যুবরাজের মৃত্যুই এখন ‘সমাধান’

অযত্ন, অবহেলা আর বৃদ্ধ বয়সের কারণে ধুকতে থাকা কুমিল্লা চিড়িয়াখানার মৃতপ্রায় সিংহ যুবরাজের যন্ত্রণার অবসান ঘটানোকেই এখন একমাত্র সমাধান হিসেবে দেখছেন প্রখ্যাত বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ বিশেষজ্ঞ রেজা খান।
Lion at Comilla Zoo
পাশেই বসে রয়েছে বিড়াল, তাতেও নির্বিকার কুমিল্লা চিড়িয়াখানার সিংহ যুবরাজ। ছবি: খালিদ বিন নজরুল

অযত্ন, অবহেলা আর বৃদ্ধ বয়সের কারণে ধুকতে থাকা কুমিল্লা চিড়িয়াখানার মৃতপ্রায় সিংহ যুবরাজের যন্ত্রণার অবসান ঘটানোকেই এখন একমাত্র সমাধান হিসেবে দেখছেন প্রখ্যাত বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ বিশেষজ্ঞ রেজা খান।

১৭ বছর বয়সী যুবরাজের জরাজীর্ণ ছবি সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। হাড় জিরজিরে এই সিংহটি গর্জন করা তো দুরের কথা ঠিকমত খাবারও খেতে পারে না। সারাদিন খাঁচার ভেতর এক কোণায় শুয়ে থাকে যুবরাজ। সিংহটির এই দুর্দশার জন্য চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করছেন প্রায় সবাই। অনেকের অভিযোগ, অনাহারে রাখার কারণেই পশুরাজের আজ এই অবস্থা।

তীব্র সমালোচনার মুখে সিংহটির শারীরিক অবস্থা জানতে পশুচিকিৎসক দেখানো হয় সিংহটিকে। পরীক্ষা নীরিক্ষার পর তারা রিপোর্ট দিয়েছেন, যুবরাজকে আর সুস্থ করে তোলা সম্ভব নয়।

যুবরাজের এমন অবস্থা প্রসঙ্গে দুবাই চিড়িয়াখানার সাবেক প্রধান রিয়াজ খান বলেন, “আর কোনো সময়ক্ষেপণ না করে অসহায় প্রাণীটিকে ঘুম পাড়িয়ে দিতে হবে। আমি মনে করি, এমনটা করলেই তার প্রতি দয়া দেখানো হবে।”

২০০০ সালে জন্ম যুবরাজের। তার বয়স যখন চার তখন তাকে কুমিল্লা চিড়িয়াখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তখন থেকে কোনো রকম সঙ্গী ছাড়াই সে খাঁচাবন্দি রয়েছে। কয়েক মাস আগে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। বলতে গেলে সে খাওয়াদাওয়াই ছড়ে দেয়।

কুমিল্লা জেলা পরিষদের প্রধান কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার ভৌমিক বলেন, “গরুর মাংস খাওয়া ছেড়ে দিয়েছে যুবরাজ। দিনে এখন কোনোরকমে একটি মুরগি খেয়ে সে বেঁচে আছে।”

তবে মন্দের মধ্যে ভালো খবর হল, চিড়িয়াখানার দর্শনার্থীদের যুবরাজের দুর্দশা আর দেখতে হচ্ছে না। লোকচক্ষুর আড়ালে রাখতে চটের পর্দা দিয়ে তার খাঁচা ঢেকে দেওয়া হয়েছে।

রেজা খানের মতে, বয়সের কারণে চিড়িয়াখানার যেসব পশু খাওয়া বন্ধ করে দেয় বা ওষুধেও যাদের কোনো কাজ হয় না এমন পশুকে যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে ঘুম পাড়িয়ে দেওয়া হয়। সব জায়গাতেই এমনটা করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, এটা একরকম অলিখিত আইন।

যুবরাজের অবস্থা প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে দ্য ডেইলি স্টারকে ইমেইলে তিনি বলেন, অসুস্থ্য পশুকে প্রদর্শন করা চরম নিষ্ঠুরতার পরিচায়ক।

Comments

The Daily Star  | English
Abnormally high-priced purchases by Power Grid Company of Bangladesh

Goods worth Tk 16k imported at Tk 2.63 crore

State-run Power Grid Company of Bangladesh Ltd (PGCBL) imported 68 kilograms of tower bolts, nuts and washers from India for a whopping $2,39,695 or Tk 2.63 crore, which is 1,619 times the contract value.

10h ago