মরে যাচ্ছে কি বাংলাদেশের চলচ্চিত্র?

Putra

চলচ্চিত্রে নতুন আশার বছর হওয়ার কথা ছিল এই বছরটি। কিন্তু বছরের শুরুতেই বড় একটি ধাক্কা খেয়েছে দেশের চলচ্চিত্র। সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া চারটি ছবির একটিও কোন রকমের বাণিজ্যিক সফলতা পায়নি।

আশার বদলে নিরাশা দিয়ে শুরু হয়েছে বছরটা। চলচ্চিত্রের এমন দুর্দিনে এমনটি হওয়ার কথা ছিলো না। ছবি ব্যবসাসফল না হলে প্রযোজকরা নতুন ছবিতে লগ্নি করতে সাহস পাবেন না, এটিই স্বাভাবিক। এভাবে চলতে থাকলে ছবি নির্মাণের সংখ্যা কমে আসবে। ক্ষতির মুখোমুখি হবে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র।

যৌথ প্রযোজনার বিষয়টি পুরোপুরি সমাধানে আসেনি এখনো। এছাড়াও, দেশের বাইরে যে ছবিগুলো মুক্তি পাচ্ছে সেসব ছবির অর্থ প্রযোজকরা কতোটা পাচ্ছেন সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে। বিষয়টি যদি শুধু প্রচারের জন্য হয় তাহলে এ বিষয়ে কথা না বলাই শ্রেয়। তবে এ সবের পাশাপাশি নিম্নমানের ছবি নির্মাণ এবং মুক্তি দেওয়ার বিষয়টির দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন রয়েছে। কেননা, এসব ছবি মুক্তি দেওয়ার ফলে দর্শকরা হল বিমুখ হচ্ছেন প্রতিনিয়ত।

বাংলা চলচ্চিত্রের প্রতি দর্শকদের আগ্রহ কমছে। সুস্থধারার বাণিজ্যিক ছবির নির্মাণের সংখ্যা বাড়ানো প্রয়োজন। মৌলিক গল্প, সংগীত, অভিনয় ও পরিচালনার দিকে মনোযোগী হলে ভালো হয়। দেশে অন্যধারার ছবির বাজারও সেভাবে তৈরি হয়নি। অন্যধারার ছবির প্রচার-প্রচারণা আরো ব্যাপকভাবে করা প্রয়োজন। হলের পরিবেশসহ প্রজেকশন ব্যবস্থার সুষ্ঠু বণ্টন জরুরি।

চলচ্চিত্রের সবচেয়ে শক্তিশালী সংগঠন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতি দীর্ঘদিন ধরে অর্কাযকর হয়ে রয়েছে। এটিও চলচ্চিত্রের জন্য সুখকর নয়। বিষয়টি নিয়ে সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করেন অনেকেই। চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি ও চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি নিজেদের কাজ থেকে অনেক দূরে সরে রয়েছেন বলেও অনেকের মন্তব্য। তাদের মতে, সংগঠনগুলোর কাজ কী তা হয়তো ভুলে গেছেন সংগঠনের কর্তাব্যক্তিরা। এভাবে কি চলচ্চিত্রের উন্নয়ন সম্ভব? প্রশ্নটি সংশ্লিষ্টদের কাছে।

বছর শুরুর চারটি ছবির মধ্যে রয়েছে সাইফুল ইসলাম মান্নু পরিচালিত ‘পুত্র’। জয়া আহাসান, ফেরদৌস অভিনীত ছবিটি তেমন সাড়া জাগাতে পারেনি, যদিও এটি ১০৫ হলে মুক্তি দেওয়া হয়েছিলো। এরপর রয়েছে শাবনূর অভিনীত এম এম সরকার পরিচালিত ‘পাগল মানুষ’। ছবিটি বেশ সাড়া ফেলবে এমনটি আশা করেছিলেন দীর্ঘদিন চলচ্চিত্র থেকে দূরে থাকা এই অভিনেত্রী। কিন্তু, বাস্তবে দেখা যায় প্রায় ৫০টি হলে মুক্তি পেয়েও পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে ছবিটি। এছাড়াও, অন্য দুটি ছবি হচ্ছে ‘দেমাগ’ ও ‘হৈমন্তী’। ‘দেমাগ’-এর মতো নিম্নমানের ছবি কীভাবে মুক্তি পায় বিষয়টি বোধগম্য নয়। ‘হৈমন্তী’ মাত্র একটি হলে মুক্তি পেয়েছিলো।

এভাবে চলতে থাকলে বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের মৃত্যু ঘটবে খুব জলদি। বিষয়টি কারো কাম্য নয়।

Comments

The Daily Star  | English
Khaleda Zia calls for unity

‘Seize the moment to anchor democracy’

Urging people to remain united, BNP Chairperson Khaleda Zia has said the country must quickly seize the opportunity to institutionalise the democratic system.

6h ago