জম্পেশ লড়াইয়ের পর শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে দিল জিম্বাবুয়ে
আগে ব্যাট করে জিম্বাবুয়ে জড়ো করেছিলে ২৯০ রানের বড় সংগ্রহ। সেই রানে লঙ্কানদের বেধে রাখতে তাদের বোলার-ফিল্ডাররা ছিলেন তেতে। বারবার রঙ বদলানো ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ১২ রানে হারিয়ে আসর জমিয়ে দিয়েছে জিম্বাবুয়ে। অলরাউন্ড নৈপুন্যে জিম্বাবুয়ের জয়ের নায়ক সিকান্দার রাজা।
কেবল তৃতীয় একটি দল হয়ে নয়। জিততেই যে বাংলাদেশে এসেছে, সেটাই দেখিয়ে দিল জিম্বাবুয়ে। গত বছর শ্রীলঙ্কায় গিয়েই পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ওদের হারিয়ে এসেছিল জিম্বাবুয়ে। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের কাছে উড়ে যাওয়ার পরও ভড়কে যায়নি গ্রায়েম ক্রেমারের দল। উল্টো ফের ভড়কে দিয়েছে শক্তিশালী শ্রীলঙ্কাকে।
২৯১ রান তাড়ায় শ্রীলঙ্কাকে ঝড়ো শুরুই এনে দিয়েছিলেন কুশল পেরেরা আর উপুল থারাঙ্গা। জুটিতে আগ্রাসী ছিলেন পেরেরাই। ৪৬ রানের মাথায় কাইল জার্ভিসের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন থারাঙ্গা। আর এক রান যোগ করতেই ওয়ানডাউনে নামা কুশল মেন্ডিসকে ফিরিয়ে দেন চাতারা। তৃতীয় উইকেট জুটিতে চাপে পড়া দলকে উদ্ধারে নামেন অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস ও পেরেরা।
তাদের ৮৫ রানের জুটিতে থই পায় চণ্ডিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যরা। পেরেরা এগিয়ে যাচ্ছিলেন সেঞ্চুরির দিকে, দলও যাচ্ছিল জয়ের দিকে। তখনই আঘাত সিকান্দার রাজার। ব্যাটিংয়ের হিরো রাজা বল হাতে নিয়েও করেছেন বাজিমাত। লঙ্কানদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন ব্যাটসম্যানকে ব্লেসিং মুজারাব্বানির ক্যাচ বানিয়ে খেলায় ফেরান দলকে।
পেরেরার ক্যাচ নেওয়া মুজারাব্বানি খানিক পর বল করতে এসে আউট করে দেন ম্যাথুসকে। ফের বিপদে পড়া দলকে উদ্ধারের দায়িত্ব নেন দিনেশ চান্দিমাল। দারুণ এক বলে তাকে বোল্ড করে দিয়ে খেলা জমিয়ে তুলেন কাইল জার্ভিস।
হুট করেই ধুঁকতে থাকা লঙ্কানদের ইনিংসে আশার আলো নিয়ে আসেন থিসিরা পেরেরা। ৩৭ বলে ৬৪ রানের ঝড়ো ইনিংসে দলকে রেখেছিলেন ঠিক পথেই। তবে তীরে গিয়ে ডোবালেন তরী। নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে পেরেরা যখন ফিরছেন লঙ্কানদের চাই মাত্র ১৬ রান। চাতারার বলে পেরেরার ক্যাচ নেন সিকান্দার রাজা। ব্যাটিংয়ে ৮১ রান, বল করতে এসে ১ উইকেট, সঙ্গে দুই ক্যাচ। জিম্বাবুয়ের জয়ের হিরো রাজাই। পেরেরার আউটের পর লঙ্কানরা আর তিন রান যোগ করে থেমেছে ২৭৮ রানে।
এর আগে টস জিতে জিম্বাবুয়েকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। মাসকাদজা আর সিকান্দার রাজার ব্যাটে ২৯০ রান তুলে ফেলে হিথ স্ট্রিকের শিষ্যরা।
প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে ধুঁকতে থাকা গ্রায়েম ক্রেমারের দলকে দুই ওপেনার এনে দেন দারুণ শুরু। মাসাকাদজাকে রেখে ৭৫ রানের মাথায় আউট হয়ে ফেরেন ৩৪ রান করা সুলেমান মিরে। ওয়ানডাউনে নেমে এদিনও ব্যর্থ গ্রেইগ আরভিন।
দ্রুত দুই উইকেট হারানো দলকে ফের ভরসা দেন অভিজ্ঞ মাসকাদজা আর ব্র্যান্ডন টেইলর। মাসাকাদজার মতো টেইলরও খেলেছিলেন শেরে বাংলার অভিষেক ম্যাচে। মাঠটা বেশ চেনা তাদের। ৫৭ রানের জুটি গড়ে টেইলরকে রেখে ফিরে যান মাসাকাদজা। পরে সিকান্দার রাজাকে নিয়ে এগুতে থাকা টেইলর ফিরেছেন ৩৮ রান করে।
ছয়ে নেমে ম্যালকম ওলার রানের চাকা রেখেছেন সচল। বিপদজনক হতে থাকা ওলারকে ফিরিয়েছেন গুনারত্নে। তবে লঙ্কানরা থামাতে পারেননি সিকান্দার রাজার ঝড়। ৬৬ বলে ৮০ রান করে অপরাজিত থাকেন বিপিএলে দারুণ সময় কাটানো রাজা। ৮ চারের সঙ্গে মেরেছেন এক ছক্কা। স্লগ ওভারে রাজাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন পিটার মুর। ১৮ বলে ১৯ রানের ক্যামিওতে মেরেছেন দুই ছক্কা।
বাংলাদেশে কাছে হারলেও শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে তাই টুর্নামেন্টে টিকে থাকল জিম্বাবুয়ে। ওদিকে শ্রীলঙ্কার প্রধান কোচ হিসেবে শুরুটা একদম ভালো হলো না চণ্ডিকা হাথুরুসিংহের। শুক্রবার বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচের আগে ভীষণ চাপে পড়ে গেল ম্যাথুসরা।
Comments