২০১৭ সালে হলিউডে ‘হার্ভি ঝড়’
যুক্তরাষ্ট্রে ঝড়ের খবর এলে দেখা যায় সেগুলো মূলত দেশটির পূর্ব উপকূলে সৃষ্টি হয় এবং আঘাত হানে উপকূলের কাছাকাছি অঞ্চলগুলোতেই। কিন্তু, ২০১৭ সালে দেশটির পশ্চিম উপকূলকে ঘিরে এমন একটি ঝড় সৃষ্টি হয়েছে যার প্রভাব পড়েছে বিশ্ব জুড়ে। সেই ঝড়ের নাম দেওয়া যেতে পারে ‘হার্ভি ঝড়’। বিখ্যাত থেকে রাতারাতি কুখ্যাত হয়ে যাওয়া হলিউডের অস্কারবিজয়ী প্রযোজক হার্ভি ওয়েইন্সটিনের নামেই হোক এই ‘ঝড়’-এর নাম।
এ কথা সবারই জানা যে হার্ভি ওয়েইন্সটিন হচ্ছেন আমেরিকান চলচ্চিত্র প্রযোজক। তিনি ‘দ্য ওয়েইন্সটিন কোম্পানি’ এবং ‘মিরাম্যাক্স’-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর হাত ধরেই এসেছে ‘পাল্প ফিকশন’, ‘শেক্সপিয়ার ইন লাভ’ ও ‘ইংলিশ পেশেন্ট’ এর মতো সারা জাগানো চলচ্চিত্র। ‘শেক্সপিয়ার ইন লাভ’ প্রযোজনার জন্যে অস্কার পান তিনি।
কিন্তু, গত অক্টোবরে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস এবং দ্য নিউ ইয়র্কার এ খবর বের হয় যে এক ডজনের বেশি নারী এই প্রযোজকের হাতে বিভিন্ন সময় যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। তবে হলিউডে হার্ভির ব্যাপক প্রভাব-প্রতিপত্তির কাছে চাপা পড়েছিলো সেসব অভিযোগ।
কেঁচো খুঁড়তে সাপ বের হওয়ার যে প্রবাদ রয়েছে বাংলায় তাই যেন ঘটলো হার্ভির ক্ষেত্রে। খবরে প্রকাশ পেলো হার্ভির হাতে হয়রানির শিকার নারীরা কোন সাধারণ মানুষ নন, তাঁরা হলেন হলিউডের বিশিষ্ট অভিনেত্রী। যৌন হয়রানির শিকার এসব অভিনেত্রীদের তালিকায় রয়েছেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলি, গিনেথ প্যালট্রো, রোজ ম্যাকগোয়ান, অ্যাশলে জুড-সহ আরো অনেকে।
হলিউডে চরম প্রতিযোগিতার মুখে নতুন অভিনেত্রীদের ভালো চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ বা পুরনো অভিনেত্রীদের পুরস্কার পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে তাঁদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করতেন হার্ভি ওয়েইন্সটিন।
তাঁর এমন আচরণের ফলে হলিউডে সৃষ্টি হয়েছে এক নতুন পরিভাষা। এর নাম ‘ওয়েইন্সটিন ইফেক্ট’। পরে, এই ইফেক্ট ছড়িয়ে যায় দেশে দেশে। যৌন হয়রানির এমন অভিযোগে অভিযুক্ত হন অভিনেতা বেন অ্যাফলেক, সংগীতশিল্পী নিক কার্টার, কমিডিয়ান লুই সিকে, ‘সিনেমা প্যারাডিসো’-র পরিচালক গুসেপি তোরনাতোরে, টেলিভিশন উপস্থাপক ব্র্যাড কের্ন, প্রযোজক অ্যান্ড্রু ডানকান, পরিচালক মরগান স্পারলক, পরিবেশক টাভিস স্মিলে প্রমুখ।
Comments