প্রত্যাবাসনের জন্য ৮,০৩২ রোহিঙ্গার তালিকা হস্তান্তর
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে থেকে প্রথম দফায় প্রত্যাবাসনের জন্য ১,৬৭৩টি পরিবারের ৮,০৩২ জনের একটি তালিকা মিয়ানমারের কাছে হস্তান্তর করেছে বাংলাদেশ।
গতকাল ঢাকায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লেফটেন্যান্ট জেনারেল কিউ সোয়ের সাথে বৈঠকের পর তালিকাটি তুলে দেন। প্রথম দফায় তারাই বাংলাদেশ থেকে নিজ দেশে ফিরবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বৈঠক শেষে আসাদুজ্জামান খান বলেন, “তারা [মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ] পরিবার ধরে রোহিঙ্গাদের তালিকা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দিতে বলেছিল। আমরা ১,৬৭৩টি পরিবারের ৮,০৩২ জনের একটি তালিকা দিয়েছি। তারা এখন তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।”
বিকাল ৩টায় শুরু হয়ে তিন ঘণ্টা ধরে দুই দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের এই বৈঠক চলে। তবে ঠিক কবে নাগাদ রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরতে শুরু করবেন সে ব্যপারে এখনও সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, “সুনির্দিষ্ট কোনো তারিখ নিয়ে আলোচনা হয়নি। আমাদের আশা খুব শিগগির এটা শুরু হবে।”
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য গত বছর ২৩ নভেম্বর মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী ৬০ দিনের মধ্যে প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার কথা ছিল। গত ১৬ জানুয়ারি নেপিডো পরিবার ধরে রোহিঙ্গাদের তালিকা চাইলে ঢাকা তাতে সম্মতি দেয়। এতেও শেষ মুহূর্তে এসে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া পিছিয়ে যায়।
কয়েক দশক ধরে মিয়ানমারে জাতিগত নিপীড়নের শিকার রোহিঙ্গাদের ওপর গত ২৫ আগস্ট নতুন করে সেনাবাহিনীর দমন অভিযান শুরু করলে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। মিয়ানমারে তাদের ওপর নির্যাতন ও গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়ার বিবরণ দিয়েছে। স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া ছবি ও রয়টার্সের অনুসন্ধানে রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এছাড়াও এর আগে বিভিন্ন সময় নিপীড়নের মুখে প্রায় তিন লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে। সব মিলিয়া প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গার বোঝা বহন করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।
Comments