সিরিয়াল কিলার রসু খাঁসহ ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড

সিরিয়াল কিলার রসু খাঁ
সিরিয়াল কিলার রসু খাঁ। ছবি: আলম পলাশ

আলোচিত সিরিয়াল কিলার রসু খাঁসহ তিন জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন চাঁদপুরের নারী ও শিশু আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে ২০১০ সালের ২১ অক্টোবর ফরিদগঞ্জ থানায় দায়েরকৃত পারভীন হত্যা ও ধর্ষণ মামলায় চাঁদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিচারক আবদুল মান্নান এই রায় দেন। অপর সাজাপ্রাপ্তরা হলো রসুখার ভাগ্নে জহিরুল ইসলাম ও তার সহযোগী ইউনুছ। এদের মধ্যে ইউনুছ পলাতক রয়েছে।

১১ হত্যা ও ধর্ষণে অভিযুক্ত এই খুনি বর্তমানে চাঁদপুর জেলা কারাগারে আছেন। রসু খাঁর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ১০টি মামলার মধ্যে একটির রায় হয়েছে। এর আগেও একটি হত্যা মামলায় রসু খাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, রসু খাঁর বিরুদ্ধে একই আদালতে সাতটি ধর্ষণ ও একটি হত্যার চেষ্টার মামলা বিচারাধীন। তবে একটি মামলায় তাকে খালাস দেওয়া হয়।

চাঁদপুরের নারী ও শিশু আদালতের সরকারি কৌঁসুলি অ্যাড.হাবিবুল ইসলাম তালুকদার জানান, চাঁদপুর সদরের  মদনা গ্রামের ছিঁচকে চোর রসু খাঁ এক সময় সিরিয়ার কিলারে পরিণত হয়। ২০০৯ সালের ৭ অক্টোবর ওই গ্রামে মসজিদে ফ্যান চুরির মামলায় পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর এক এক করে তার লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের কথা বেরিয়ে আসে। রসু খাঁ নিজের মুখে স্বীকার করেন ১১ নারী হত্যার কথা। টার্গেট ছিল ১০১টি হত্যাকাণ্ড ঘটানোর। রসু যাদের হত্যা করেছে তারা সবাই ছিল গার্মেন্টস কর্মী।

রসু খাঁ ২০০৭ সালের প্রথম দিকে তার শ্যালক মান্নানের স্ত্রী রীনাকে হত্যার মধ্য দিয়ে হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠে। তার বক্তব্যানুযায়ী শ্যালকের প্ররোচনায় সে রীনাকে হত্যা করে। রীনার বাড়ি হাতিয়ায়। সে তাকে মিথ্যে কথা বলে ফরিদগঞ্জের ভাটিয়ালপুরে এনে ধর্ষণের পর শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে ডাকাতিয়া নদীর পারে ফেলে যায়। এরপর সে একে একে আরো ১০টি খুন করে। যাদের খুন করা হয় তাদের বয়স ১৭ থেকে ৩৫ এর ভেতর। খুনী রসু জানিয়েছেন, হত্যার আগে সে সব মেয়েকে ধর্ষণ করতো না। শুধুমাত্র যাকে পছন্দ হতো তাকেই ধর্ষণ করত। আর সবাইকেই সে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে। সবশেষ তার ভাগ্নে জহিরুলকে সাথে নিয়ে গত ২০১০ সালের ২০ অক্টোবর ফরিদগঞ্জের পালতালুক গ্রামের পারভীন আক্তারকে হত্যা করে জঙ্গলে ফেলে দেয়। সে যে ১১টি হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তার মধ্যে ফরিদগঞ্জে এনে ছয়টি, চাঁদপুর সদরে চারটি এবং হাইমচরে একটি মেয়েকে হত্যা করে।

তৎকালীন ফরিদগঞ্জ থানার এসআই মীর কাশেম গত ২০১১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ স্থানীয় মসজিদের ফ্যান চুরির ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় রসু কে টঙ্গীর নিরাস পাড়া থেকে আটক করে। এরপর তার মোবাইলের সূত্র ধরে পুলিশের সন্দেহ হয় যে, সে স্থানীয় এক কিশোরী হত্যার সাথে জড়িত থাকতে পারে। পরে ২০১১ এর ৭ অক্টোবর রাতে তাকে টঙ্গি থেকে গ্রেফতার করা হয়। তারপর তিনদিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদকালে সে এক এক করে তার হাতে সংঘটিত খুনের কাহিনী বেরিয়ে আসতে থাকে। পরে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন রসু খাঁ।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh women retain SAFF glory

Bangladesh retained the title of SAFF Women's Championship with a 2-1 win against Nepal in an entertaining final at the Dasharath Stadium in Kathmandu today. 

36m ago