‘নিউইয়র্কে হামলা আমাদের কাছে এক বেদনাদায়ক দুঃস্বপ্ন’

যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এক বাংলাদেশি ছেলের সঙ্গে নিজের মেয়ে বিয়ে দেওয়ার সময় জুলফিকার হায়দারের আশা ছিলো মেয়েটি সুখের ঘর বাঁধবে স্বপ্নের দেশ আমেরিকায়। তাঁর সেই আশার গুড়ে বালি পড়ে তখনই যখন তিনি দেখতে পান নিউইয়র্কের বোমা হামলাকারীর ছবিটি।
akayed ullah
নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ার এবং পোর্ট অথরিটি বাস টার্মিনালের মধ্যবর্তীস্থানে গত ১১ ডিসেম্বর বোমা বিস্ফোরণের অভিযোগে অভিযুক্ত আকায়েদ উল্লা। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া

যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এক বাংলাদেশি ছেলের সঙ্গে নিজের মেয়ে বিয়ে দেওয়ার সময় জুলফিকার হায়দারের আশা ছিলো মেয়েটি সুখের ঘর বাঁধবে স্বপ্নের দেশ আমেরিকায়। তাঁর সেই আশার গুড়ে বালি পড়ে তখনই যখন তিনি দেখতে পান নিউইয়র্কের বোমা হামলাকারীর ছবিটি।

একজন হামলাকারী হিসেবে তাঁর মেয়ের জামাই আকায়েদ উল্লাহর (২৭) আহত হওয়ার ছবিটি অনলাইনে দেখা মাত্রই আতঙ্ক জেঁকে বসে হায়দারের মনে।

গত ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ৬২ বছর বয়সী জুলফিকার হায়দার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, “আমরা যা কল্পনাতেও ভাবতে পারিনি তাই যেন ঘটে গেল।”

ঢাকার একটি জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে হিসাবরক্ষক হিসেবে কর্মরত হায়দার বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলায় আকায়েদ অভিযুক্ত এমন খবরে আমরা হতভম্ব হয়ে যাই।”

সে এমন একটি ঘটনা ঘটাবে তা ঘুণাক্ষরেও টের পাওয়া যায়নি বলে জানান আকায়েদের শ্বশুর হায়দায়। বলেন, “যে ব্যক্তি রোজা রাখে, কুরআন পড়ে এবং দিনে পাঁচবার মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়ে সে ব্যক্তি এমন একটি জঘন্য কাজ করতে পারে না।”

২০১৫ সালের ডিসেম্বরে আকায়েদের পরিবার যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফোন করছিলো হায়দারের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস জুঁই এর সঙ্গে তাদের ছেলের বিয়ের বিষয়ে। সেসব কথা স্মরণ করেন হায়দার। এর এক মাস পর বিয়ে হয় আকায়েদ এবং জুঁইয়ের। পড়া-লেখা চলছিলো বলে বাংলাদেশে থেকে যান জুঁই। এখানে তাদের ছেলের জন্ম হয়। এখন তার বয়স ছয় মাস।

“একজন আমেরিকা প্রবাসী ছেলের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে হওয়ায় আমরা বেশ আনন্দিত ছিলাম। ভেবেছিলাম মেয়েটিও একদিন সেখানে যাবে। এরপর হয়তো একদিন আমার ছেলেকে সেখানে নিয়ে যেতে সহযোগিতা করবে তারা। মা-বাবা এমনটিই তো আশা করে,” নিজের স্বপ্নভঙ্গ ও হতাশার কথা এভাবেই ব্যক্ত করলেন হায়দার।

উল্লেখ্য, নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ার এবং পোর্ট অথরিটি বাস টার্মিনালের মধ্যবর্তীস্থানে গত ১১ ডিসেম্বর বোমা বিস্ফোরণ ঘটাতে গিয়ে আকায়েদ উল্লাহসহ চার ব্যক্তি আহত হন। আহতদের মধ্যে একজন পুলিশ কর্মকর্তাও রয়েছেন। নিউইয়র্ক শহরের মেয়র বিল ব্লাসিও এই ঘটনাকে সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে মন্তব্য করেন।

এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ওয়াশিংটনে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে এক বার্তায় বলা হয়, “একজন সন্ত্রাসী সে যে জাতিগোষ্ঠী বা ধর্মেরই হোক না কেন সে একজন সন্ত্রাসী এবং তাকে অবশ্যই বিচারের সম্মুখীন হতে হবে।”

এদিকে, বোমা হামলার ঘটনায় আটক আকায়েদের বাংলাদেশে কোন অপরাধমূলক রেকর্ড নেই বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক।

আরো পড়ুন:

‘আকাইদ উল্লাহর জন্ম, বেড়ে ওঠা ঢাকায়’

Comments

The Daily Star  | English

Is Raushan's political career coming to an end?

With Raushan Ershad not participating in the January 7 parliamentary election, questions have arisen whether the 27-year political career of the Jatiya Party chief patron and opposition leader is coming to an end

2h ago