‘…আমি ডাকিতাছি তুমি ঘুমাইছ নাকি’
দীর্ঘদিন সংগীতের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত থাকলেও বারী সিদ্দিকী শিল্পী হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি পান ১৯৯৯ সালে হুমায়ূন আহমেদের ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ চলচ্চিত্রটিতে গান করার মাধ্যমে। তাঁর শ্রোতাপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘শুয়াচান পাখি আমার’, ‘পুবালি বাতাসে’, ‘আমার গায়ে যত দুঃখ সয়’, ‘ওলো ভাবিজান নাউ বাওয়া’ প্রমুখ।
এসব গানের মনোমুগ্ধকর সুরে ভক্তরা এখনো আবিষ্ট থাকেন। তবে তাঁদের প্রিয় শিল্পীর দেখা মিলবে না আর। বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) দিবাগত রাত দুটোর দিকে ৬৩ বছর বয়সে ‘শুয়াচান পাখি’-র এই শিল্পী ছেড়ে যান আপন নিবাস।
বারী সিদ্দিকীর ছেলে সাব্বির সিদ্দিকী দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনকে বলেন, “বাবার মরদেহ দাফন করা হবে নেত্রকোনা জেলা সদরের চল্লিশা বাজারের কার্লি গ্রামে নিজস্ব বাউলবাড়িতে। বাবা জীবদ্দশায় বলেছিলেন, তাঁর মরদেহ যেন বাউলবাড়িতে দাফন করা হয়। তাঁর ইচ্ছে অনুযায়ী সেখানেই আজ বাদ আসর দাফন করা হবে।”
নেত্রকোনায় নেওয়ার আগে সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ টেলিভিশনে বারী সিদ্দিকীর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর গত ১৭ নভেম্বর থেকে তিনি ভর্তি ছিলেন রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে। অবস্থার কোন উন্নতি না হওয়ায় এতো দিন তাঁকে রাখা হয় লাইফ সাপোর্টে।
চিকিৎসকদের মতে, বারী সিদ্দিকীর দুটি কিডনিই অকার্যকর ছিলো। এছাড়াও, ছিলো বহুমূত্র রোগ।
বারী সিদ্দিকীর পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, “গত দুই বছর ধরে এই শিল্পী কিডনি সমস্যায় ভুগছিলেন। গত বছর থেকে সপ্তাহে তিনদিন তাঁর কিডনির ডায়ালাইসিস করা হতো।”
১৯৫৪ সালের ১৫ নভেম্বর নেত্রকোনায় এক সংগীত-পছন্দ পরিবারে জন্ম বারী সিদ্দিকীর। ছোটবেলায় তিনি সংগীত-শিক্ষা লাভ করেন উস্তাদ গোপাল দত্ত, উস্তাদ আমিনুর রহমান, ববির খান এবং পান্নালাল ঘোষের কাছ থেকে।
এরপর, বারীর প্রবল আগ্রহ জন্মে বাঁশির প্রতি। ভারতে গিয়ে ধ্রুপদী বংশীবাদনের ওপর প্রশিক্ষণ নেন বিশিষ্ট শিল্পী ভিজি করনাদের কাছে।
আজ স্ত্রী, দুই ছেলে, এক মেয়েসহ অসংখ্য ভক্তদের তিনি রেখে গেলেন শোকাহত করে।
Comments