দেশভাগের স্মৃতি উসকে দেবে ‘মাটি’
দেশভাগের কষ্ট, আবেগ-যন্ত্রণা স্মৃতি নির্ভর গল্পের ওপর নির্মিত হয়েছে ‘মাটি’ নামের একটি চলচ্চিত্র। লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা, নির্দেশনায় এই ছবিতে অভিনয় করেছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী পাওলি দাম ও ইংলিশভিংলিশ খ্যাত অভিনেতা আদিল হুসেন। অভিনয় করেছেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ও। তাদের প্রত্যেকের কোনো না কোনোভাবে নাড়ির সূত্র রয়েছে পূর্ববঙ্গে অর্থাৎ আজকের বাংলাদেশে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কলকাতার নন্দনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ছবির গল্পকার, নির্দেশক নির্মাতা লীনা গঙ্গোপাধ্যায়-সহ তার গোটা ‘টিম মাটি’। সংবাদ সম্মেলনে সবার বক্তব্যে মধ্যদিয়ে উঠে আসে চলচ্চিত্রটি নির্মাণের কারণ, গল্প এবং এর সঙ্গে দুই বাংলার বর্তমান প্রজন্ম কিংবা এর আগের প্রজন্মের সম্পর্কের কথা।
নির্মাতা লীনা গঙ্গোপাধ্যায় জানান, বাংলাদেশের মানিকগঞ্জ জেলায় এই চলচ্চিত্রটির সিংহভাগ চিত্রায়িত হয়েছে। বাকি অংশ হয়েছে কলকাতায়। তিনি আরও বলেন, এটা স্বীকার করতে আমার কোনও দ্বিধা নেই যে, এই ছবির মধ্যে আমার জীবনেরও অনেক ঘটনা আছে। আছে আমার পরিবারেরও ঘটনা। এটাতো একশো ভাগ সত্যি আমার শিকড়টা বাংলাদেশেই।
তিনি বলেন, ‘আমার তিন প্রজন্মের আগে ফেলা আসা সেই বাড়িতেই আমি মাটি ছবির শুটিং করেছি। এটা আমার জন্য সবচেয়ে বড় পাওয়া।’
মাটি'র প্রধান চরিত্রে অভিনয় করছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী পাওলি দাম। সংবাদ সম্মেলনে তিনিও একইভাবে আবেগে সিক্ত হন। নিজের শৈশব স্মৃতি উসকে দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার আজও শিকড়ের টান রয়েছে। আমার বাবার বাড়ি ফরিদপুর আর মায়ের বাড়ি যশোরে। বলতে পারেন ‘মাটি’ নামে পূর্ণদৈর্ঘ্য একটি চলচ্চিত্রে মুখ্য চরিত্রে অভিনয়ে রাজি হওয়ার এটাই একমাত্র কারণ।’
পাওলির ভাষায়, ‘দাদুর কাছে এতবার আমাদের বাংলাদেশের বাড়ির কথা শুনেছি। যখন ‘মাটি’র স্ক্রিপ্ট পড়ছিলাম, তখন সেই গল্পের মধ্যে হারিয়ে যাচ্ছিলাম। চোখে ভাসছিল, দাদুর বলা সেই গল্পগুলো। তাই ‘মাটি’ ছবি করতেও রাজি হয়েছিলাম।’
অভিনেতা আদিল হোসেন ছবির গল্পের কিছুটা ভাগ করে নেন সবার সঙ্গে। জানান। একজন মানুষ ৪০ বছর পর নিজের গ্রামের বাড়ি যান এবং সেখানে গিয়েই সব ঘটনাগুলো ঘটতে থাকে।
কলকাতার নন্দন প্রেক্ষাগৃহতে আয়োজিত এদিনের অনুষ্ঠানে ছবির বর্ষীয়ান সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়সহ অন্যান্য কলাকুশলীরাও উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন কলকাতার বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের প্রথম সচিব মোফাকখারুল ইকবাল।
সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় বলেন, আমি ছবির মহরত থেকে এই পর্যন্ত প্রতিটি পর্বের সঙ্গে যুক্ত। মনে হচ্ছে কবে ‘মাটি’ মুক্তি পাবে। কারণ এর সঙ্গে আমারও শিকড়ের সম্পর্ক জড়িয়ে আছে।
মোফাকখারুল ইকবাল বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিশেষ করে দুই বাংলার মধ্যে যে হৃদ্যতা রয়েছে সেটা সাংস্কৃতিক বন্ধনে আরও অটুট হবে সেই প্রত্যাশা নিয়েই এই ছবি তৈরি হয়েছে বলে আমার বিশ্বাস। লীনা গঙ্গোপাধ্যায় এমন একজন মানুষ, যাকে নিজের বড়বোন বললেই ভালো হয়।
খুব শিগগিরই ‘মাটি’ মুক্তি পাবে বলে জানালেন ছবির প্রযোজক সংস্থা মোমেন্স মুভিজ।
Comments