এবার ঢাকায় শো করার প্রস্তাব ফেরালেন কবীর সুমন

ঢাকায় শো করার প্রস্তাব ফেরালেন দুই বাংলার জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী কবীর সুমন। গত ১ জুন দুপুরে ঢাকা থেকে ফোনে বাংলাদেশের একটি টেলিভিশন চ্যানেলের টকশো উপস্থাপক অঞ্জন রায় টেলিফোনে একটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন কবীর সুমনকে। সেই আমন্ত্রণই সবিনয়ে প্রত্যাখ্যান করেছেন ভারতীয় শিল্পী।
Kabir Sumon
দুই বাংলার জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী কবীর সুমন। ছবি: স্টার

ঢাকায় শো করার প্রস্তাব ফেরালেন দুই বাংলার জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী কবীর সুমন। গত ১ জুন দুপুরে ঢাকা থেকে ফোনে বাংলাদেশের একটি টেলিভিশন চ্যানেলের টকশো উপস্থাপক অঞ্জন রায় টেলিফোনে একটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন কবীর সুমনকে। সেই আমন্ত্রণই সবিনয়ে প্রত্যাখ্যান করেছেন ভারতীয় শিল্পী।

গতকাল (২ জুন) সকালে টেলিফোনে কথা হলে দ্য ডেইলি স্টারকে নিজেই এই তথ্য জানান কবীর সুমন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ অনেক ভালো, তাঁদের হৃদয় আছে। সম্মান দিতে জানেন। কিন্তু কেন জানিনা নেতৃত্ব-স্থানীয়রা এমন হন? আমাদের ভারতের নেতৃত্বের মতোই...।”

সম্প্রতি, ঢাকার সময় টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে কবীর সুমন আর বাংলাদেশে যাবেন না বলে ঘোষণা করেন। এই অভিমানের স্বপক্ষে তিনি জানান, ১৯৯৬ ও ১৯৯৮ সালে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সংগ্রহশালার তহবিল সংগ্রহের জন্য দুটি কনসার্ট করে টাকা তুলে দেওয়ার পরও তাঁকে ভারতীয় বলে ঢাকায় অনুষ্ঠান করতে দেওয়া হয়নি। সেই কষ্টে তিনি বাংলাদেশে আর যেতে চাননি।

দ্য ডেইলি স্টার গতকাল কবীর সুমনের ওই অবস্থান নিয়ে যোগাযোগ করে। তখনও একইভাবে আগের অবস্থানে অনড় থাকার কথা বলেন সুমন।

বলেন, “দেখুন আমার বয়স হলেও বুঝতে পারছি আমার দেওয়া সাক্ষাৎকারটির ভুল প্রমাণ করতে কূটকৌশল চলছে। আমার ঢাকায় অনুষ্ঠানের নাম করে কেউ কেউ শিরোনাম করতে চাইছেন ‘ঢাকায় আসবেন কবীর সুমন’।

এই উদ্যোগকে ছেলেমানুষি বলেও তিরস্কার করেন জীবনমুখী এই গায়ক। তিনি এও বলেন, “আমি বুঝতে পারছি আমাকে ঢাকায় নিয়ে গিয়ে অনুষ্ঠান করানোর চেষ্টাটা চলবে। তবে আমি পরিষ্কার জানাচ্ছে আমি বাংলাদেশে যাচ্ছি না।”

এদিকে ফেসবুক মেসেঞ্জারে যোগাযোগ করা হলে উপস্থাপক-সাংবাদিক অঞ্জন রায় দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “আমি একান্ত ব্যক্তিগতভাবে তাঁকে সেই প্রস্তাব দিয়েছিলাম। আমি মনে করি তাঁকে সম্মান দিতে না পারলে আমাদের সবার কাছে এটি হবে মারাত্মক লজ্জার।”

কথা প্রসঙ্গে গতকালও একইভাবে কবীর সুমন বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে কুর্ণিশ করেন। বলেন, “বঙ্গবন্ধুকে আমার নেতা বলেই জানি। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সত্যিই কষ্ট হচ্ছে।”

“বাংলাদেশের মানুষের জন্য আমি এবং সাবিনা ইয়াসমিন অনেক কিছুই করেছি; চেষ্টাও করে যাচ্ছি, আজও সুযোগ হলে দূর থেকেই করবো। কারণ বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের সঙ্গে আমার বৈরিতা নেই,” যোগ করেন সুমন।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “অনেকেই হয়তো জানেন না যে ১৯৯৮ সালের বন্যার বছরও কলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবাসের অনুরোধে নিজের খরচে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে চ্যারিটি অনুষ্ঠান করেছিলাম আমি আর সাবিনা। সেটি শুধুই বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসার জন্য।”

পশ্চিমবঙ্গের অনেক মানুষের মতো কবীর সুমনের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনও নাড়ির সংযোগ নেই। তাঁর বাবা কিংবা মা কিংবা কোনও পূর্ব পুরুষের শিকড় নেই বাংলাদেশের মাটিতে। তবুও শাহবাগ ইস্যু থেকে রোহিঙ্গা সমস্যা- বাংলাদেশের সুখে-দুঃখে কলকাতায় বসেও তাঁর কণ্ঠে-কলমে উঠে এসেছে আবেগ-ভাবাবেগ। সেই কবীর সুমন এতো ক্ষোভ-আক্ষেপ থাকার পরও বললেন, “কবীর সুমন হয়ে উঠার পেছনে ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর সেই রক্ত-জাগানিয়া ভাষণের অবদান রয়েছে। সেই ভাষণ আমাকে একা লড়াই করার প্রেরণা দিয়েছে। বঙ্গবন্ধু বাঙালির নেতা, শুধু বাংলাদেশের নেতা নন।”

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

6h ago