারে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, অসুস্থ হওয়ায় এক মাসের ছুটিতে থাকার ইচ্ছা পোষণ করেছেন প্রধান বিচারপতি। তবে অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে দেশ ছাড়ার রাতে বাসভবন থেকে বের হয়ে বিচারপতি সিনহা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি সম্পূর্ণ সুস্থ আছি। কিন্তু ইদানিং একটি রায় নিয়ে রাজনৈতিক মহল, আইনজীবী ও বিশেষভাবে সরকারের মাননীয় কয়েকজন মন্ত্রী ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে ব্যক্তিগতভাবে যেভাবে সমালোচনা করেছেন, এতে আমি সত্যিই বিব্রত।’
সেসময় তিনি একটি লিখিত বক্তব্য সাংবাদিকদের দেন। লিখিত বক্তব্যে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ হওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন তিনি।
অসদাচরণ ও অযোগ্যতার কারণে সর্বোচ্চ আদালতের বিচারকদের বরখাস্ত করার ক্ষমতা জাতীয় সংসদের ওপর দেওয়ার বিষয়ে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল সংক্রান্ত হাই কোর্টের রায় বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। গত ১ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়। রায়ের পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশের রাজনীতি ও সংসদ সদস্যদের নিয়ে মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি। এর পর থেকেই সংশোধনী বাতিলে ক্ষুব্ধ মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের নেতারা প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের দাবিতে সরব হন।
Comments