রাম-নবমী ইস্যুতে বিজেপি-তৃণমূল শক্তি দেখাতে মরিয়া

পশ্চিমবঙ্গে রাম-নবমীর উৎসবকে কেন্দ্র করে দুটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে তুমুল উত্তেজনা বিরাজ করছে। রামের জন্মতিথি অনুসরণ করে গত ২৫ মার্চ গোটা ভারতে রাম-নবমী উৎসব পালন করা হয়। যেহেতু রামের সঙ্গে তার তীর-ধনুক এবং রামভক্ত হনুমানের গদা থাকে- তাই এদিন বিজেপি তাদের শোভা যাত্রায় সেসব অস্ত্র বহন করে।
Ram Nabami procession in West Bengal
গত ২৫ মার্চ রাম-নবমীর উৎসবকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন তৃণমূল ও বিরোধী বিজেপির মধ্যে তুমুল উত্তেজনা বিরাজ করছে। ছবি: স্টার

পশ্চিমবঙ্গে রাম-নবমীর উৎসবকে কেন্দ্র করে দুটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে তুমুল উত্তেজনা বিরাজ করছে। রামের জন্মতিথি অনুসরণ করে গত ২৫ মার্চ গোটা ভারতে রাম-নবমী উৎসব পালন করা হয়। যেহেতু রামের সঙ্গে তার তীর-ধনুক এবং রামভক্ত হনুমানের গদা থাকে- তাই এদিন বিজেপি তাদের শোভা যাত্রায় সেসব অস্ত্র বহন করে।

ভারতের অন্য রাজ্যগুলোতে এই ধর্মীয় উৎসব বরাবরের মতো গুরুত্বের সঙ্গে পালিত হলেও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে এই উৎসবের তেমন সাড়ম্বর-ভাব চোখে পড়েনি রাজ্যবাসীর। কিন্তু, গত বছর থেকেই বিজেপি এই উৎসবকে সামনে রেখে অস্ত্র হাতে মিছিল করে রাজ্যজুড়ে তুমুল আলোচনা তৈরি করে। আর এ বছর বিষয়টি পুরোপুরি জাতীয় রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত হয়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে মূলত আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে সংখ্যাগুরু ভোট-ব্যাংক দখল করতে রাম-নবমীর মতো একটি ধর্মীয় উৎসবকে রাজনীতি-করণ করছে। ধর্মকে এভাবে রাস্তায় নামানোয় আগামীতে দুটি রাজনৈতিক দলেরই ক্ষতি হবে বলেও মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।

এদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এবারের রাম-নবমীর মিছিলে কোনও ধরণের অস্ত্র থাকলে তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা করার নির্দেশ দেন এবং সে কারণেই অস্ত্র হাতে মিছিল করায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও নারী নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা হয়।

তবে রাজ্যের বেশ কিছু জেলায় রাম-নবমী ইস্যুতে এখনও উত্তেজনা চলছে। পূর্ব বর্ধমানের রাণীগঞ্জে প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে। সেখানে দুদিন আগেই মিছিলকারীদের বোমায় একজন পুলিশ কর্মকর্তার ডান হাত উড়ে যায়। রাজ্য জুড়ে সহিংসতায় এখন পর্যন্ত তিনজন মারা যাওয়ার খবর নিশ্চিত করছে পুলিশ প্রশাসন।

রাজনৈতিক চাপ বাড়াতে বিজেপি তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিভাজনের রাজনীতি করার অভিযোগই শুধু তুলছে না বরং আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতিতে পুলিশ প্রশাসনের ব্যর্থতার অভিযোগও তুলছে দলটি। এ জন্য তারা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির পদত্যাগের দাবি করেছে।

আজ (২৮ মার্চ) বিকালে দিল্লিতে বিজেপির শীর্ষ নেতা মুকুল রায় বলেন, পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য সরকারের মদতেই সন্ত্রাস চলছে। রাজ্যের কাটোয়া, বর্ধমান, পুরুলিয়া, ভাটপাড়া, রাণীগঞ্জ ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। পশ্চিমবঙ্গে শান্তি রক্ষা না করে মমতা ব্যানার্জি তৃতীয় ফ্রন্ট গড়তে দিল্লি রয়েছেন। এই অবস্থা চলতে পারে না।

মুকুল রায়ের ভাষায়, রাজ্যজুড়ে দুটি সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভাজন তৈরি করা হচ্ছে। পুলিশ প্রশাসন এখানে ব্যর্থ।

তবে তৃণমূল নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিজেপির বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ভাঙার দায় চাপিয়েছেন। আজ বিকালে কলকাতায় স্থানীয় সাংবাদিকদের পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, রাজ্য প্রশাসন সঠিকভাবে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় চেষ্টা করছে। তবুও মানুষের সহযোগিতা প্রয়োজন। রাজ্যে বিজেপি সন্ত্রাস তৈরি করা চেষ্টা করছে। কিন্তু, মমতা ব্যানার্জির প্রশাসন তা কোনও দিন হতে দেবে না।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

5h ago