মাশরাফি-সাকিবের তোপে কাঁপছে জিম্বাবুয়ে

পূঁজিটা খুব অল্প। জিততে হলে শুরু থেকেই দরকার আক্রমণ। মন্থর উইকেটের ভাষা পড়ে জিম্বাবুয়েরও নড়বড়ে অবস্থা। তাতে পেয়ে বসল বাংলাদেশ। শুরুটা করলেন অধিনায়ক মাশরাফিই। ১৪ রানে হ্যামিল্টন মাসাকাদজাকে স্লিপে ক্যাচ বানিয়ে শুরু। ছয় রান পর উইকেট নেওয়া শুরু সাকিবের। পর পর দুই বলে তিনি আউট করে দেন সুলেমান মিরে আর ব্র্যান্ডন টেইলরকে। খানিক পর মাশরাফির বল আরভিনের ব্যাটে ছোবল দিয়ে যায় স্লিপে। ৩৪ রানেই চার উইকেট খুইয়ে  বসে ক্রেমারের দল। ২১৭ রানের মামুলি লক্ষ্যই তাই এখন পাহাড়সম। 



২১৬ রানে থামল বাংলাদেশ

হঠাৎ ছন্দপতনে ১৭০ রানেই পড়ে গিয়েছিল ৮ উইকেট। দুশোর মধ্যে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কাও ছিল প্রবল। শেষ দিকে টেল এন্ডাররা মিলে বাংলাদেশকে নিয়ে যান ২১৬ পর্যন্ত। তবু দারুণ জ্বলে উঠা জিম্বাবুয়ের বোলাররা ব্যাটসম্যানদের কাজটা রেখেছেন নাগালের মধ্যেই।

বাংলাদেশকে অল্প রানে বেধে রাখার দিনে জিম্বাবুয়ের নায়ক অধিনায়ক গ্রায়েম ক্রেমার ও পেসার কাইল জার্ভিস। ক্রেমার ৩২ রানে ৪ ও জার্ভিস ৪২ রানে নেন ৩ উইকেট।

টুর্নামেন্টে টানা তৃতীয়বার টসে জিতে ব্যাটিং নিয়েছিলেন মাশরাফি মর্তুজা। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচের মতই উইকেট খানিকটা মন্থর। তবে জিততে হলে স্কোর বোর্ডে অন্তত আড়াইশ রান তো চাই-ই। মিডল অর্ডারের হুড়মুড় করে ভেঙ্গে পড়ায় তা করতে পারেনি বাংলাদেশ। ১৭০ রানে ৮ উইকেট হারানোর পর তবু টেল এন্ডারদের দৃঢ়তায় টাইগাররা করতে পেরেছে ১১৬ রান।



তৃতীয় ওভারে উইকেট পতন দিয়ে শুরু। আগের দুই ম্যাচেও বড় রান পাননি এনামুল হক বিজয়। কিন্তু দলের চাহিদা মেটাতে পেয়েছিলেন দ্রুত শুরু পাইয়ে। এদিন হলো না কিছুই। ৭ বলে ১ রান করে কাইল জার্ভিসের বলে এলবডব্লিও হয়ে যান তিনি।

তবে দ্বিতীয় উইকেটে শতরানের জুটি গড়ে দলকে ঠিক পথেই রেখেছিলেন তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান। এই দুজনের ১০৬ রানের জুটি ভাঙ্গে সাকিবের বিদায়ে। ফিফটি করার পরই রাজাকে উইকেট দিয়ে ফেরেন সাকিব। ৪১তম ফিফটি করার পর প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ওয়ানডেতে ছয় হাজার রান পুরো করে তামিম ফিরে যান একই রকম ভঙ্গিতে। তার হন্তারক গ্রায়েম ক্রেমার। ৭৬ রান করা তামিমকে ক্রিজের বাইরে টেনে এনে যেন স্টাম্পিং করান তিনি।

ক্রেমারই খনিকের মধ্যে বদলে দেন ম্যাচের ছবি। ১৪৭ রানে ৩ উইকেট পড়ার পর ১৭০ রানে বাংলাদেশ হারায় ৮ষ্ঠম উইকেট। পরে সানজামুল ১৯, মোস্তাফিজ ১৮ আর রুবেলের ৮ রানে দল পায় কিছুটা লড়াইয়ের পুঁজি। 

ক্রেমারের ঘূর্ণিতে বিপাকে বাংলাদেশ



১৪৭ থেকে ১৭০। ২৩ রানের ব্যবধানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলল বাংলাদেশ। যার চারটাই পেলেন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক গ্রায়েম ক্রেমার। 

সাকিবের পর তামিমের সঙ্গে জুটি বেধেছিলেন মুশফিকু রহিম। শুরুটা মন্দ হয়নি তার। তবে গ্রায়েম ক্রেমারের বলে সুইপ করতে গিয়ে ১৮ রানে ফেরেন তিনি। পাঁচে নামা মাহমুদউল্লাহকেও পরে আউট করে দেন ক্রেমার। ৯ রানের ব্যবধানে ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এই ম্যাচেও সেঞ্চুরির দিকে এগুতে থাকা তামিম ছিলেন ভরসা। তবে সাকিবের মতো স্টাম্পিং হয়েছেন তিনিও। ৭৬ রান করে গ্রায়েম ক্রেমারের বল বেরিয়ে এসে পেটাতে গিয়ে লাইন মিস করেন। ১৬৩ রানে ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। খানিক পর জার্ভিসের বলে সাব্বির রহমানকে দারুণ এক ক্যাচে ফেরান আরভিন। জার্ভিস পরে আউট করেন নাসিরকেও। অধিনায়ক মাশরাফি উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ক্রেমারের বলে। ১৭০ রানে ৮ উইকেট পড়ে বাংলাদেশের। 

ফিরলেন সাকিব

দ্বিতীয় উইকেটে তামিম ইকবালের সঙ্গে ১০৬ রানের জুটির পর আউট হয়েছেন সাকিব আল হাসান। তুলে নিয়েছেন টানা দ্বিতীয় ফিফটি। ৮০ বলে ৫১ রান করা সাকিব স্টাম্পিং  হয়েছেন সিকান্দার রাজার বলে উইকেট থেকে বেরিয়ে এসে।

টানা তিন ফিফটির জুটি সাকিব-তামিমের 

৬ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে আবারও বাংলাদেশকে টানছেন সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল। জুটিতে এরমধ্যে ৬৬ বলে ৫০ রান তুলে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছেন আরও বড় কিছুর দিকে। এই নিয়ে টানা তিন ম্যাচেই ফিফটির জুটি গড়লেন তারা। প্রথম ম্যাচে ৭৮, দ্বিতীয় ম্যাচে ৯৯ রানের জুটিতে ছিলেন দুজন। 

শুরুতেই ফিরলেন এনামুল 

তিন বছর পর দলে ফেরা এনামুল হক বিজয় তৃতীয় ম্যাচেও হয়েছেন ব্যর্থ। আগের দুই ম্যাচে তবুও দ্রুত শুরু আনতে পেরেছিলেন। করেছিলেন মাঝারি রান। এবার তাও হয়নি। মাত্র ১ রান করে কাইল জার্ভিসের বলে এলবডব্লিও হয়ে ফেরত গেছেন তিনি। 

তৃতীয় ওভারে জার্ভিসের ভেতরে ঢুকা বলে লাইন মিস করে খেলতে যান এনামুল। ব্যাট লাগাতে না পেরে পরাস্ত হয়ে এলবডব্লিওর ফাঁদে পড়েন। ৬ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এনামুল আউট হন ৭ বলে ১ রান করে। 

টস জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ

ত্রিদেশীয় সিরিজে পর পর টানা তিনবার টস জিতলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি মর্তুজা। প্রথম ম্যাচে টস জিতে আগে ফিল্ডিং নিয়েছিলেন। শ্রীলঙ্কা ম্যাচের পরও এবারও আগে নিলেন ব্যাটিং।

একাদশে পরিবর্তন একটাই। পেস অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের আগে ফিরেছেন বাঁহাতি স্পিনার সানজামুল ইসলাম।  টুর্নামেন্টের ফাইনাল আগেই নিশ্চিত করা বাংলাদেশের সুযোগ ছিল সাইডবেঞ্চ ঝালাই করে নেওয়ার। তবে জয়ের ধারা ঠিক রাখতে সে পথে হাঁটেনি টাইগাররা। বাঁহাতি স্পিনে জিম্বাবুয়ের দুর্বলতা মাথায় নিয়ে প্রথম ম্যাচের মতো একাদশে রাখা হয়েছে সানজামুলকে। 

বাংলাদেশ একাদশ: তামিম ইকবাল, এনামুল হক বিজয়, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সাব্বির রহমান, নাসির হোসেন, মাশরাফি মর্তুজা, সানজামুল ইসলাম, রুবেল হোসেন ও মোস্তাফিজুর রহমান। 

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh women retain SAFF glory

Bangladesh retained the title of SAFF Women's Championship with a 2-1 win against Nepal in an entertaining final at the Dasharath Stadium in Kathmandu today. 

34m ago