খালেদা জিয়া কারাগারে
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজার রায়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পুরনো ঢাকার কারাগারে নেওয়া হয়েছে। জামিন না পাওয়া পর্যন্ত তাকে নাজিউমদ্দিন রোডের এই কারাগারে থাকতে হবে।
কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে রাজধানীর বকশীবাজারে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালত থেকে একটি সাদা রঙের ফোর হুইল ড্রাইভ গাড়িতে করে বিএনপি প্রধানকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। কারাগারের ডেকেয়ার সেন্টারে তাকে রাখা হবে।
এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাবরণ করতে হল।
এর আগে আজ দুপুরে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাণ্ডের সাজা ঘোষণা করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত। এই মামলায় খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠ ছেলে ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমাকে ১০ বছরের সাজা দেওয়া হয়। মামলার অপর চার আসামীকেও ১০ বছরের কারাদণ্ড ও দুই কোটি ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। আদালত বলেন, খালেদা জিয়ার বয়স ও সামাজিক মর্যাদা বিবেচনায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এই মামলায় অপর সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, সাবেক মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, সাবেক সাংসদ ও ব্যবসায়ী কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ ও জিয়াউর রহমানের ভাগনে মমিনুর রহমান। এর মধ্যে পলাতক আছেন তারেক রহমান, কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান।
রাজধানীর বকশীবাজারে স্থাপন করা বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান খালেদা জিয়া ও অপর দুই আসামী কাজী সালিমুল হক এবং শরফুদ্দিন আহমেদের উপস্থিতিতে ৬৩২ পৃষ্ঠা রায়ের সারসংক্ষেপ পড়ে সাজা ঘোষণা করেন।
অনাথ শিশুদের সহায়তার জন্য বিদেশ থেকে পাঠানো প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ টাকা ক্ষমতার অপব্যবহার করে ও দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করার অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এই মামলা করে।
তদন্ত শেষে ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট খালেদা জিয়া, তার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
৩৫ বছরের রাজনৈতিক জীবনে খালেদা জিয়া বেশ কয়েকবার কারাগারে গিয়েছেন তবে এবারই প্রথম তিনি কোনো মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হলেন। ৮০’র দশকে এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় তিনি বেশ কয়েকবার আটক হয়েছিলেন। ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তৎকালীন সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দুর্নীতির অভিযোগে তিনি গ্রেফতার হন। সেসময় তাকে প্রায় এক বছর সংসদ ভবন এলাকায় স্থাপিত বিশেষ কারাগারে রাখা হয়েছিল।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর ১৯৮৩ সালে খালেদা জিয়া দলের ভাইস চেয়ারপারসন হন। এর পরের বছর ১০ মে তিনি চেয়ারপারসন হন।
Comments