নির্বাচকদের ‘স্বাধীনতা নেই’, সামর্থ্য নিয়েও সন্দিহান ফারুক

প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন-হাবিবুল বাশার
বর্তমান প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন ও হাবিবুল বাশারের সঙ্গে সাবেক প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ। ফাইল ছবি

দল নির্বাচনে হস্তক্ষেপের দাবি করে বছর দেড়েক আগে প্রধান নির্বাচকের পদ ছেড়েছিলেন ফারুক আহমেদ। তার দায়িত্বের সময় প্রধান কোচ থাকা চন্ডিকা হাথুরুসিংহের ছিল অঢেল ক্ষমতা।তখন প্রশ্ন উঠত নির্বাচকদের কাজ কি তবে? হাথুরুসিংহে যাওয়ার পরও নাকি বদলায়নি পরিস্থিতি, ফারুকের মতে এখনো নির্বাচকরা স্বাধীন নন। এমনকি তারা যথেষ্ট যোগ্য কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সাবেক এই  অধিনায়ক।

শনিবার মিরপুর একাডেমি মাঠে কলকাতার একটি ক্লাবের বিপক্ষে সাবেকদের হয়ে প্রদর্শনী ম্যাচ খেলতে এসেছিলেন ফারুক। বাংলাদেশ ক্রিকেটের সাম্প্রতিক দশা, দল নির্বাচনে অস্থিরতা নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।

‘নির্বাচকদের স্বাধীনতা থাকতে হবে। প্রথমেই ঠিক করতে হবে, কাকে নির্বাচক বানাবেন। তার যোগ্যতা কতটুকু আছে। আর সে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে কি না।’

দুই দফায় বাংলাদেশের প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব পালন করা ফারুক তার খেলোয়াড়ি জীবনের সতীর্থ মিনহাজুল আবেদিন নান্নু ও হাবিবুল বাশার সুমনের সামর্থ্য নিয়েও সন্দিহান, ‘বোর্ডের হাতেই সব ক্ষমতা। বোর্ড নির্বাচকদের একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত স্বাধীনতা দিয়ে দেখতে পারে। যদি এর মধ্যে ভালো ফল না আসে, তাহলে তো সেই নির্বাচক কমিটি ভেঙে দেওয়ার সব ক্ষমতা বিসিবির আছে। আমি তো মনে করি এখনকার নির্বাচকদের ক্ষমতা খুবই কম। তারা স্বাধীনভাবে তো কাজ করতেই পারে না, তাদের যোগ্যতা নিয়েও কথা হতে পারে।’

বোর্ড কর্তারা হস্তক্ষেপ করবেন। স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবেন না জেনেই এই পদে থাকেননি ফারুক।

‘আমি জানতাম এমন কিছুই হবে। সে কারণে দেড় বছর আগে প্রধান নির্বাচকের পদ ছেড়ে দিয়েছিলাম। দল যখন ভালো করে, তখন অনেক কিছুই চোখে পড়ে না। দল যদি খারাপ করে, তখন সমস্যাগুলো সামনে চলে আসে।

জাতীয় দলের নির্বাচক এখন দুজন। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিনের পাশাপাশি আছেন হাবিবুল বাশার সুমন। তবে ফারুকের মতে এই দুজন ছাড়াই অনানুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ দলের নির্বাচক এখন অনেক। তার ইঙ্গিত বোর্ড কর্তাদের দিকেই,

‘যদি নির্বাচক অনেক থাকে, তাহলে সমস্যা হবেই। তখন একজন বলবে, অমুককে নিলে ভালো হতো, আরেকজন বলবে, তাকে নাও। আসলে এমন পরিস্থিতিতে কে সিদ্ধান্তটা নিল, সেটা বোঝা যায় না। এখন আমরা দেখি, ম্যাচ শুরুর আগের দিন খেলোয়াড় ঢোকানো হচ্ছে। এটা নির্বাচকেরা কতটুকু জানেন, আমরা জানি না। পত্রিকায় পড়েছি, আসলে তাঁরা এসবের কিছুই নাকি জানেন না।’

ঘরের মাঠে সর্বশেষ ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্ট ও শ্রীলঙ্কা সিরিজে দলে পরিবর্তন এসেছে বেশ কয়েকবার। সব মিলিয়ে ৩২ জন ক্রিকেটারকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ডাকা হয়েছে। এমন অস্থিরতার কোন যুক্তি খুঁজে পাচ্ছেন না ফারুক, ‘শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হোম সিরিজ ও ত্রিদেশীয় সিরিজে ৩২ জন খেলোয়াড়কে ডাকা হয়েছে। তিন সংস্করণ মিলে খেলেছে ২৮ জন। এতে খেলোয়াড়েরা নিজেদের দায়িত্ব নিয়ে বিভ্রান্তিতে পড়ে যায়। দলটাকে থিতু করতে হবে। ২৮ জন খেলোয়াড়কে তিন সংস্করণে খেলানোর কোনো যুক্তিই নেই। ঠিক করতে হবে আমরা কোন খেলোয়াড়কে কোথায় খেলাতে চাই। দল নির্বাচনে ইদানীং খুব বেশি পরিবর্তন হচ্ছে।’

এই বেসামাল পরিস্থিতিতে থেকে বের হতে আগের জায়গায় ফেরার তাগিদ দিয়েছেন সাবেক এই প্রধান নির্বাচক, ‘আমাদের আবার আগের জায়গায় ফিরে যাওয়া উচিত। আগে যেমন নির্বাচক কমিটি দিয়ে কাজ হতো, ঠিক তেমনই। কমিটি থাকলে জবাবদিহির ব্যাপার থাকে। এখন কোনো নির্বাচককে যদি দল নিয়ে কিছু জিজ্ঞেস করেন, সে কিন্তু বলতে পারবে না।’

Comments

The Daily Star  | English

Advisory council set to hold emergency meeting this evening

The meeting will be held tonight at 8:00pm at the State Guest House, Jamuna

1h ago