‘জমজমাট লিগে’ মানসিক চাপ জেতার তৃপ্তি মাশরাফির

মাশরাফি বিন মর্তুজার মতে এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ ছিল ভীষণ জমজমাট। ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটের চেনা চাপের সঙ্গে চ্যালেঞ্জ ছিল কাপ জেতার। ভালোয় ভালোয় সব করতে পেরে তৃপ্ত আবাহনীর শিরোপা জয়ের বড় নায়ক।
Mashrafee and Khaled Mahmud
শিরোপা জেতার পর আবাহনীর কোচ খালেদ মাহমুদের সঙ্গে মাশরাফি মর্তুজা, ছবি: ফিরোজ আহমেদ

মাশরাফি বিন মর্তুজার মতে এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ ছিল ভীষণ জমজমাট। ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটের চেনা চাপের সঙ্গে চ্যালেঞ্জ ছিল কাপ জেতার। ভালোয়  ভালোয় সব করতে পেরে তৃপ্ত আবাহনীর শিরোপা জয়ের বড় নায়ক।

শেষ ম্যাচে আবাহনীর সমীকরণ ছিল সহজ। জিতলেই চ্যাম্পিয়ন। তবে কোন কারণে হেরে গেলে তাকিয়ে থাকতে হতো অন্য ম্যাচের ফলের দিকে। শিরোপা জিততে শেষ দিনে এমন সমীকরণে দাপুটে ক্রিকেট খেলার মতি নিয়েই নেমেছিলেন তারা,

‘কালকে আমরা এমন পরিস্থিতি নিয়ে হোমওয়ার্ক করেছি। এ ধরনের ম্যাচে খেলা থেকে মানসিক চাপটা বেশি থাকে। এটা খুব কাজে লেগেছে। বিশেষ করে ব্যাটিংয়ে যদি দেখেন বিজয় (এনামুল হক) আক্রমণাত্মক ছিল।  একজনকে সামনে থেকে আক্রমণাত্মক খেলতেই হয়। যেটা আজকে বিজয় করেছে। এরপর শান্ত (নাজমুল হোসেন) এবং নাসির দারুণ ইনিংস খেলেছে। কৃতিত্ব মূলত ব্যাটসম্যানদের।’

এবার ১৬ ম্যাচের সবগুলো খেলেছেন মাশরাফি । ৩৯ উইকেট নিয়ে তিনিই সর্বোচ্চ উইকেটশিকা্রী। লিস্ট-এ মর্যাদা পাওয়ার পর প্রিমিয়ার লিগে এক মৌসুমে সবচেয়ে বেশি উইকেটও তার। শুরু থেকে যেভাবে যা চেয়েছিলেন সব খাপে খাপে মিলেছে।  নিজের পারফরম্যান্স নিয়েও সন্তুষ্টি বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়কের কণ্ঠে,

‘আমি যেভাবে চাচ্ছিলাম এবার সেভাবেই সব কিছু করতে পেরেছি। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল আমি যেখানে ছিলাম, সেটা ধরে রাখা। ফিটনেসে যেন ঘাটতি না হয়,সেইদিকে মনোযোগী হওয়া। এইসব জায়গায় আমি কাজ করতে চেয়েছি, কখনোই চিন্তা করিনি উইকেট নিতে হবে।’

৩৫ বছর বয়সেও তরুণ সব বোলারদের ছাপিয়ে মাশরাফিই দেশ সেরা। লিগের এই পারফম্যান্সের পেছনে গোপন কোন রহস্য নেই। কেবল মৌলিক জায়গাতেই একাগ্র থেকে পেয়েছেন ফল, ‘গোপন কিছুই না। পুরো ফোকাস রেখেছিলাম। কারণ আমি জানি আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছি না। এই কারণে পুরো লিগেই আমার ফোকাস ছিল। এর বাইরে ডিসিপ্লিন ছিলাম। নিয়মিত জিম করেছি, যতোটুকু অনুশীলন দরকার করেছি। খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারগুলোও মেনে চলেছি।  উইকেটের যায়গায় আমি ভাগ্যবান বলতে হবে। কারণ উইকেট নিয়ে আমি ভাবিনি।’

এনামুল হক বিজয়, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাইফ হাসান, মোসাদ্দেক হোসেন, নাসির হোসেন। আবাহনীর ব্যাটিং লাইনআপে এবার ছিল ঘরোয়া ক্রিকেটের নিয়মিত পারফর্মাররা। টি-টোয়েন্টি দলে না থাকায় আবাহনী সব তারকাকেই পুরো লিগে পেয়েছে। সাতশোর বেশি রান করেছেন শান্ত আর বিজয়। ব্যাটসম্যানরা প্রায় চারশর সংগ্রহ এনে দিয়েছেন দলকে। মাশরাফি তবু এই ব্যাটিং লাইনআপ নিয়ে পা হড়কানোর ম্যাচগুলোর কথাও ভুলতে চাইলেন না, 

‘ব্যাটিংয়ের কারণে যতটা এগিয়েছ, আবার পিছিয়েছি। আমাদের ব্যাটিং লাইনআপ নিয়ে আমরা যে দুটি ম্যাচ হেরেছি, সেটা ছিল হতাশার। ২৪৫ ও ২৪১ আমরা চেজ করতে পারেনি।  এই ব্যাটিং লাইনআপ নিয়ে আমার মনে হয় ম্যাচে আমাদের আরও ভালো করা উচিত ছিল।’

খাতায় কলমে বাকি দলগুলো থেকে ঢের এগিয়ে ছিল আবাহনী। এমন ভারসাম্যপূর্ণ দল নিয়েও গড়বড় করার ইতিহাস আছে। সেটা ভেবেই শঙ্কিত ছিলেন। শেষে এসে ট্রফি উঁচিয়ে ধরতে পারায় এখন আছেন ফুরফুরে,

‘আবাহনী দলটা সত্যিকার হতেই অসাধারণ। এই দল নিয়ে চ্যাম্পিয়ন না হওয়ার কোন কারণই ছিল না।  এখন ভালো দল নিয়েও চ্যাম্পিয়ন হওয়া যায় না। অনেক সময় ছোট দলগুলোও ভালো ক্রিকেট খেলে। এই অবস্থায় বড় দলগুলোকে সতর্ক থাকতে হয়। এটা নিয়ে আমাদের একটা ভয় ছিল। সবমিলিয়ে শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন জিততে পেরেছি, এটাই বড় কথা।’

Comments

The Daily Star  | English
Chief Adviser Muhammad Yunus

Chief Adviser Yunus's UNGA trip a critical turning point

Now is the best chance for Bangladesh to strengthen international cooperation.

14h ago