কবে খুলবে শান্তিনিকেতনে বাংলাদেশ ভবন?

দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর হাতে উদ্বোধন হওয়া শান্তিনিকেতনের ‘বাংলাদেশ ভবন’ সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য কবে খুলে দেওয়া হচ্ছে সেটি এখনও অনিশ্চিত। শান্তিনিকেতন তথা বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন আজ (৩১ মে) পর্যন্ত তারা ‘বাংলাদেশ ভবন’-এর আনুষ্ঠানিক ভার গ্রহণ করেননি।
Bangladesh Bhaban
শান্তিনিকেতনের ‘বাংলাদেশ ভবন’। ছবি: স্টার

দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর হাতে উদ্বোধন হওয়া শান্তিনিকেতনের ‘বাংলাদেশ ভবন’ সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য কবে খুলে দেওয়া হচ্ছে সেটি এখনও অনিশ্চিত। শান্তিনিকেতন তথা বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন আজ (৩১ মে) পর্যন্ত তারা ‘বাংলাদেশ ভবন’-এর আনুষ্ঠানিক ভার গ্রহণ করেননি।

ওদিকে কলকাতার বাংলাদেশ উপহাইকমিশন বলছে, কবে সাধারণ দর্শনার্থী কিংবা বাংলাদেশি পড়ুয়াদের জন্য ওই ভবন খুলে দেওয়া হবে সেটি নির্ধারণ করবে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।

আজ টেলিফোনে এই বিষয়ে কথা হলে বিশ্বভারতী উপাচার্য সবুজকলি সেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “কবে খুলে দিতে পারবো সেটি তো হাতে পাওয়ার পর বুঝতে পারবো আমরা। কেননা, এখনও আমরা জিনিসপত্রের তালিকাসহ আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বাংলাদেশ ভবন’-এর দায়িত্ব বুঝে পাইনি।”

একই প্রশ্ন করা হলে কলকাতার বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের হেড অফ চ্যান্সারি বিএম জামাল দৈনিকটিকে জানান, “‘বাংলাদেশ ভবন’ এখন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ। সুতরাং ভবনটি কবে খুলে দেওয়া হবে সেটি তারাই চূড়ান্ত করবেন।”

Bangladesh Bhaban Museum
‘বাংলাদেশ ভবন’-এর জাদুঘর। ছবি: স্টার

তবে ওই কর্মকর্তা একটি ঝুলে থাকা বিষয় স্বীকার করে বলেন, “লাইব্রেরি ও জাদুঘরের তত্ববাধায়ক কোন পক্ষ নিয়োগ করবে সেটি এখনো ঠিক হয়নি। কারণ ওই দুটি শাখার দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকারের হাতে রাখার আগ্রহ রয়েছে।”

তবে এই বিষয়ে বিশ্বভারতীর উপাচার্য অবশ্য পরিষ্কার কিছু জানেন না বলে দ্য ডেইলি স্টারের কাছে মত প্রকাশ করেছেন।

গত ২৫ মে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যৌথভাবে শান্তিনিকেতনে ‘বাংলাদেশ ভবন’-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এর আগে প্রায় যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মাত্র ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ভবনটির অভ্যন্তরে ‘জাদুঘর’ ও ‘লাইব্রেরি’ সাজানো-গোছানোর কাজ শেষ করেন কলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবাসের মধ্যস্থতায় সংশ্লিষ্ট কয়েকজন বাংলাদেশি গবেষক ও প্রত্নতত্ত্ববিদ।

ওই কাজের তদারকি করতে দেখা গিয়েছে খোদ সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরকে। সে সময় ডেইলি স্টারকে মন্ত্রী জানিয়েছিলেন, “পুরো বাংলাদেশ ভবনের দায়িত্ব বিশ্বভারতীকে না দিয়ে আমরা জাদুঘর ও লাইব্রেরির দায়িত্ব নিজেদের হাতে রাখতে আগ্রহী।”

এদিকে সংস্কৃতিমন্ত্রীর আপত্তির কারণে বাংলাদেশ ভবনের প্রবেশদ্বারের সামনের লিফট সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে শিগগিরই।

Bangladesh Bhaban Library
‘বাংলাদেশ ভবন’-এর লাইব্রেরি। ছবি: স্টার

এ নিয়েও কথা বলেন কলকাতা উপহাইকমিশনের বিএম জামাল। তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, “ভবনের প্রধান প্রকৌশলী অঙ্কিত সান্যাল ভবনের সামনে ওই লিফট সরাতে রাজি হয়েছেন। খুব শিগগিরই ওই লিফট সরানোর কাজ শুরু হবে।” একইভাবে তিনি আরও জানান, বিশ্বভারতীতে অধ্যায়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ভবনের অভ্যন্তরে ঢাকার শহীদ মিনারের আদলে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ কাজও আগামী ২১শে ফেব্রুয়ারির আগেই শেষ হবে।

বাংলাদেশ সরকারের অর্থ এবং ভারত সরকারের জমি এই দুই সরকারের উদ্যোগেই শান্তিনিকেতনের প্রায় দুই বিঘা জমির ওপর ১৮ মাসে নির্মিত হয় ‘বাংলাদেশ ভবন’। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা যাতে এক ছাদের নিচে বসে বাংলাদেশ সম্পর্কে জানতে পারেন সেই লক্ষ্যেই এই ভবন নির্মিত হয়েছে। দুই দেশের রাষ্ট্র প্রধানদের হাত ছুঁয়ে উদ্বোধনের পর স্বাভাবিকভাবেই এখন প্রতীক্ষায় রয়েছেন বিশ্বভারতীর শিক্ষার্থীরা।

একই সঙ্গে শান্তিনিকেতনে বেড়াতে যাওয়া দেশ-বিদেশের পর্যটকরাও ‘বাংলাদেশ ভবন’ দেখতে গিয়ে ফিরে আসছেন বলেও জানা গিয়েছে।

Comments