এক জাবি শিক্ষকের ভিন্ন রূপ

professor afsar ahmed
অধ্যাপক আফসার আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) একজন স্বনামধন্য শিক্ষক। তিনি গোপনে বিয়ে করেছিলেন তারই এক ছাত্রীকে। বিয়ের পর তিনি জোর করে সেই স্ত্রীর প্রথম বাচ্চার গর্ভপাত করান। দ্বিতীয় বাচ্চার জন্মের তিনদিন পর স্ত্রীকে তালাক দেন। এরপর, তার স্ত্রী লিখিত অভিযোগ করেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে।

অভিযোগকারী বর্তমানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগে পিএইচডি করার পাশাপাশি অপর একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন।

গত ১৭ জানুয়ারি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে দেওয়া অভিযোগপত্রে তিনি বলেন, ২০১৫ সালের ২৪ নভেম্বর নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক আফসার আহমেদের সঙ্গে উভয়ের সম্মতিতে বিয়ে হয়। এর আগে তিনি সেই বিভাগ থেকে অনার্স-মাস্টার্স করেন। তাদের শিক্ষক-ছাত্রীর সম্পর্ক একসময় রোমান্টিকতায় পরিণত হয়। আর সেই সূত্রেই তাদের পরিণয়।

কিন্তু, ২০১৬ সালে সেই অধ্যাপক জোর করে তাদের প্রথম সন্তানের গর্ভপাত করান। চিকিৎসকের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, গর্ভের সন্তানটি শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী হবে। এরপর ২০১৭ সালে স্ত্রী গর্ভধারণ করলে তিনি তাকে আবারো গর্ভপাতের জন্য চাপ দিতে থাকেন। শেষে হুমকি দেন কথা না শুনলে পরিস্থিতি খারাপ হবে।

অভিযোগপত্রে তিনি আরো বলেন, “জীবনের ভয়ে আমি আত্মগোপন করি এবং একটি নিরাপত্তাহীন পরিস্থিতির মধ্যে আমার ছেলের জন্ম হয়।”

অধ্যাপক আফসার বিবাহিত জেনেও তিনি কেন তাকে বিয়ে করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে অভিযোগকারী বলেন, “তিনি আমাকে ইমোশনালি ব্ল্যাকমেইল করেছিলেন। তিনি প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়াই আমাকে বিয়ে করেছেন।” এখন তাকে জীবননাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি লিখিত অভিযোগপত্রে দাবি করেন।

তিনি আরো বলেন, অধ্যাপক আফসার তাকে বিয়ে করার জন্যে প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিবেন এমন কথাও বলেছিলেন। এমনকি, মানসম্মানের দোহাই দিয়ে তিনি এই নতুন বিয়ের বিষয়টি গোপন রাখার জন্য তাকে অনুরোধ করেছিলেন বলেও অভিযোগকারী জানান।

ডেইলি স্টারের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি বলেন, অধ্যাপক আফসার তাদের সন্তানের জন্য কোন আর্থিক সহযোগিতা দিচ্ছেন না।

গত বছর ২৪ আগস্ট ময়মনসিংহের ত্রিশাল থানায় সেই শিক্ষিকা একটি সাধারণ ডাইরি করেন। অধ্যাপক আফসার গত ২৫ সেপ্টেম্বর স্ত্রীকে তালাক দেন। এর তিনদিন আগে তাদের পুত্র সন্তানের জন্ম হয়।

দ ডেইলি স্টারের হাতে আসা তালাক নোটিসে দেখা যায়, অধ্যাপক আফসার তালাকের কারণ হিসেবে যেগুলোর উল্লেখ করেছেন সেগুলোর মধ্যে রয়েছে “স্বামীর নির্দেশ না মানা”, “আচার-আচরণ ব্যবহার স্বভাব চরিত্র ভালো না”, “বেপর্দায় চলাফেরা করা” ইত্যাদি।

অধ্যাপক আফসার পুরো ঘটনাটিকে পারিবারিক বিষয় হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, তিনি কোন আইনবিরুদ্ধ কাজ করেননি।

নবজাতকের ভরণপোষণ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমি কখনই বলিনি যে সন্তানের দায়িত্ব নিব না।”

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম বলেন, “বিষয়টি তদন্তের পর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

Comments

The Daily Star  | English

Chattogram’s garment factories fear fallout from US tariffs

Owners of Chattogram-based readymade garment factories, many of which do business with buyers in the United States, are worried about a US tariff hike to 35 percent set to take effect on August 1.

12h ago