মাহেলার টোটকায় বাজিমাত আরিফুলের

ঘরোয়া ক্রিকেটে পরিচিত নাম আরিফুল হক। জাতীয় লিগ, প্রিমিয়ার লিগে মাঝারি মানের নৈপুণ্য তার প্রায়ই ছিল। গেল বিপিএলেও দুএকবার দেখিয়েছিলেন ঝলক। তবে অভাব ছিল ধারাবাহিকতার। এবার প্রতি ম্যাচেই অবদান রাখছেন তিনি। খেলছেন কার্যকর সব ইনিংস। রাজশাহীর বিপক্ষে হারতে হারতে ম্যাচ জিতিয়ে পার্শ্ব নায়ক থেকে তিনিই বনে যান মূল হিরো। তার এই বদলে যাওয়া ব্যাটিং অ্যাপ্রোচে নাকি অবদান কোচ মাহেলা জয়াবর্ধনের।
শেষ তিন ওভারে জেতার জন্য খুলনার দরকার ছিল ৩৬ রান। হাতে উইকেট মাত্র দুইখানা। স্বীকৃত ব্যাটসম্যান বলতে আছেন কেবল আরিফুল নিজেই। হোসেন আলির ওই ওভার থেকেই আরিফুল নিয়ে নেন ১৭ রান। তাকে নাকি টার্গেট করেছেন পরিকল্পনা এঁটেই, ‘হোসেন আলির ওই ওভারটা টার্গেট করছিলাম কারণ পরে আবার ফরেন আসবে। ও ট্রাই করছিল ব্লকে করার। আমার টার্গেট ছিল হিট করব নাহলে দুই নেব।’
বারবার রঙ পালটানো ম্যাচ যখন শেষ তিন ওভারের সমীকরণে তখন অনেকেই ধরে নিয়েছিল জিততে যাচ্ছে হয়ত রাজশাহী। টেল এন্ডার নিয়ে ওভারপ্রতি ১২ করে কি আর নিতে পারবে খুলনা? আরিফুল ভেবেছিলেন ভিন্ন, ‘আমার বিশ্বাস ছিল যে আমি শেষ পর্যন্ত যদি ক্যারি করতে পারি আমার মনে হয় আমরা জিতব। আমার আত্মবিশ্বাস ছিল, সাথে জুনায়েদ ভাই ছিল, উনিও সাপোর্ট করছে। ফিল্ডার যখন বাইরে থাকে মিস হইলেও দুই হওয়ার চান্স থাকে। এইজন্য আমাদের বোঝাপড়া ভালো হয়েছে। ’
আগে হঠাৎ একটা ইনিংস খেলতেন। ছিল না ধারাবাহিকতা। এবার প্রতি ম্যাচেই পাচ্ছেন ছন্দ। জানালেন মাহেলা জয়াবর্ধনের সঙ্গে কাজ করেছেন ভারসাম্য নিয়ে। তার টোটকাতেই মিলছে ফল , ‘এবার ভারসাম্য নিয়ে কাজ করেছি। আমার আগে ভারসাম্যে সমস্যা ছিল। মাহেলা (কোচ মাহেলা জয়াবর্ধনে) এবার ওটা নিয়ে কাজ করেছে। মারার সময় আমার শরীরের ওজন পেছনে যেত মারার সময়। মাহেলা এই জিনিসটা নিয়ে কাজ করাতে মনে হচ্ছে রান পাচ্ছি। ’
কেবল কোচ আরিফুল পিঠে ভরসার হাত পাচ্ছেন অধিনায়কেরও, ‘রিয়াদ ভাই আমাকে অনেক সাপোর্ট করছে। বলছে- তুই গত বছর যেভাবে সব খেলা শেষ করে আসছিস, নট আউট থাকছিস বেশি, এবারও চিন্তা করবি নট আউট থাকার।’
এই ম্যাচ থেকে পাওয়া আত্মবিশ্বাস কাজে লাগাতে চান পরেও, ‘আসলে এভাবে ম্যাচ জিতলে আত্মবিশ্বাস অনেক উপরে উঠে যায়। আবার এমন পরিস্থিতিতে পড়লে সেটা কাজে দিবে। এভাবে ম্যাচ জেতানোটা বা শেষ করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ’
জাতীয় লিগে সেঞ্চুরি পেয়েছেন কিন্তু প্রিমিয়ার লিগ গেছে সাদামাটা। মরতে বসা আশা আবার জাগাচ্ছে বিপিএল ‘গত প্রিমিয়ার লিগে আমার ব্যাটিং পজিশন ঠিক ছিল না। আমি অনেক নিচে ব্যাটিং করেছি, এমনও গেছে আমি নয়ে ব্যাট করেছি। আটে ব্যাট করেছি। আসলে ওই সময় ক্রিজে গেলে বড় রান করা যায় না। আমার চিন্তা ভাবনা আগে থেকে বড় কিছু কিন্তু কন্টিনিউ করতে পারিনি, আবার সেটা বড় হচ্ছে।’
বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলে শেষ দিকে ঝড় তুলা ব্যাটসম্যানের অভাব আছে। আরিফুল চোখ সেদিকে রেখেই বললেন ফরম্যাটটা তার খুব প্রিয়, টি-টোয়েন্টি খেলা আমার অনেক প্রিয়। অনেক শর্ট খেলা কিন্তু ইন্টেনসিটি অনেক হাই থাকে।’
Comments