চলে গেলেন খাওয়ার স্যালাইন আবিষ্কারক রফিকুল ইসলাম

oral saline inventor
খাওয়ার স্যালাইন আবিষ্কারক ডা. রফিকুল ইসলাম (১৯৩৬-২০১৮)

খাওয়ার স্যালাইনের আবিষ্কারে যাদের অবদান ছিলো তাদের মধ্যে অন্যতম ডা. রফিকুল ইসলাম মারা গেছেন। গতকাল সকালে রাজধানীর এপোলো হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল  ৮২ বছর।

গত মাসে ডা. রফিকুল ইসলামের হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল। তাছাড়াও বয়সজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। স্বভাবে অন্তর্মুখী এই মানুষটি দুই মেয়ে এক ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

ডায়রিয়ার হাত থেকে বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ শিশুর জীবন বাঁচানোর কৃতিত্ব দেওয়া হয় খাবার স্যালাইনকে (ওআরএস)। সব ওষুধের দোকানেই স্বল্প মূল্যে খাবার স্যালাইন পাওয়া যায়। তবে হাতের কাছে এটি পাওয়া না গেলেও সবাই জানে এক মুঠো চিনি বা গুড় আর তিন আঙ্গুলের এক চিমটি লবণ আধা লিটার বিশুদ্ধ পানিতে মিশিয়ে ডায়রিয়ার প্রাণরক্ষাকারী দ্রবণটি তৈরি করা যায়। জনস্বাস্থ্যে খাবার স্যালাইনের গুরুত্ব বিবেচনায় ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল দ্য ল্যান্সেট একে চিকিৎসা বিজ্ঞানে বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার আখ্যা দিয়েছিল।

১৯৩৬ সালে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে রফিকুলের জন্ম। ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময়ে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করে আইসিডিডিআরবিতে যোগ দেন। ২০০০ সাল পর্যন্ত তিনি সেখানেই কর্মরত ছিলেন। ব্রিটেনে ট্রপিক্যাল মেডিসিন ও হাইজিন বিষয়ে তিনি উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করেন। আইসিডিডিআরবিতে তিনি ওষুধ নিয়ে নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা চালালেও তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার ওআরএস।

আইসিডিডিআরবির সাবেক বিজ্ঞানী ডা. এমএ ওয়াহেদ দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পশ্চিমবঙ্গে শরণার্থী শিবিরগুলোতে একবার কলেরা ছড়িয়ে পড়েছিল। তখন এর একমাত্র চিকিৎসা ছিলো শিরায় দেওয়া স্যালাইন (ইন্ট্রাভেনাস)। কিন্তু এ ধরনের স্যালাইনের সরবরাহ কম থাকায় খাবার স্যালাইন দিয়ে অনেকের প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব হয়েছিল।

এর পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা খাবার স্যালাইনকে স্বীকৃতি দেয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ডায়রিয়ার চিকিৎসায় স্যালাইনের ব্যবহার নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়। এ কারণে এটি “ঢাকা স্যালাইন” নামেও পরিচিতি পেয়েছিল।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus promises election on time

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus yesterday reaffirmed his commitment to holding the 13th national election in the first half of February next year.

8h ago