মিরপুরের শুরুতেও ছিল, সেঞ্চুরিতেও আছে জিম্বাবুয়ে

এই ম্যাচ দিয়েই আবার সবচেয়ে কম সময়ে ১০০ ম্যাচ আয়োজনের রেকর্ডও গড়ে ফেলবে মিরপুর।
Mirpur Sher-e-Bangla National Cricket Stadium

২০০৬ সালে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের অভিষেক ম্যাচে বাংলাদেশে প্রতিপক্ষ ছিল জিম্বাবুয়ে। এগারো বছর পর এই মাঠের শততম ম্যাচটিতে স্বাগতিকরা না থাকলেও থাকছে জিম্বাবুয়েই। এই ম্যাচ দিয়েই আবার সবচেয়ে কম সময়ে ১০০ ম্যাচ আয়োজনের রেকর্ডও গড়ে ফেলবে মিরপুর।

বুধবার ত্রিদেশীয় সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে জিম্বাবুয়ের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। ‘হোম অব ক্রিকেট’ এর রেকর্ডের দিনে তাই কেবলই দর্শক ঘরের দল বাংলাদেশ। অবশ্য মিরপুরের দ্রুততম ১০০ ম্যাচ আয়োজনের রেকর্ড  ঠিক গর্ব কিনা তা নিয়ে আছে প্রশ্ন। এই পরিসংখ্যানই যে দেখাচ্ছে দেশে মাঠ সঙ্কটের দশা। বিরামহীন খেলায় ক্লান্ত মাঠের ছবি। সিলেট, চট্টগ্রামের ভেন্যু প্রস্তুত থাকার পরও মিরপুরের ভার কমাতে বিসিবির উদ্যোগহীনতা।

মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম
মিরপুরের এই সবুজ আউটফিল্ড এখন ধূসর। (ফাইল ছবি)
একসময় বাংলাদেশের ক্রিকেটের মূল ভেন্যু ছিল বঙ্গবন্ধু জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম। প্রতিবছর ফুটবল-ক্রিকেটের টানাপড়েনে হ্যাপা পোহাতে হতো ওই মাঠকে। ২০০৫ সালে সমাপ্তি হয় সেই টানাহ্যাঁচড়ার। স্থায়ীভাবে ক্রিকেট স্থানান্তরিত হয় মিরপুরে। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম যায় ফুটবলের দখলে। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের সর্বশেষ ওয়ানডে ম্যাচেও খেলেছিল জিম্বাবুয়ে। টাটেন্ডা টাইবোর দলকে সেবার ৮ উইকেটে হারিয়েছিল হাবিবুল বাশারের বাংলাদেশ। পরের বছর মিরপুরের প্রথম ম্যাচেও জিম্বাবুয়েকে ঠিক একই ব্যবধানে হারিয়েছিল টাইগাররা।

২০০৬ সালে মিরপুরের প্রথম ম্যাচে জিম্বাবুয়ের একাদশে থাকা  হ্যামিল্টন মাসাকাদজা, ব্র্যান্ডন টেইলর আর ক্রিস্টোফার এমপুফু আছেন এবারের দলে। থাকতে পারেন শততম ম্যাচের একাদশেও। মিরপুর ভেন্যুর মাইলফলকের ম্যাচে থাকতে পেরে নিজের রোমাঞ্চের কথা জানিয়েছেন মাসাকাদজা, ‘ঐতিহাসিক কোনো উপলক্ষের অংশ হতে পারা দারুণ ব্যাপার। আমরা এই মাঠের প্রথম ওয়ানডেতে খেলেছিলাম, এবার শততম ম্যাচেও থাকছি। ইতিহাসের অংশ হওয়াটা অসাধারণ।’

মিরপুর ভেন্যুর মাইলফলকের সঙ্গে এর আগে শ্রীলঙ্কানদের যোগসূত্র না থাকলেও এখানে তাদের আছে দারুণ কিছু স্মৃতি, আছে অনন্য অর্জনের ইতিহাস। ২০১৪ সালটা শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের জন্য নিশ্চিতভাবেই ফ্রেমবন্দি বছর। সেবার বাংলাদেশ সফরের সবম্যাচই জিতেছিল তারা। মিরপুরের মাঠের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ট্রফি উঁচিয়ে ধরেছিলেন কুমার সাঙ্গাকারা, মাহেলা জয়াবর্ধনেরা। শ্রীলঙ্কা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল এশিয়া কাপেও।

জয়ী লঙ্কান দলের হয়ে তখন ছিলেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসও। এবার তিনি লঙ্কান ওয়ানডে দলের অধিনায়ক হয়ে এসেছেন। অনেক পাওয়ার মাঠ থেকে আরও কিছু পেতে মুখিয়ে তারা, ‘এখানে আমাদের দারুণ কিছু স্মৃতি আছে। এবার আরও কিছু অর্জনের দিকে তাকিয়ে আছি।’

মিরপুরে অর্জনের পাল্লা বেশ ভারি বাংলাদেশেরও। এই মাঠে সবশেষ ২০ ওয়ানডের ১৬টিরই জয়ী দলের নাম বাংলাদেশ। শেষ দুই টেস্টে এখানে টাইগাররা হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া আর ইংল্যান্ডের মতো দলকে। জিতেছে সর্বশেষ ৪টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচের তিনটিতেই। আছে ভারত, পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ জেতার স্মৃতি। নিউজিল্যান্ডকে হোয়াটওয়াশ, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সিরিজ হারানোর উৎসবও হয়েছে মিরপুরে।

মিরপুরে অবশ্য আক্ষেপের গল্পও আছে বাংলাদেশের। এই মাঠেই দুবার এশিয়া কাপের ফাইনালে গিয়েও শিরোপা জেতা হয়নি। খুব কাছে গিয়েও সাকিব, মাশরাফিরা জিততে পারেনি একটি ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টের শিরোপা। ২০১২ এশিয়া কাপের ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে ২ রানে হেরে যাওয়ার ট্রাজেডি এখনো আক্ষেপে পোড়ায় সমর্থকদের। ২০০৯ সালে ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টের ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাত্র ১৫২ রান করেও জেতার অবস্থায় ছিল বাংলাদেশ। রান তাড়া করতে নামা লঙ্কানদের ৬ রানেই ফেলে দিয়েছিল ৫ উইকেট। সাঙ্গাকারা আর মুরালিধরনের বীরত্বে শ্রীলঙ্কা সেই ম্যাচ জিতে যায় মাত্র ২ উইকেটে।

শততম ম্যাচের আগে আউটফিল্ডের বেহাল দশা নিয়ে সমালোচনার মুখে আছে মিরপুর। এরমধ্যে আইসিসি থেকে পেয়েছে দুই ডিমেরিট পয়েন্ট। একসময়ের সুবজ আউটফিল্ড এখনো ধূসর। এমনিতে বিশ্বের অন্যতম সেরা ড্রেনেজ ব্যবস্থা থাকার বাহবা কুড়ানো এই মাঠ আউটফিল্ডের বদনামে এখন বেশ অস্বস্তিতে।

Comments

The Daily Star  | English

Covid impact, inflation push up poverty

Around 27.51 lakh more Bangladeshi people fell into poverty in 2022 due to the global food price hike and post Covid-19 impacts, according to a paper by a researcher at the International Food Policy Research Institute (IFPRI).

1h ago