ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে 'অবজেকশন' আছে মোসাদ্দেকের
চোখের ইনফেকশনে পড়ে দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে ছিলেন মোসাদ্দেক হোসেন। ফেরার পর ছন্দ পেতে লাগছিল সময়। ওই সময় পর্যাপ্ত না খেলেও বাদ পড়েছেন কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে। এটা নিয়ে তার অনুযোগ না থাকলেও ঘরোয়া ক্রিকেটেও ব্যাটিং অর্ডারের তাকে নামানো হচ্ছে নিচে। এটা কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেন না মোসাদ্দেক, এই নিয়ে রীতিমতো অভিযোগের সুরই তার কন্ঠে।
চোখের সমস্যা কাটিয়ে উঠার পর পরই নামতে হয়েছিল বিপিএলে। সেখানে বেশিরভাগ ম্যাচে তাকে খেলতে হয়েছে অনেক নিচে। পাঁচ বিদেশি খেলানোর নিয়মের কারণে সেটার হয়ত যুক্তি ছিল। কিন্তু এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে আবাহনীর হয়েও একই অবস্থা। মোসাদ্দেক বেশিরভাগ ম্যাচ খেলেছেন সাতে, এমনকি তাকে ব্যাট করতে হয়েছে আটেও।
সবচেয়ে বিস্ময়করভাবে প্রথম শ্রেণির টুর্নামেন্ট বিসিএলেও হয়েছে একই দশা। প্রথম শ্রেণিতে প্রায় ৭০ ছুঁইছুঁই গড়ে রান করা এই ব্যাটসম্যান পঞ্চম রাউন্ডে দক্ষিণাঞ্চলের হয়ে প্রথম ইনিংসে নেমেছিলেন সাতে, দ্বিতীয় ইনিংসে আট নম্বরে নেমে করেছেন সেঞ্চুরি।
জাতীয় দলে মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহদের মতো ব্যাটম্যানরা থাকায় ছয়-সাতে ব্যাট করা স্বাভাবিক। কিন্তু ঘরোয়া ক্রিকেটে বরাবর চার-পাঁচে ব্যাট করা মোসাদ্দেক এবার এত নিচে ব্যাটিং পেয়ে রীতিমতো অভিযোগই জানিয়েছেন, ‘এই জায়গাতে আমার অবজেকশন আছে। আমি জাতীয় দলে যে জায়গায় খেলি ওইটা হয়ত (ঠিকাছে)। কারণ ওই জায়গায় (উপরে) যারা খেলে তাদের নিয়ে বলার কিছু নাই। কিন্তু এরমানে এই না যে ঘরোয়ারে আমি সাত নম্বর বা আট নম্বরে খেলব।’
চুক্তি থেকে বাদ পড়লেও জাতীয় দলের নাগালেই আছেন মোসাদ্দেক। ঘরোয়া দলগুলোর এমন মনোভাব নিয়ে নির্বাচক ও টিম ম্যানেজমেন্টকেও অবগত করলেন তিনি, ‘আমি আশা করব টিম ম্যানেজমেন্ট এটা দেখব। কারণ আমি সরাসরি হয়ত আমি কাউকে কিছু বলতে পারব না। আমি আশা করব নির্বাচকরা খেয়াল করবে। ’
জাতীয় দলে ছয়-সাতে নেমেও কার্যকর ইনিংস আছে তার। ঘরোয়া ক্রিকেটে নিচে ব্যাট পেলেও তেমনটি করতে পারতেন কিনা এই প্রশ্নে তার ব্যাখ্যা, ‘এটা হয়ত দুরকম আসবে। আগে যে বছর আবাহনী চ্যাম্পিয়ন হলো আমি ছয় সাতে অনেক অবদান রাখছি এবার দল জিতলেও আমি পারিনি। কিন্তু বেশ কয়েকটা ম্যাচ দেখলে দেখবেন আমি মাত্র চার-পাঁচ ওভার ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছি। আমরা তো ক্রিস গেইলও না, আন্দ্রে রাসেলও না যে চাইলেই নেমে ছয় মারব। আমাদের বডি ওইভাবে সাপোর্টও করে না। পরিস্থিতি এমন ছিল যে নেমেই মারতে হত। সেটা একদিন হয়েছে, একদিন হয়নি। আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গেই শরীর ওইভাবে বিল্ড করার ব্যাপার নাই। ’
গত বুধবার নতুন কেন্দ্রীয় চুক্তি ঘোষণা করে বিসিবি। তাতে মোসাদ্দেক সহ বাদ পড়েন ছয়জন। চুক্তি থেকে বাদ পড়ার হতাশা দূর করতে পারফর্ম্যান্সকে বেছে নেওয়ার লক্ষ্য এই তরুণের, ‘চুক্তি থেকে বাদ পড়াটা যেমন হতাশাজনক কিন্তু আমি মনে করি না যে চুক্তিটাই সব কিছু। পারফরম্যান্স হয়ত ভালো ছিল না তাই বাদ পড়ছি আমার চিন্তা হচ্ছে ভালো পারফর্ম করে আবার জায়গা ফিরে পাওয়া।’
যদিও পারফরম্যান্স কারণে চুক্তি থেকে বাদ পড়া মোসাদ্দেকের ক্ষেত্রে খুব একটা খাটে না। গত এক-দেড় বছরে যেসব ম্যাচে নেমেছেন তাতে পারফরম্যান্স খুব খারাপ ছিল না। তবে চোটের কারণেই বেশিরভাগ সময় থাকতে হয়েছে বাইরে। তবু এসব নিয়ে কোন অনুযোগ নেই তার মনে, ‘ইনজুরির কারণে আমি যদি ম্যাচই না খেলি আমি কীভাবে চিন্তা করব যে চুক্তিতে থাকি।’
Comments