মোর্শেদাকে বাড়ি ফেরানোর উদ্যোগ নিলো কলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবাস

মোর্শেদা খাতুনের দেশে ফেরার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে। শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে মোর্শেদার দেশে ফেরার আবেদন কলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবাসে দেওয়া হয়। উপদূতাবাসের হেড অব চেন্সারি বি এম জামাল হোসেন আবেদনপত্র হাতে পাওয়ার কথা জানিয়েছেন।
মানসিক ভারসাম্যহীন মোর্শেদা খাতুন
মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় উদ্ধারের পর পশ্চিমবঙ্গে চিকিৎসা চলছিল বাংলাদেশের মোর্শেদা খাতুনের। ছবি: স্টার

মোর্শেদা খাতুনের দেশে ফেরার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে। শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে মোর্শেদার দেশে ফেরার আবেদন কলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবাসে দেওয়া হয়। উপদূতাবাসের হেড অব চেন্সারি বি এম জামাল হোসেন আবেদনপত্র হাতে পাওয়ার কথা জানিয়েছেন।

দ্য ডেইলি স্টারকে বি এম জামাল বলেন, এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে বহরমপুর মানসিক হাসপাতালে মোর্শেদাকে দেখতে যাওয়ার ইচ্ছা আছে।

বাংলাদেশের জামালপুর থেকে হারিয়ে যাওয়া মানসিক ভারসাম্যহীন মোর্শেদা খাতুনকে ২০১৩ সালে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানে উদ্ধার করা হয়েছিল। এর পর থেকেই তার মানসিক চিকিৎসা চলছিল।

অঞ্জলির প্রোগ্রাম ম্যানেজার অদিতি বাসুও দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, শুক্রবার বাংলাদেশ উপদূতাবাসে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সঙ্গে ইতিবাচক বৈঠক করি। মোর্শেদার ঘটনা জেনে ওই কর্মকর্তা মানবিক কারণে দ্রুততার সঙ্গে বাংলাদেশে “ট্রাভেল পারমিট” দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

অদিতি বসু আরও জানান, উপদূতাবাসের আবেদনে “দ্য ডেইলি স্টারের উদ্যোগে মোর্শেদার বাড়ি খুঁজে পাওয়া গিয়েছে” বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: নতুন বছরে দেশে ফিরতে চান জামালপুরের মোর্শেদা খাতুন

প্রায় দশ বছর আগের ঘটনা। বাংলাদেশের জামালপুর জেলার মেলানদাহ উপজেলার পশ্চিম ব্রাহ্মণপাড়ার বাসিন্দা নমাজ উদ্দিন নন্দা মিয়ার মেয়ে মোর্শেদা খাতুন নিখোঁজ হয়ে যান। একই জেলার গোজামানিকা গ্রামের বাসিন্দা হাবিবুর শেখের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল মোর্শেদার। সংসার সুখের ছিল না তার। এর পরও স্বামীর ঘরে দুই মেয়ে এবং এক ছেলে হয় তার। সাংসারিক অশান্তি; অত্যাচার সহ্য করেও সংসারে থাকতে চাইলেও স্বামী কোনো এক রেল স্টেশনের তাকে ফেলে রেখেই চলে গিয়েছিল। এরপর আর কিছু মনে করতে পারেনি মোর্শেদা খাতুন।

মোর্শেদার বয়স এখন প্রায় ৪০ বছর। ২০১৩ সালে বর্ধমান শহর এলাকায় মোর্শেদা খাতুনকে ঘোরাঘুরি করতে দেখে স্থানীয় পুলিশ উদ্ধার করে। কিন্তু পুলিশ টের পায় সে মানসিক রোগী। তারপর চিকিৎসার জন্য পুলিশ তাকে পাঠিয়ে দেয় বহরমপুর মানসিক হাসপাতালে। পরবর্তীতে পশ্চিমবঙ্গের একটি বেসরকারি সেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘অঞ্জলি’ তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়।

প্রায় পাঁচ-বছরের চিকিৎসায় হারানো স্মৃতি অনেকটা ফিরে পেয়েছেন মোর্শেদা বেগম। ডাক্তারি চিকিৎসা ছাড়াও মোর্শেদাকে সেখানে দেওয়া হচ্ছিল মিউজিক থেরাপি এবং যোগ-এর মতো ভিন্নমাধ্যমের চিকিৎসা। 

সেচ্ছাসেবী সংস্থার হয়ে মোর্শেদাকে “মিউজিক থেরাপি” দেওয়ার কাজটি করেছেন স্বাতীলেখা ধরগুপ্ত । সেই বিশেষজ্ঞ স্বাতীলেখা ধরগুপ্ত মোর্শেদার কাছ থেকে বাংলাদেশের তার গ্রামের বাড়ির ঠিকানা সংগ্রহ করেন এবং নিজ উদ্যোগে তার এক আত্মীয়ের সাহায্যে মোর্শেদার বাবা-মা কে খুঁজে পান। এই কাজে জামালপুরের  দ্য ডেইলি স্টারের স্থানীয় সাংবাদিক তাকে সাহায্য করেন। তার মাধ্যমেই মোর্শেদা তার বাবা-মায়ের সঙ্গে টেলিফোনে কয়েকবার কথাও বলার সুযোগ পান।

মুর্শিদাবাদের বহরমপুর মানসিক হাসপাতালে রয়েছেন। নাগরিকত্বের প্রমাণের অভাবে আজও ফিরতে পারছেন না নিজের দেশে।

বহরমপুর মানসিক হাসপাতালের সুপার প্রশান্ত চৌধুরী জানিয়েছেন, মোর্শেদা এখন অনেকটাই সুস্থ। প্রশাসন ইচ্ছা করলে তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে পারেন।

Comments

The Daily Star  | English

The Daily Star-IPDC unsung women nation builders award-2023: Hats off to grassroots women trailblazers

Five grassroots women were honoured at the seventh edition of the Unsung Women Nation Builders Award-2023 yesterday evening for their resilience and dedication that empowered themselves and brought about meaningful changes in society.

1h ago