ম্যাজিক্যাল মাহমুদউল্লাহ!

ছক্কা মেরে দলকে জিতিয়ে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ যখন ছুটছিলেন। ফটোগ্রাফারদের অজস্র ক্লিকে তখন বন্দি হচ্ছে তার সব মুহূর্ত। এমনই এক ছবিতে দেখা গেল হিরো মোটরবাইকের বিজ্ঞাপনের সঙ্গে ক্যামেরা বন্দি মাহমুদউল্লাহ। কাকতালীয়ভাবে উঠে যাওয়া এই ছবিই বলে দিচ্ছে সব। ‘হিরো’ মানে ‘নায়ক’ তো তিনিই।
Mahmudullah
ম্যাচ জিতিয়ে ছুটছেন 'হিরো' মাহমুদউল্লাহ। ছবি: এএফপি

ছক্কা মেরে দলকে জিতিয়ে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ যখন ছুটছিলেন। ফটোগ্রাফারদের অজস্র ক্লিকে তখন বন্দি হচ্ছে তার সব মুহূর্ত। এমনই এক ছবিতে দেখা গেল হিরো মোটরবাইকের বিজ্ঞাপনের সঙ্গে ক্যামেরা বন্দি মাহমুদউল্লাহ। কাকতালীয়ভাবে উঠে যাওয়া এই ছবিই বলে দিচ্ছে সব। ‘হিরো’ মানে ‘নায়ক’ তো তিনিই।

মাহমুদউল্লাহর সচরাচর নায়ক হওয়া হয় না। তিনি নিজেও যেন স্বছন্দ পার্শ্বনায়কের চরিত্রেই। দলের প্রায় সব বড়  জয়ে তার অবদান থাকেই। তবে আলোচিত কিংবা সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রিকেটার তিনি কখনই নন। এসব নিয়ে কিছু গায়েমাখার স্বভাবও তার মধ্যে নেই।

২০১১ বিশ্বকাপে শ্বাসরোদ্ধ্বকর ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২ উইকেটে জয় পাইয়ে দিতে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন। কিন্তু সে ম্যাচের ম্যান অব দ্য ম্যাচ ৬০ রান করা ইমরুল কায়েস। সেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই পরের বিশ্বকাপ সেঞ্চুরি করে দলকে জিতিয়ে মূল নায়ক হতে পেরেছিলেন অবশ্য।

গত বছর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠে বাংলাদেশ। দলের বিপর্যয়ের সাকিব আল হাসানের সঙ্গে জুটি বেধে জিতিয়ে আনেন মাহমুদউল্লাহ। সেঞ্চুরি দুজনেরই। তবে ম্যাচ সেরা সাকিব। বেশিরভাগ আলোও শীর্ষ অলরাউন্ডারের উপর। মাহমুদউল্লাহ থেকে যেন সেই পার্শ্বনায়ক চরিত্রে। অবশ্য গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে চলে গিয়েছিলেন একদম খলনায়কের ভূমিকায়।

বেঙ্গালুরুতে ভারতের বিপক্ষে সেই ম্যাচের আক্ষেপ হয়ত এখনো পোড়ায় বাংলাদেশের সমর্থকদের।  সবচেয়ে বেশি পোড়ায় নিশ্চয়ই মুশফিকুর রহিম আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকেই। ৩ বলে দরকার ২। বাংলাদেশ পারেনি এক রান নিতেও। হারায় তিন উইকেট। পর পর দুই বলে একই রকমভাবে আউট হয়েছিলেন দুজন। এরপর ব্যাঙ্গ বিদ্রুপ কম সইতে হয়নি। নিদহাস কাপে ২১৫ রান তাড়ায় সেই আক্ষেপ কিছুটা গুছিয়েছেন মুশফিক। মাহমুদউল্লাহও যেন শোধবোধ করতেই মারলেন ওই ছক্কা।

এবার আরও একবার মূল নায়ক হতে পেরেছেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। চাপের মুখে ১৮ বলে ৪৩। সবচেয়ে বড় কথা শেষ চার বলে ১২ রানের সমীকরণ মিলিয়েছেন চার-ছয়ের রাজসিক কায়দায়।

ক্যারিয়ারের শুরুতে ব্যাট হাতে অতটা আগ্রাসী ছিলেন না। ঠাণ্ডা মেজাজের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে যেন এগুতো তার সব ইনিংস। টি-টোয়েন্টির আধিপত্য, ওয়ানডে ক্রিকেটেও অ্যাপ্রোচের বদল টের পেয়ে নিজেকেও বদলেছেন মাহমুদউল্লাহ। এখন তার ব্যাট থেকে আসে বড় বড় ছয়। মাথা খাটিয়ে বের করেন বাউন্ডারি, প্রান্ত বদল করার মুন্সিয়ানাতেও হয়েছেন পটু। তবে ব্যাটের আগ্রাসন মুখে নেই তার। কথা বলতে গেলেই মনে হয়- বইছে শীতল হাওয়া। ম্যাচ শেষে তেমন সুরেই জানিয়েছেন এটা তার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ইনিংস। পার্শ্বনায়ক থেকে ক্রমশ মূল নায়কে পরিণত মাহমুদউল্লাহর এমন আরও সেরা ইনিংসের দিকে নিশ্চিতভাবে তাকিয়ে থাকবে বাংলাদেশ।

Comments

The Daily Star  | English
Outcomes of Cop28

The consensus and clashes COP28 brought up

It is almost certain that in the end, some progress would be made on some of the contentious issues, but a decision to act on key areas will most likely be kicked down the road once again.

2h ago