মানসিকতায় ‘বিশাল পরিবর্তন’ ক্রিকেটারদের

ট্রেনারের চাপাচাপিতে না, ক্রিকেটাররা এখন ফিটনেস ঠিক রাখেন নিজেদের তাগিদে। ক্রিকেটারদের মানসিকতার এই ইতিবাচক বড় পরিবর্তন দেখে ভীষণ অভিভূত জাতীয় দলের ট্রেনার মারিও ভিল্লাভারায়ন।
Mushfiqur Rahim
রোববার মিরপুরে ফিটনেস পরীক্ষা দেন ক্রিকেটাররা। ছবি: বিসিবি

ট্রেনারের চাপাচাপিতে না, ক্রিকেটাররা এখন ফিটনেস ঠিক রাখেন নিজেদের তাগিদে। ক্রিকেটারদের মানসিকতার এই ইতিবাচক বড় পরিবর্তন দেখে ভীষণ অভিভূত জাতীয় দলের ট্রেনার মারিও ভিল্লাভারায়ন।

বেশ কয়েকদিনের বিশ্রাম শেষে দুই সিরিজ সামনে রেখে রোববার থেকে শুরু হয়েছে জাতীয় দলের ক্যাম্প। প্রথমদিকে ছিল ফিটনেস পরীক্ষা। তাতে মুগ্ধ ভিল্লাভারায়ন, ‘বিশাল পরিবর্তন হয়েছে, অনেক বড় পরিবর্তন। আজকে সকালেই আমি ছেলেদের বলছিলাম, চার বছর হয়ে গেল। ২০১৪ সালের মে মাসে এসেছিলাম। দারুণ চারটি বছর কাটল। অনেক বদল এসেছে। এবারই যেমন কলম্বোতে ছুটি কাটানোর সময় আমি জানতে পারলাম, তামিম নিজের তাগিদেই ফিটনেস ট্রেনিং করছে। আরও অনেকেই নিজে থেকে করছে। এসব আমাকে দারুণ তৃপ্তি দিয়েছে।’

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ধারাবাহিকতার অভাবের পেছনে ক্রিকেটারদের ফিটনেসের ঘাটতিকে অন্যতম কারণ মনে করা হত। দায়িত্ব নেওয়ার পর ভিল্লাভারায়ন আশা করেছিলেন ক্রিকেটাররা এক সময় নিজেই দায়িত্ব নিয়ে উন্নতি করবেন নিজেদের। চার বছর পর সেটা দেখে তৃপ্ত এই শ্রীলঙ্কান, ‘আমি যখন এখানে এসেছিলাম, ঠিক এমনটিই চেয়েছিলাম। চেয়েছিলাম যে মূল দায়িত্বটি ক্রিকেটারদেরই নিতে হবে এবং নিজের তাগিদে ফিটনেস ট্রেনিংয়ের অভ্যাস গড়তে হবে। সেই কারণেই বলছি, ছেলেদের মানসিকতায় অনেক উন্নতি হয়েছে।’

এমনিতে ফিটনেস ট্রেনিং বেশ কষ্টদায়ক ও ধৈর্যের কাজ। স্কিল ট্রেনিংয়ের বাইরে ফিটনেস ট্রেনিংয়ের গুরুত্ব বোঝাতে অবশ্য বেশ কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে তাকে, ‘শুরুতে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে আমাকে। ওদেরকে বোঝাতে হয়েছে কেন এটা ভীষণ জরুরি। সেই পরিশ্রমের ফল মিলতে শুরু করেছে। সবাই এখন অনেক সচেতন। আমি তো আজীবন এখানে থাকব না। তবে আশা করি, আমি যাওয়ার পরও ওরা এমনই থাকবে।’

নিদহাস ট্রফির পর ছোটখাটো চোটের সমস্যায় আছে দল। বন্ধুর বাড়িতে ফুটবল খেলতে গিয়ে লিগামেন্ট ছিঁড়ে ছয় মাসের বাইরে নাসির হোসেন। বিসিএলের ম্যাচে অনুশীলনে ফুটবল খেলতে গিয়ে গোড়ালিতে চোট পেয়ে তিন সপ্তাহ বিশ্রামে ছিলেন মুশফিক। ক্রিকেটারদের শখের ফুটবল খেলতে গিয়ে পাওয়া চোট ভাবিয়েছিল বিসিবিকেও তবে ফুটবল খেলায় কোন সমস্যা দেখছেন না জাতীয় দলের ট্রেনার, ‘আমার চার বছরের মেয়াদে এবারই প্রথম মনে হয় ফুটবলে ইনজুরি হলো। আর হয়নি। গত দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে মুস্তাফিজ অ্যাঙ্কেলে চোট পেল, তবে সেটা সরাসরি ফুটবল ছিল না। হাঁটার সময় মচকে যায়, খেলায় নয়।’

তবে জাতীয় দলের বাইরে ফুটবল খেলা নিয়ে ক্রিকেটারদের সতর্ক করতেও ভুলেননি এই ট্রেনার, ‘যখন আমি থাকি, তখন আমি একটি গাইডলাইন ঠিক করে দেই যে এভাবে খেলতে হবে। যেন বিশৃঙ্খলভাবে না খেলে। এজন্যই জাতীয় দলে খেলার সময় ফুটবলে বড় কোনো ইনজুরি গত চার বছরে হয়নি। কিন্তু ঘরোয়া ক্রিকেটে বা অন্য জায়গায় তো আমি দেখভাল করতে পারব না। অবশ্যই এখানে ঝুঁকি আছে। দায়িত্বটি ক্রিকেটারদের নিজেদেরই নিতে হবে। নিজের ভালো বুঝতে হবে।’

Comments