‘টার্মিনেটর’ সিরিজ এবং আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগার

ত্রিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছে ‘টার্মিনেটর’ সিরিজ। বলা বাহুল্য, এই সিরিজের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে যাঁর নাম তিনি হলেন আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগার। আজকের প্রজন্মের হলিউড দর্শকদের কাছে ৭০ বছর বয়সী এই অভিনেতার গুরুত্ব এখনো যে ফুরিয়ে যায়নি তার প্রমাণ সিরিজটির ষষ্ঠ কিস্তিটিরও প্রধান চরিত্র হিসেবে রয়েছে তাঁর নাম।
Arnold Schwarzenegger
হলিউড অভিনেতা আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগার। ছবি: সংগৃহীত

ত্রিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছে ‘টার্মিনেটর’ সিরিজ। বলা বাহুল্য, এই সিরিজের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে যাঁর নাম তিনি হলেন আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগার। আজকের প্রজন্মের হলিউড দর্শকদের কাছে ৭০ বছর বয়সী এই অভিনেতার গুরুত্ব এখনো যে ফুরিয়ে যায়নি তার প্রমাণ সিরিজটির ষষ্ঠ কিস্তিটিরও প্রধান চরিত্র হিসেবে রয়েছে তাঁর নাম।

১৯৮৪ সালে পরিচালক জেমস ক্যামেরনের হাত ধরে শুরু হয়েছিলো বৈজ্ঞানিক-কল্পকাহিনি-ভিত্তিক অ্যাকশন মুভি ‘টার্মিনেটর’-এর যাত্রা। এরপর ছবিটি কাঁপিয়েছিলো বক্স অফিস। এই ‘টার্মিনেটর’-এর মাধ্যমে চিত্রপরিচালনায় সুখ্যাতি অর্জন করেন ক্যামেরন। আর শোয়ার্জেনেগার লাভ করেন মহাতারকার খ্যাতি।

১৯৯১ সালে এই সিরিজের দ্বিতীয় কিস্তি তথা ‘টার্মিনেটর টু: জাজমেন্ট ডে’-ও দাপিয়ে বেড়ায় বিশ্ব চলচ্চিত্রাঙ্গণ। এই ছবিটিরও পরিচালক ছিলেন ক্যামেরন। বলা বাহুল্য, এর প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন শোয়ার্জেনেগার। অনবদ্য অভিনয়ের ফলে ‘টার্মিনেটর’-এর সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য হয়ে যায় শোয়ার্জেনেগারের নাম।

পরবর্তী সিরিজে ক্যামেরন না থাকলেও থেকে যান শোয়ার্জেনেগার। ১৯৯৭ সালে ‘টাইটানিক’ নিয়ে ক্যামেরন বিশ্বমঞ্চে আসেন এক নতুন উচ্চতা নিয়ে। কিন্তু, শোয়ার্জেনেগার অংশ নেন ‘টার্মিনেটর থ্রি: রাইজ অব দ্য মেশিন’-এ। কেননা, এই অভিনেতা ছাড়া সিরিজটি গুরুত্বহীন মনে হতে পারে দর্শকদের কাছে।

এক সময় ‘টার্মিনেটর’-এর দর্শক-সমালোচকরা ভাবতে শুরু করেন যে ক্যামেরনের অনুপস্থিতিতে আবেদন হারিয়ে ফেলছে ছবিটি। কেননা, ২০০৩ সালে সিরিজের তৃতীয় কিস্তিটি খরচের কয়েক গুণ বেশি অর্থ ঘরে তুলে আনলেও ক্যামেরন-যুগের ‘টার্মিনেটর’-এর তুলনায় দর্শকদের মনে এর প্রভাব একটু কমই দেখা যায়। এর কারণ হতে পারে, ক্যামেরন শুধু প্রথম কিস্তি দুটির পরিচালনাই করেননি, এর চিত্রনাট্যও লিখেছিলেন তিনি। চিত্রনাট্য তৈরিতে এই ব্যক্তির হাতের জাদু তো দেখা গেছে ‘টাইটানিক’ ও ‘অ্যাভাটার’-এও।

যাহোক, সিরিজটির চতুর্থ কিস্তি তৈরিতে যখন হাত দেওয়া হয় তখন দেখা যায় শোয়ার্জেনেগার আর অভিনেতা নেই। তিনি ততোদিনে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব তথা ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর। তাই ২০০৯ সালে ‘টার্মিনেটর স্যালভেশন’-কে দর্শকদের সামনে আনতে হয় সিরিজটির আইকনিক অভিনেতা আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগারকে ছাড়াই। বক্স অফিস থেকে ভালো আয় হলেও ছবিটি খুব একটা সাড়া জাগাতে পারেনি বলেই মনে করেন চলচ্চিত্র সমালোচকরা।

এরপর, ২০১১ সালে গভর্নরের পদ ছাড়ার পর শোয়ার্জেনেগার ফিরে আসেন ‘টার্মিনেটর’ সিরিজের পঞ্চম কিস্তি ‘টার্মিনেটর জেনেসিস’-এ। ২০১৫ সালের এই চলচ্চিত্রটি যেন জাদু দেখিয়েছিলো দর্শকদের। তাই ১৫৫ মিলিয়ন ডলারের ছবিটি ঘরে তোলে ৪৪০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি।

গত বছর ‘টার্মিনেটর’ কর্তৃপক্ষ জানায় যে, তাদের সিরিজের ষষ্ঠ কিস্তিতে অভিনয় করবেন আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগার। বলা হয়, এতে পরিচালক হিসেবে ‘থর: দ্য ডার্ক ওয়ার্ল্ড’-খ্যাত টিম মিলার থাকলেও ছবিটির প্রযোজনার পাশাপাশি পুরো কাজ তত্ত্বাবধান করবেন জেমস ক্যামেরন। এছাড়াও, সারাহ কনরের ভূমিকায় ফিরে আসছেন লিন্ডা হ্যামিলটন।

হলিউড-ভক্তদের জন্যে নিশ্চয় এটি একটি সুখবর যে ‘টার্মিনেটর সিক্স’-এ দেখা যাবে সিরিজটির প্রথম দিককার কয়েকজন কুশীলবকে। পুরনো সহ-কর্মীদের আবারো ফিরে পাওয়া যাবে এমন ভাবনায় বেশ আনন্দিত শোয়ার্জেনেগার। তিনি ভক্তদের জানান, “আমি অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছি আমার আগের চরিত্রটিতে ফিরে আসার জন্যে। এটি সত্যিই খুব আনন্দের যে টিম মিলার ছবিটি পরিচালনা করবেন আর সবকিছু তত্ত্বাবধান করবেন জেমস ক্যামেরন।”

দ্য আর্নল্ড ফ্যানস ডটকমকে তিনি আরো বলেন, শিডিউল অনুযায়ী আগামী জুনেই শুরু হচ্ছে ছবিটির শুটিংয়ের কাজ। এটি চলবে আগামী অক্টোবর পর্যন্ত। ২০১৯ সালের ২৬ জুলাই ‘টার্মিনেটর সিক্স’ মুক্তি পাবে বলেও উল্লেখ করেন ‘মিস্টার টার্মিনেটর’।

Comments