ডিলিট নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা

শিল্প-সাহিত্যে অবদানের জন্যে ডিলিট পেলেন মমতা

Mamata Banerjeet
১১ জানুয়ারি ২০১৭, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া সাম্মানিক ডিলিট ডিগ্রি পাওয়ার পর বক্তব্য রাখছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। ছবি: স্টার

অপমান ও সংগ্রামের জীবনে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া সাম্মানিক ডিলিট কোনও দিন ব্যবহার করবেন না, ডক্টরেট উপাধিটি তিনি সম্মানের সঙ্গেই মনের মণিকোঠায় তুলে রাখবেন।

ডিলিট ডিগ্রি পাওয়ার পর বক্তব্য রাখতে গিয়ে এভাবেই নিজের প্রতিক্রিয়া জানান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।

আজ (১১ জানুয়ারি) দুপুরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরুল মঞ্চে সাড়ম্বর আয়োজনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে সাম্মানিক ডিলিট ডিগ্রি তুলে দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালী চক্রবর্তী ব্যানার্জিসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে সাম্মানিক ডিলিট ডিগ্রি দিলে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ক্ষুণ্ণ হবে- এমন অভিযোগ তুলে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ভিসি রঞ্জুগোপাল মুখোপাধ্যায় কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেন। বুধবার এই মামলাটি শুনানির জন্য কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য এবং বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে উঠেছিল। কিন্তু, রাজ্য অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত মামলাটি নিয়ে শুনানি না করার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মামলাটি করা হয়েছে। কেননা, ডিলিট ডিগ্রি প্রদান করে সিনেট। অভিযোগের কোথাও তাদের নাম উল্লেখ করা নেই। বিচারপতিরা বৃহস্পতিবার মামলাটির শুনানির দিন ধার্য করেন।

ঠিক এমতাবস্থায় ডিলিট প্রদান অনুষ্ঠানে হাজির হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। শিল্প-সংস্কৃতিতে অবদানের জন্য সম্মানটি গ্রহণও করেন তিনি। তবে সম্মান গ্রহণ করার পর আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন মমতা।

তৃণমূল নেত্রী বলেন, “আমার জীবন অপমান ও সংগ্রামের৷ একটি সম্মান দেওয়া হচ্ছে তা নিয়েও অপমান করা হয়েছে। তাই অনুষ্ঠানে আসব কী না তা নিয়েও সংশয়ে ছিলাম৷ আমি নিজেও মনে করি এই সম্মান পাওয়ার যোগ্য আমি নই৷ তবুও বলব এর চেয়ে বড় সম্মান আমি পাইনি।”

মমতা ব্যানার্জি স্কুলজীবন শেষ করে কলকাতার যোগমায়া দেবী কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। স্কুলজীবন থেকেই সংগ্রাম করে চলেছেন বলে দাবি করেন মমতা। বলেন, ‘‘যোগমায়া দেবী কলেজের ছাত্রী ছিলাম৷ পরে এম এ করেছিলাম৷ আমি খুব সাধারণ মানের ছাত্রী ছিলাম৷ অনেক কষ্টে লেখাপড়া করেছি৷ কেউ কেউ সোনার চামচ নিয়ে জন্মায়। কাউকে সংগ্রাম করে যেতে হয়। আমাকে জীবনে অনেক সংগ্রাম করে যেতে হয়েছে।”

নিজের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেই এতো বড় সম্মাননা পাবেন সেটি জীবনে ভাবতেই পারেননি মমতা ব্যানার্জি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘কখনও ভাবিনি এরকম অনুষ্ঠানে এসে ভাষণ দেবো৷ এর আগেও আমাকে অনেক পুরস্কার দেওয়ার প্রস্তাব এসেছিল৷ কিন্তু, আমি খুব ক্ষুদ্র মানুষ৷ নিজেকে সেই সম্মানের যোগ্য কখনও মনে হয়নি৷ কিন্তু, আজ এই সম্মান পেয়ে আমার জীবন পূর্ণ হলো।”

আজকের দিনটি মণিকোঠায় তুলে রাখার প্রতিশ্রুতিও করেন মমতা। বলেন, “আমি এই ডিগ্রি ব্যবহার করব না৷ সাম্মানিক হিসেবে তা তোলা থাকবে।”

Comments

The Daily Star  | English
public servants not forced to retire

Public servants won’t be forced to retire

The Advisory Council has decided to abolish a provision of the Public Service Act, 2018, which allows the government to send public servants into forced retirement after 25 years of service.

9h ago