ভালোবাসার দিনে একমঞ্চে সব ধর্মের ৩২০ বর-কনের বিয়ে
কলকাতার একটি সেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে এক সঙ্গে, এক মঞ্চে প্রায় সব ধর্মের অনুসারী ৩২০ বর-কনে সাতপাকে বাঁধা পড়লেন। বিয়ে পিড়িতে বসা বর-কনে কলকাতা ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের ২৩ জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের বাসিন্দা।
বিশ্ব ভালবাসা দিবসের দিনে কলকাতায় গণ-বিয়ের এই আয়োজন ঘিরে ছিল স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়ার নজর।
কলকাতার পাইকপাড়া এলাকায় বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়ে দেখা যায়, আর দশটা সাধারণ বিয়ের মতোই আয়োজন। মেয়ের বাবা ঘর গোছাতে যেমনটা মেয়ের সঙ্গে বিয়ের সময় দিয়ে থাকেন। খাট-বিছানাপত্র থেকে থালা-বাসন; গৃহস্থালির প্রায় সব উপকরণই সাজানো রয়েছে। বিয়ে উপলক্ষে স্থানীয় আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্যও রয়েছে হরেক রকমের খাবার।
শুধু ভিন্নতা; ১৬০ জোড়া বর-কনের বিয়ে হচ্ছে একই মঞ্চে ভিন্ন ধর্মের এবং বর্ণের।
হিন্দু বর-কনেরা তাদের ধর্মীয় রীতি মেনেই সাতপাকে বাঁধা পড়ছেন। আবার মুসলিম বর-কনেকেও কাজী ডেকে কবুল পড়ানো হচ্ছে। সাঁওতাল, আদিবাসী থেকে খ্রিষ্টান সব ধর্মের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছিল গণ-বিবাহের এই মঞ্চটি।
পরিণয়ের মুহূর্তে বর-কনেরা যদিও সাংবাদিকদের সামনে তেমন কিছু মুখ খুলে বলতে লজ্জা বোধ করছিলেন। কিন্তু আয়োজক গৌতম হালদার ব্যাখ্যা করলেন ব্যতিক্রমী আয়োজন নিয়ে।
দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বললেন, সমাজের পিছিয়ে থাকা পরিবারের কন্যা দায়গ্রস্তদের বছর জুড়ে খুঁজে বের করা হয়। এরপর পুলিশ ভেরিফিকেশন করে পাত্র-পাত্রীর বিষয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন আসার পর প্রত্যেকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার উত্তীর্ণ হলেই বিয়ের জন্য চূড়ান্ত মনোনীত করা হয় এবং এই গণ-বিবাহের মঞ্চে ডাকা হয়। প্রত্যেক বিয়ের রেজেস্ট্রিশনও করা হয়।
ভালোবাসা দিবসকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রতি বছর এই দিনে এমন গণ-বিবাহের আয়োজন করে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আলোয় ফেরা। এই বছর ৩২০ জনের বিয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগামী বিছর সংখ্যাটি এক হাজার হবে বলে তাদের দাবি।
কলকাতার সেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে সর্বধর্মের সমন্বয়ে এমন গণ-বিয়ের অনুষ্ঠান; ধর্মীয় অসহিষ্ণু পরিবেশের বিরুদ্ধে বড়সড় বার্তা বলেই মনে করছেন অনেকেই।
Comments