ভারতের শিলিগুড়িতে বাংলাদেশের ‘পাখিদের বৈঠক’

আলোচিত প্রযোজনা ‘পাখিদের বৈঠক’ নিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি গিয়েছে পঞ্চগড়ের নাট্য দল ভূমিজ। শিলিগুড়ি ঋত্বিক নাট্য সংস্থার আমন্ত্রণে এর ৩৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত নাট্য উৎসবে যোগ দিচ্ছে দলটি।
Pakhider Boithak
‘পাখিদের বৈঠক’ নাটকের একটি দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

আলোচিত প্রযোজনা ‘পাখিদের বৈঠক’ নিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি গিয়েছে পঞ্চগড়ের নাট্য দল ভূমিজ। শিলিগুড়ি ঋত্বিক নাট্য সংস্থার আমন্ত্রণে এর ৩৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত নাট্য উৎসবে যোগ দিচ্ছে দলটি।

পাঁচদিনের উৎসবের ৩য় দিন আজ ১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় দীনবন্ধু মঞ্চে ‘পাখিদের বৈঠক’ মঞ্চায়ন করবে ভূমিজ। এর আগে ঢাকাসহ বেশ কয়েকটি জেলায় নাটকটির সফল মঞ্চায়ন হয়েছে। নাটকটি রচনা ও পরিচালনা করেছেন সরকার হায়দার।

আয়োজকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পারস্যের সুফি কবি ফরিদ উদ্দিন আত্তারের (১১৪৫-১২২১) বিখ্যাত কাব্য গ্রন্থ ‘মান্তিক-উত-তায়ির’ (কনফারেন্স অব বার্ডস)-এর ছায়াপাতে গড়ে উঠেছে ‘পাখিদের বৈঠক’। সমসাময়িকতাকে ধারণ করে ‘পাখিদের বৈঠক’ একটি মৌলিক নাটক হিসেবে সমাদৃত।

নাটকটিতে পাখিরা একদিন বৈঠকে বসে। মানুষ কর্তৃক প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংসের যে মহাযজ্ঞ শুরু হয়েছে তা থেকে তারা পরিত্রাণ চায়। কিন্তু কিভাবে? আলোচনায় তারা স্মৃতিমন্থনের সাথে নানা ঘটনার বর্ণনা করে। বেঁচে থাকার জন্য অবৈধ পথে সমুদ্র পাড়ি দেওয়ার সময় অসংখ্য মানুষ ডুবে যায়। শত শত শরণার্থী পানিতে ডুবে মারা যায়। শিশুদের লাশ  ভেসে ওঠে সমুদ্রের বালুকাবেলায়। যুদ্ধ-বিধ্বস্ত পৃথিবীকে খুব কাছে থেকে দেখার অভিজ্ঞতা রয়েছে পাখিদের। অতিথি পাখিরা এসব বর্ণনা করে। তারা পাখিদের নিয়ে মানুষের মুখে মুখে ছড়ানো উপকথাগুলোর বর্ণনা দেয়। রাজা-রানিদের গল্প থেকে শুরু করে মঙ্গল-অমঙ্গল বিষয়ক মিথের কথাও বলা হয়। আগের পৃথিবী কেমন ছিল তাও বর্ণনা করে পাখিরা। প্রয়োজনহীন সীমান্ত ব্যবস্থাপনা নিয়েও আলোচনা করে তারা। চিন্তাযুক্ত মানুষের চলাফেরা নিয়ে পাখিরা হাসে-কাঁদে। সবশেষে, তারা আবিষ্কার করে যে তাদের একজন নেতা দরকার। তারা আবিষ্কার করে প্রার্থনার একটি শক্তি রয়েছে। এরপর, তারা নির্ভীক এক নেতার খোঁজে বেরিয়ে যায়।

সমাবেশটি পাখিদের হলেও পাখি ও প্রকৃতির সাথে মানুষের সম্পর্কই নাটকটিতে মূল কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে। এই নাটকে পাখিদের চোখে মানুষের বৈশ্বিক সংকটের কথা আলোচিত হয়েছে।

নাটকটির নির্মাণশৈলীতে নানা গবেষণা ও নিরীক্ষা করা হয়েছে। গান ও নাচের সমন্বয়ে নাটকটির উপস্থাপনায় উত্তরবঙ্গের পালাটিয়া রীতিকে অনুসরণ করা হয়েছে।

আয়োজকদের মতে, মঞ্চ, পোশাক বা আলোর ব্যবহার সীমিত করে অভিনেতা এবং অভিনয় কৌশলের মাধ্যমে নাটকটিতে পাখি এবং মানুষ মিলে-মিশে একাকার হয়ে যায়। নাটকটিতে অভিনয় করেছেন নাসরিন আক্তার, মোস্তাক আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, রনি শীল ও উজ্জল বর্মণ। নাটকে সংগীত পরিচালনা করেছেন রইস উদ্দিন এবং আবহ নির্মাণ করেছেন আনোয়ার হোসেন।

এছাড়াও, আজ বিকেলে একই মিলনায়তনে দার্জিলিং এবং জলপাইগুড়ি জেলার কবি, সাহিত্যিক, নাট্যকর্মী, সংগীতশিল্পী ও ভূমিজের নাট্যকর্মীদের মধ্যে এক মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে। এই আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন পঞ্চগড় ১ আসনের সংসদ সদস্য নাজমুল হক প্রধান।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

5h ago