‘বাজেট বাস্তব সম্মত নয়’

আগামী অর্থবছরের জন্যে প্রস্তাবিত বাজেটকে ‘বাস্তব সম্মত নয়’ বলে মন্তব্য করেছেন দেশের বিশিষ্ট অর্থনীতি বিশ্লেষকগণ। গতকাল (৭ জুন) অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের বাজেট পেশের পরপরই তাঁরা এমন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থবিষয়ক উপদেষ্টা মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, “এই বাজেট সম্পূর্ণ অবাস্তব।” তিনি জানান, প্রস্তাবিত বাজেট গত অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ২৫ শতাংশ বড়। অথচ এর আগের অর্থবছরগুলোর বাজেট ১৭-১৮ শতাংশ বর্ধিত ছিল।

“অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপত্রে কোনও গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়নি। তাই আপনি কীভাবে প্রত্যাশা করবেন যে সরকার এই বিশাল বাজেট বাস্তবায়নে সমর্থ হবে?”- প্রশ্ন আজিজুল ইসলামের।

বাজেটে ঘোষিত ৭.৮ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির যে লক্ষ্যমাত্রা ঘোষিত হয়েছে তা অর্জনের জন্যে যে পরিমাণ বিনিয়োগের প্রয়োজন সেই পরিবেশ নেই বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ এর নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, “বাজেটে কোন গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন নেই।” কর আদায়ের অবাস্তব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের কারণে বাজেট বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

তাঁর মতে, নতুন বাজেট বাস্তবায়নের জন্যে কর আদায় ৪০ শতাংশ বাড়াতে হবে। কিন্তু, এই পরিমাণের কর আদায়ের জন্যে কর আদায় ব্যবস্থায় কোনও সংস্কার নেই।

“এছাড়াও, শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান সৃষ্টির কোন ব্যবস্থার কথাও প্রস্তাবিত বাজেটে উল্লেখ করা হয়নি,” বলেন মনসুর।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) মতে, এই বিশাল মাপের বাজেট বাস্তবায়নের জন্যে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। কিন্তু, প্রস্তাবিত বাজেটে সেই দিক নির্দেশনা নেই। এছাড়াও, বাজেটটিতে কোনও কাঠামো এবং নীতিগত পরিবর্তন নেই।

সিপিডির বিশিষ্ট ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, “রপ্তানি এবং রেমিটেন্সের বর্তমান ধারা ব্যাহত হলে তা মুদ্রাস্ফীতি, সুদের হার এমনকি, মুদ্রার বিনিময় হারের ওপরও প্রভাব ফেলবে।”

তবে বাজেটে আমদানিকৃত চালের ওপর অর্থমন্ত্রীর ২৮ শতাংশ শুল্কের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে সংস্থাটি।

অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান জাইদ বখতের মতে, বাজেটের অর্থ যোগান এবং বাজেট বাস্তবায়ন সরকারের জন্যে চ্যালেঞ্জিং হবে। তবে তিনি সরকারি খাতের বিনিয়োগ বাড়ার প্রস্তাবকে ইতিবাচক মনে করেন।