শক্তিশালী ভূমিকম্পে ইরান-ইরাকে চার শতাধিক নিহত
ইরান ও ইরাকের সীমান্তবর্তী পার্বত্য এলাকায় শক্তিশালী ভূমিকম্পে চার শতাধিক মানুষ নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৭.৩। ভূমিধসে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
ভুমিকম্পে ইরানে ৪০৭ জন নিহত ও আহত হয়েছেন অন্তত ছয় হাজার ৭০০ মানুষ। সীমান্তের অপর পাশে ইরাক থেকেও আট জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। ইরাকের সময় রবিবার রাত ৯টা ২০মিনিটে শুরু হওয়া ভূমিকম্প বাগদাদ, তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল এমনকি ইসরাইল থেকেও অনুভূত হয়েছে।
টুইটারে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে উত্তর ইরাকের সুলাইমানিয়া শহরে ভূমিকম্পের আঘাতে ঘরের জানালার কাঁচ ভেঙে গেছে। আতঙ্কিত লোকজনকে এসময় ঘর ছেড়ে বাইরে ছুটোছুটি করতেও দেখে যায়। পার্শ্ববর্তী দরবান্দিখান শহরে বেশ কিছু ভবন ধসে পড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানায়, ভূমিকম্পটির উপকেন্দ্র ছিল ইরাকি কুর্দিস্তানের হালাবজা শহরের ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে। ভূপৃষ্ঠের মাত্র ২৫ কিলোমিটার গভীরে উৎপত্তিস্থল হওয়ায় এতে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে।
অ্যারাবিয়ান ও ইউরেশিয়ান টেকটোনিক প্লেটের মধ্যবর্তী দেড় হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ ফল্ট লাইনে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। ফল্ট লাইনটি পশ্চিম ইরাক থেকে শুরু হয়ে দেশটির উত্তর পূর্বাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত। ওই পুরো অঞ্চলটিকে ভূমিকম্প প্রবণ হিসেবে ধরা হয়।
এর আগে ১৯৯০ সালে কাস্পিয়ান সাগরের পাশে উত্তর ইরাকে ৭.৪ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ নিহত ও আরও প্রায় তিন লাখ আহত হয়। কয়েক ডজন শহর ও দুই হাজার গ্রাম বিধ্বস্ত হয়ে সেবার পাঁচ লাখ মানুষ গৃহহীন হয়েছিল।
এর ১৩ বছর পর ইরানের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলীয় প্রাচীন বাম শহরে এক প্রলয়ঙ্করী ভুমিকম্পে ৩১ হাজার মানুষ প্রাণ হারায়। মাটির বাড়ির জন্য সুপরিচিত শহরটি ওই ভূমিকম্পে মাটিতে মিশে যায়।
এর পর আরও দুটি শক্তিশালী ভূমিকম্প ইরানকে কাঁপিয়েছে। ২০০৫ ও ২০১২ সালের দুটি ভূমিকম্পে যথাক্রমে আরও প্রায় ৬০০ ও ৩০০ জন নিহত হয়েছিল।
Comments