সেরা দুইয়ে থাকার দৌড়ে এগিয়ে থাকল খুলনা
মাঝারি কয়েকটি ইনিংসে বেশ বড় সংগ্রহ পেয়েছিল খুলনা। শেষ বিকেলে রান তাড়ায় তাগদ দেখিয়েও কুলিয়ে উঠতে পারেনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। প্রথম কোয়ালিফায়ারের দৌঁড়ে কুমিল্লার প্রতিপক্ষ হতে তাই এগিয়ে থাকল খুলনা টাইটান্স।
মঙ্গলবার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে খুলনার দেওয়া ১৭৫ রানের লক্ষ্যে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স থেমেছে ১৬০ রানে, তামিমদের ১৪ রানে হারিয়ে টেবিলের দুইয়ে উঠে এসেছে মাহমুদউল্লাহর দল। খুলনার জয়ে সেরা দুইয়ে থাকার আশা নিভে যায় রংপুর রাইডার্সের। প্রথম কোয়ালিফায়ারে কুমিল্লার প্রতিপক্ষ হওয়ার দৌঁড়ে খুলনার সঙ্গে থাকছে ঢাকা ডায়নামাইটস।
আগেই শেষ চার নিশ্চিত করা দুদলই নেমেছিল নির্ভার হয়ে। এই ম্যাচ জিতলে দুইয়ে থাকার সুযোগ খুলনার সামনে। কুমিল্লা হারলেও তাদের নিচে নামানোর ক্ষমতা নেই কারো। তামিমরা যেন একটু বেশিই নির্ভার। একাদশে বেশ কয়েকটা বদলে সেই ছাপও দেখা গেছে।
১৭৫ রানের টার্গেটে প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় কুমিল্লা। প্রথমবার নামা সোলেয়মান মিরেকে বোল্ড করে দেন মাহমুদউল্লাহ। দ্বিতীয় উইকেটে সেটা ভালোই সামাল দেন তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস। তাদের জুটি জমতে অবশ্য হাত ছিল খুলনার ফিল্ডারদের। দুই বাঁহাতির ৬৩ রানের জুটি ভেঙ্গেছে ইমরুল কায়েসের আউটে। ১৯ বলে ২০ রান করা ইমরুল ক্যাচ দিয়েছেন বেনি হাওয়েলের বলে। ছন্দে খেলছিলেন তামিম। একবার জীবণ পেয়ে এগুচ্ছিলেন ফিফটির দিকেই। তার ৩৩ বলে ৩৬ রানের ইনিংস থেমেছে ব্র্যাথওয়েটের বলে। টাইমিংয়ে গড়বড় করে আকাশে তুলে দেওয়া ওই ক্যাচ সহজেই জমিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ।
ইংলিশ জস বাটলার এখনো পর্যন্ত তেমন কিছুই করতে পারেননি। এবারও ব্যর্থ হয়েছেন। হাওয়েলের বলে মাত্র ১১ করে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে।
শেষ পাঁচ ওভারে দরকার ৬৯। ক্রিজে শোয়েব মালিক আর মারলন স্যামুয়েলস। কঠিন হলেও দুজনের এমন সমীকরণ মেলানোর সামর্থ্য ছিল। লেগ স্পিনার মোহাম্মদ ইরফানের বলে শোয়েব মালিক আউট হয়ে যাওয়ার পর কুমিল্লার আশা অনেকটাই নিভে যায়। স্যামুয়েলস এক প্রান্তে টিকেও তুলতে পারেননি ঝড়। লক্ষ্যের ১৫ রান আগেই থামতে হয়েছে তাদের।
মিরপুরে দিনের ম্যাচগুলোতে টস জিতলেই ফিল্ডিং। অনেকটা অলিখিত নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছিল এতদিন। এবার টস জিতেও আগে ব্যাটিং নিলেন টাইটান্স অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শুরুটাও হলো দারুণ। নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাটই তাতে বেশি ক্ষুরধার। ৫৫ রানের ওপেনিং জুটিতে ৩৭ রানই এসেছে তার ব্যাট থেকে। ২১ বলের ওই ইনিংসে ৪টি বাউন্ডারি আর দুই ছক্কা মেরেছেন বাঁহাতি শান্ত। ঝড় তুলে বোল্ড হন আল-আমিনের বলে।
ওয়ানডাউনে নেমে মাহমুদউল্লাহ পড়তে দেননি রানের গতি। চার-ছয়ে তরতর করে বাড়িয়েছেন সংগ্রহ। টুর্নামেন্টে প্রথমবার নামা সোলেমান মিরে কিলিঙ্গারকে আউট করলে থামকে যায় রাত তুলার গতি। শোয়েব মালিকের বলে স্টাম্পিং হয়ে ফেরেন নিকোলাস পুরান।
তবে শেষ দিকে বাকিটা পুষিয়েছেন আরিফুল হক ও কার্লোস ব্র্যাথওয়েট। ১২ বলে ২২ করে আউট হন ব্র্যথওয়েট। ইনিংসের একদম শেষ বলে গিয়ে থামে আরিফুলের ২১ বলে ৩৫ রানের ইনিংস। খুলনার সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ১৭৪ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
খুলন টাইটান্স:১৭৪/৫ (শান্ত ৩৭, কিলিঙ্গার ২৯, মাহমুদউল্লাহ ২৩, পুরান ৮, আরিফুল ৩৫, ব্র্যাথওয়েট ২২, হাওয়েল ৯* ;মেহেদী ০/৩২, মালিক ১/২৫, আল-আমিন ২/৫২, ক্রেমার ০/২৩, রানা ০/৩৬, মিরে ১/৪)
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স:১৬০/৭ (তামিম ৩৬, মিরে ১,ইমরুল ২০,বাটলার ১১, মালিক ৩৬, স্যামুয়েলস ২৫*, ক্রেমার ০, রকিবুল ১৭, রানা ১* ; মাহমুদউল্লাহ ১/২২ , জায়েদ ২/৩৫, আফিফ ০/১৯, হাওয়েল ২/৩২, ব্র্যাথওয়েট ১/১৫, ইরফান ১/২৬ )
টস: খুলনা টাইটান্স
ফল: খুলনা টাইটান্স ১৪ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: আরিফুল হক
Comments