তারাদের জীবনে নারীর প্রভাব

নিজ নিজ ক্ষেত্রে সবাই সফল তারকা। অসংখ্য মানুষের মন জয় করেছেন তাঁরা। কেউ অভিনয়, কেউ বা গান দিয়ে। তাঁদের সবার জীবনে রয়েছে নারীর প্রভাব। সেটি দাদি, মা-বোন কিংবা প্রিয়তমা। জীবনে নারীর প্রভাব নিয়ে তারকারা কথা বলেছেন দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনের সঙ্গে।
জীবনে নারীর প্রভাব

নিজ নিজ ক্ষেত্রে সবাই সফল তারকা। অসংখ্য মানুষের মন জয় করেছেন তাঁরা। কেউ অভিনয়, কেউ বা গান দিয়ে। তাঁদের সবার জীবনে রয়েছে নারীর প্রভাব। সেটি দাদি, মা-বোন কিংবা প্রিয়তমা। জীবনে নারীর প্রভাব নিয়ে তারকারা কথা বলেছেন দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনের সঙ্গে।

আইয়ুব বাচ্চু

আমার এতদূর আসার পেছনে মায়ের অবদান সবচেয়ে বেশি। ছোটবেলা থেকে তিনি অনেক সাপোর্ট দিয়েছেন। যখন আমি মিউজিক শুরু করি তখন সবাই আমার বিপক্ষে ছিলেন। আমার মা-ই শুধু আমার পক্ষে ছিলেন। তিনি মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত আমাকে সাহস জুগিয়েছেন। তিনি আমাকে বলতেন, “করে যাও, পারবে।” তিনি যখন মারা যান তখনো তিনি আমার হাত ধরেছিলেন। শেষ পর্যন্ত আমার মায়ের একটাই কথা ছিল, যতো বেশি কষ্ট করবে ততো বেশি ভালো ফল ভোগ করবে। বসে কিছু কল্পনা করে কোনো ভালো রিটার্ন কখনো পাওয়া যায় না। তোমাকে যেকোনো কিছু পেতে হলে কষ্ট করতে হবে- এটাই ছিলো আমার মায়ের শিক্ষা।

শাকিব খান

সিনেমায় আসার পেছনে আমার মায়ের ভূমিকা ছিলো অনেক বেশি। আমি সায়েন্সের ছাত্র ছিলাম। আমার যতো শখ কিংবা দাবি মেটানোর জন্য যা যা করা দরকার, সবই করেছেন মা। এছাড়াও, আমার দাদি আমাকে খুব আদর করতেন। তাঁর যতো নাতি ছিল, তাদের মধ্যে আমাকে বেশি আদর করতেন তিনি। ভীষণ স্মার্ট ছিলেন আমার দাদি। আমিও তাঁকে খুব পছন্দ করতাম। তাঁর একটা বিষয় ছিল, তিনি শহরে থাকতে চাইতেন না। আমার চাচার বাসাতেও থাকতেন না। দিন দুয়েক থাকার পরই চলে যেতেন। গ্রামেই তাঁর ভালো লাগত। আমাদের ওখানে তো ফেরি পার হয়ে যেতে হয়, দিনের বেলা গেলে ঝামেলা হয়, তাই অনেক রাতে চলে যেতাম, সবাই মিলে গিয়ে রাতটা সেখানে থাকতাম। গিয়ে কয়েক ঘণ্টা থাকতাম আর ভোরবেলা লোকজন ওঠার আগেই আবার রওনা দিয়ে দিতাম। আমার কাজের অনুপ্রেরণাদাতা হিসেবে তাঁরা দুজন সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছেন।

এন্ড্রু কিশোর

মা আমার প্রথম প্রেরণা। যখন এন্ড্রু কিশোর হইনি, তখন থেকেই আমাকে নানাভাবে অনুপ্রেরণা জোগাতেন তিনি। কারণ স্ট্রাগলিং মোমেন্টটাতে আসলে অনেকেই পাশে থাকেন না। সে সময় আমার মা-বাবা দুজনই আমার পাশে ছিলেন। একটা ইন্ডাস্ট্রিতে স্ট্যাবিলিশড হতে গেলে তো সময়, মেধা, ধৈর্য, শ্রম সবকিছুর দিকেই নজর দিতে হয়। মা আমাকে সে বিষয়গুলোতে সে সময় টেক কেয়ার করতেন। নানান পরামর্শ দিতেন। আমি তো জীবনের নানা রূপ দেখেছি, যার কারণে আমি সে সময়গুলোর কথা খুব ভালো করে মনে করতে পারি।

চঞ্চল চৌধুরী

আমি যে সেক্টরে কাজ করছি, সেখানে নিজের মধ্যে জন্মগতভাবে কিছু বিষয় থাকতে হয়। আমার মা শিল্পানুরাগী কিংবা শিল্পমনা বলতে যা বোঝায়, তেমনটি ছিলেন। ওটাই আমার রক্তে রয়েছে। মায়ের সুরেলা কণ্ঠ ছিলো। তিনি গান-বাজনা করতেন। যার কারণে আমি টুকটাক গান গাইতে পারি। আর একটা বিষয় হলো আমার এতো দূর আসার পেছনে আমার বোনদের বিশাল একটা ভূমিকা রয়েছে। পড়াশোনার জন্য একটা সময় আমার বড় বোনের বাড়িতে থাকতাম। আমাদের প্রত্যেক ভাই-বোনকে মানুষ করার জন্য বড় বোনের ভূমিকা ছিলো। আজকের এ অবস্থানে আসার পেছনে যদি অবদানের কথা বলতে হয়, মায়ের পর বোনদের ভূমিকা প্রধান।

ফেরদৌস আহমেদ

আমার এতদূর আসার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রয়েছে আমার বাবা-মায়ের দুজনেরই। কিন্তু, মায়ের অনুপ্রেরণাটা সবকিছুতেই একটু বেশি। তাঁর সঙ্গে সবকিছুই শেয়ার করতে পারি। একজন মানুষ হিসেবে বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অবদান আমার মায়ের। আমার পুরো জীবনটার দিকে যদি একবার তাকাই, তাহলে দেখবো জীবন সুন্দর করতে রয়েছে মা, স্ত্রী, বোনদের ভূমিকা। জীবনের প্রথম স্তরে সবচেয়ে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ ও অনুপ্রেরণা পেয়েছি মায়ের কাছে থেকে। বিয়ের পর অনুপ্রেরণা পেয়েছি স্ত্রীর কাছ থেকে। আর বোনেরা তো রয়েছেনই। মায়ের পর পৃথিবীতে আমার বোনেরা আমার চলার পথটিকে সুন্দর করে দিতে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করেছেন।

Comments