ভাসান চরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরে বিদেশি সাহায্যের আশা দেখছে না বাংলাদেশ

কক্সবাজার থেকে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর ভাসান চরে স্থানান্তর করার কাজ করছে বাংলাদেশ। ছবি: রয়টার্স

নিপীড়নের মুখে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের নোয়াখালীর ভাসান চরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ। কিন্তু এই বিশাল কর্মযজ্ঞে বিদেশি সাহায্যের বিশেষ কোনো আশা নেই বলছে বাংলাদেশ। সেই সাথে রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার থেকে সরিয়ে আনার সুনির্দিষ্ট কোনো সময়সীমাও নেই।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ শাহরিয়ার আলম গত শুক্রবার নিউইয়র্কে রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, ভাসান চরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর করা হলে কর্দমাক্ত এই দ্বীপটিকে বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণিঝড়ের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। সেই সাথে প্রচুর সংখ্যায় ঘরবাড়ি ও অবকাঠামো নির্মাণ করতে হবে। এর জন্য খরচ হবে প্রায় ২৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই অবস্থায় বিদেশি অর্থায়নের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি প্রস্তাবের চিন্তাভাবনা করছে সরকার।

তবে ভাসান চরে আসার জন্য রোহিঙ্গাদের চাপ দেওয়া হবে না বলেও রয়টার্সকে জানিয়েছেন শাহরিয়ার আলম। কক্সবাজার থেকে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ড থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার বঙ্গোপসাগরের ভেতরে ভাসান চরে অস্থায়ীভাবে রাখার জন্য কাজ করছে বাংলাদেশ।

গত আগস্টে রাখাইন রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর ৩০টি চৌকিতে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়টির ওপর নির্বিচার নিধনযজ্ঞ চালায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। প্রাণে বাঁচতে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরগুলোতে গাদাগাদি করে আশ্রয় নিয়েছেন। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া পিছিয়ে যাওয়ায় আসন্ন বর্ষা ঋতুর আগেই ভাসান চরে রোহিঙ্গাদের সরিয়ে আনার প্রস্তুতি শুরু করেছে বাংলাদেশ সরকার।

নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে বাংলাদেশের অফিসে বসে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী রয়টার্সকে বলেছেন, “প্রচুর অর্থের প্রয়োজন রয়েছে। তাই রোহিঙ্গাদের সরিয়ে আনার সুনির্দিষ্ট সময়সীমার কথা বলতে পারছি না। এখন পর্যন্ত নিজেদের অর্থায়নে আমরা উন্নয়ন কাজ চালাচ্ছি। কিন্তু এর জন্য কতটা বিদেশি সাহায্য পাওয়া যাবে সে ব্যাপারে আমি খুব একটা আশাবাদী নই।”

মিয়ানমারে নিপীড়নের হাত থেকে বাঁচতে এর আগে বিভিন্ন সময়ে প্রায় তিন লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছিল। তাদের মৌলিক প্রয়োজনগুলো মেটাতেই যেখানে বিদেশি সাহায্যের প্রয়োজন হচ্ছিল সেখানে নতুন করে আসা বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গার জন্য আরও বেশি করে বিদেশি সাহায্যের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। জাতিসংঘ বলছে রোহিঙ্গাদের সহায়তায় জরুরি ভিত্তিতে ৯৫১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন।

ভাসান চরের বসবাসযোগ্যতা নিয়ে বিভিন্ন সময় প্রশ্ন তুলেছে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। যেমন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের আশঙ্কা পলিমাটি দিয়ে সৃষ্ট ভাসান চরে বন্যার প্রকোপ খুব বেশি। তবে এ ধরনের আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলছেন বন্যা নিয়ন্ত্রণে সেখানে বাধ নির্মাণ করা হচ্ছে তাই বন্যা নিয়ে চিন্তিত হবার কোনই কারণ নেই।

Comments

The Daily Star  | English

Pakistan says it has launched military offensive against India

Locked in a longstanding dispute over Kashmir, the two countries have engaged in daily clashes since Wednesday

2h ago