‘এখনও যে আমি খেলছি তার উছিলা হয়তো উনি’
সাত সাতবার পায়ের অস্ত্রোপচার করাতে হয়েছে মাশরাফি মর্তুজাকে। সবগুলোতেই ছুরি চালিয়ে মাশরাফিকে সারিয়ে তুলেছেন ডেভিড ইয়াং। মাশরাফিকে সারিয়ে তোলার নায়ক অস্ট্রেলিয় এই চিকিৎসক বাংলাদেশের মানুষের কাছেও ভীষণ পরিচিত। একটি কর্মশালায় অংশ নিতে ঢাকায় আসা ইয়াংকে কাছে পেয়ে মাশরাফি স্মরণ করেছেন মানুষটির অবদানের কথা।
গত ১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ অর্থোপেডিক সোসাইটির আমন্ত্রণে তিন দিনের কর্মশালায় অংশ নিতে ঢাকায় আসেন ইয়াং। থাকবেন ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এরমাঝে মঙ্গলবার আসলেন মিরপুরে। তাকে পেয়ে জড়িয়ে ধরলেন মাশরাফি। পরে বললেন, ‘আমার ছয়টি বড় অস্ত্রোপচার উনার হাত দিয়ে হয়েছে। ওপরে আল্লাহ আছেন, তবে এটা বলতে পারি এখনও যে আমি খেলছি তার উছিলা হয়তো উনি। উনিই আমার সব কিছু করেছেন। অস্ত্রোপচারের পর পুনর্বাসন কিভাবে কি করতে হবে (সেই দিক নির্দেশনা সব সময় দিয়েছেন)।’
কেবল মাশরাফি নয়, বাংলাদেশের আরও অনেক পেসারের চোটের চিকিৎসা হয়েছে তার হাত ধরে।
‘যদি দেখেন, চোট পাওয়া বেশিরভাগ ক্রিকেটার ওর অস্ত্রোপচারের পর মাঠে ফিরেছে। আমারটা ছিল সবচেয়ে কঠিন। ও ছয়বার আমার অস্ত্রোপচার করেছে। আর প্রতিবারই তা খুব জটিল ছিল। একের পর এক অস্ত্রোপচারে খুব জটিল হয়ে পড়েছিল। সবশেষে ২০১১ সালের অস্ত্রোপচারের পর আর কোনো সমস্যা হয়নি।’
মাশরাফি তার ক্যারিয়ারের পেছনে সবচেয়ে বড় মনে করছেন ইয়াংকে, কিন্তু বিনয়ী চিকিৎসক নিজের অবদানকে রাখছেন কমিয়ে।
‘মাশরাফি একজন পেশাদার অ্যাথলেট। ক্রিকেট আর দেশের প্রতি সম্পূর্ণ নিবেদিত। তার ক্যারিয়ারে আমার অবদান খুবই কম। ও যেভাবে পুনর্বাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে, নিজের ক্যারিয়ারকে প্রলম্বিত করেছে তাতে আমি মুগ্ধ।’
বারবার চিকিৎসা নিতে যাওয়ায় ডা.ইয়াংয়ের সঙ্গে পেশার বাইরেও সম্পর্ক হয়ে গেছে বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়কের। ইয়াং ক্রিকেটার মাশরাফির বাইরেও জেনে নিয়েছেন তার অন্য গুণও,
‘এমনটা জীবনে একবারই ঘটে। মাশরাফির ব্যাপারে আমি যা সবচেয়ে পছন্দ করি, ও খুব ভালো একজন মানুষ। ও দানশীল, কাছের মানুষ আর সতীর্থদের জন্য খুব দায়িত্বশীল। মাশরাফির জন্য বাংলাদেশের গর্বিত হওয়া উচিত। দেশ ও খেলাধূলার জন্য ও দারুণ একজন দূত।’
টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেওয়ার পর মাশরাফি এখন কেবল ওয়ানডেই খেলেন। চোটের কারণেই খেলেন না টেস্ট। তবে সাদা পোশাকে নেননি অবসরও। ডেভিড ইয়াং দিলেন মাশরাফির টেস্ট খেলার সনদ, 'প্রত্যেক দলের একজন নেতা প্রয়োজন। ও সব সময়ই একজন নেতা। আর টেস্ট দলে সব সময়ই ওর জন্য একটা জায়গা থাকবে। ওর (টেস্ট) খেলার সামর্থ্য সম্পর্কে আমার উত্তর হ্যাঁ, ও পারবে।'
Comments