ডিসকভার বাংলাদেশ: মেঘের রাজ্য সাজেক ভ্যালি
তুলোর মত শুভ্র মেঘে হারিয়ে যেতে কার না ইচ্ছে করে। আর তাই ডিসকভার বাংলাদেশের এই পর্বে আমরা আপনাদের নিয়ে এসেছি ভূপৃষ্ঠ থেকে এক হাজার ৮০০ ফুট উপরে মেঘের রাজ্য সাজেকে।
সাজেক বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন এটি রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলায় অবস্থিত। এর আয়তন ৭০২ বর্গমাইল। সাজেক রাঙামাটি জেলায় অবস্থিত হলেও যাতায়াতের সুবিধার কারণে পর্যটকরা খাগড়াছড়ি জেলা দিয়েই সাজেকে আসা যাওয়া করেন। খাগড়াছড়ি সদর থেকে এর দূরত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার।
ঢাকা থেকে ৫২০ টাকায় ঢাকা খাগড়াছড়ির বাসে করে খাগড়াছড়ি এসে সেখান থেকে ৫০ থেকে ১০০ টাকায় বাস কিংবা মোটরসাইকেলে করে পৌঁছাতে হবে ২৩ কিলোমিটার দূরে দীঘিনালায়। অথবা ৫৮০ টাকায় ঢাকা থেকে শান্তি পরিবহনের বাসে চেপে সরাসরি পৌঁছানো যায় দীঘিনালা।
দীঘিনালা থেকে ছয় থেকে সাত হাজার টাকায় জিপ (স্থানীয়ভাবে চান্দের গাড়ি নামে পরিচিত) ভাড়া করে সরাসরি চলে যাওয়া যায় সাজেকে। এছাড়া মানুষ কম হলে তিন হাজার টাকায় সি.এন.জি অটোরিকশা ও এক হাজার থেকে ১২ শ টাকায় মোটরসাইকেলেও যাওয়া যায় সাজেক।
দীঘিনালায় একটি সেনানিবাস রয়েছে যেখান থেকে বাকি রাস্তাটুকু যেতে হবে সামরিক বাহিনীর এসকোর্টে। দীঘিনালা থেকে সেনাবাহিনীর এসকোর্ট শুরু হয় সকাল ১০ টা থেকে ১১টার মধ্যে। তাই ঐ সময়ের আগেই আপনাকে পৌঁছে যেতে হবে খাগড়াছড়ি থেকে দীঘিনালায়। সকালের এসকোর্ট মিস করলে অপেক্ষা করতে হবে বিকাল অবধি।
রাতে থাকতে চাইলে সাজেকে রয়েছে বেশ কিছু রিসোর্ট যেখানে এক হাজার থেকে ১০ হাজার টাকায় পেতে পারেন সাধারণ ও এসি সব ধরনের রুম। তবে প্রকৃতিকে উপভোগ করতে চাইলে দেড় থেকে দুহাজার টাকায় সাধারণ মানের নন এসি রুমে থাকাই ভালো। আগে থেকে রুম বুকিং দিয়ে যাওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
সাজেকের প্রথম গ্রাম রুইলুই পাড়া। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা এক হাজার ৮০০ ফুট। এরা লুসাই আদিবাসী। লুসাই ছাড়াও এখানে ত্রিপুরা ও পাঙখোয়াদেরও কিছু বসতি চোখে পড়ে।
সাজেকে রুইলুই পাড়ায় মূল রাস্তার দুপাশেই রয়েছে বেশকিছু খাবারের হোটেল, যেখানে প্রতি বেলায় ১০০ থেকে ২০০ টাকায় খেতে পারবেন অনায়াসে। তবে লোক বেশি হলে আগে থেকে খাবারের অর্ডার করে রাখতে হয়।
সাজেক এর রুইলুই পাড়া থেকে এক থেকে দেড় ঘণ্টার ট্রেকিং করে দেখে আসতে পারেন লুসাই ঝর্ণা। স্থানীয় গাইড লুসাই ঝর্ণা বললেও এটি কমলক ঝর্ণা নামেই বেশি পরিচিত। তবে স্থানীয়দের অনেকের কাছেই এটি পিদাম তৈসা বা সিকাম তৈসা ঝর্ণা নামে পরিচিত।
সাজেক এর শেষ গ্রাম কংলক পাড়া। কংলক পাড়া সাজেকের সবচেয়ে উঁচু পাড়া । এটিও লুসাই জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত। কংলক পাড়া থেকে ভারতের লুসাই পাহাড় দেখা যায় যেখান থেকে কর্ণফুলী নদীর উৎপত্তি।
সাজেক এমন একটি জায়গা যেখানে একই দিনে প্রকৃতির বিভিন্ন রূপ দেখা সম্ভব। কখনো রোদ ঝলমলে আকাশ তো কখনো বৃষ্টি, আবার কখনো হারিয়ে যাবেন মেঘের ভেতর কুয়াশার চাদরে।
ডিসকভার বাংলাদেশের পরবর্তী পর্ব দেখতে সাবস্ক্রাইব করে চোখ রাখুন স্টার লাইভে।
Comments