বৃষ্টি, ভূমিধসে বিপর্যস্ত রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির

ব্যাপক বৃষ্টি ও ভূমিধসের কারণে কক্সবাজারের উখিয়া এবং টেকনাফ উপজেলায় স্থাপিত রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলো থেকে অন্তত ১০০ পরিবারকে গতকাল (১০ জুন) সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
Rohingya refugee camps
বিভিন্ন সাহায্য সংস্থার হিসাবে যেখানে ৪১ হাজার শরণার্থী ভূমিধসের চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন সেখানে মাত্র ১৪ হাজার শরণার্থীকে তুলনামূলক নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়েছে। ছবি: স্টার

ব্যাপক বৃষ্টি ও ভূমিধসের কারণে কক্সবাজারের উখিয়া এবং টেকনাফ উপজেলায় স্থাপিত রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলো থেকে অন্তত ১০০ পরিবারকে গতকাল (১০ জুন) সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

এতে পাহাড়ের ঢালে স্থাপিত ১০০ টির বেশি ছাপড়াঘর ভেঙ্গে গেছে। গত শনিবার থেকে এখন পর্যন্ত দুজন শরণার্থীর আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

ছোট জায়গায় গাদাগাদি করে থাকা রোহিঙ্গারা বর্ষা মৌসুমে বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বে এমন আশঙ্কা স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলো অনেক আগে থেকেই প্রকাশ করে আসছিল।

এক সাম্প্রতিক জরিপ শেষে অভিবাসনবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফর মাইগ্রেশন (আইওএম) জানায়, বর্ষা মৌসুম পুরোপুরিভাবে শুরু হলে অন্তত ১ লাখ ২০ হাজার শরণার্থী বন্যা ও ভূমিধসের ঝুঁকিতে থাকবে।

এছাড়াও, ইউএনএইচসিআর, আইওএম এবং এশিয়ান ডিজাস্টার প্রিপারেডনেস সেন্টার (এডিপিসি) গত ফেব্রুয়ারিতে যে যৌথ সমীক্ষা চালিয়েছিল তাতে বর্ষা মৌসুমে প্রায় দুই লাখ রোহিঙ্গার বন্যা ও ভূমিধসের ঝুঁকিতে থাকার কথা বলা হয়েছে।

মিয়ানমারে জাতিগত সহিংসতার শিকার হয়ে ২০১৭ সালের আগস্টের পর নতুন করে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। তারা কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় বাঁশ ও প্লাস্টিক শিটের দুর্বল অবকাঠামোর মধ্যে বসবাস করছেন। যা মুষলধারার বৃষ্টি ও ঝড় ঠেকাতে কোনভাবেই সক্ষম নয়।

বার্তা সংস্থা এএফপি’কে রোহিঙ্গা নেতারা বলেন যে, ইতোমধ্যে শরণার্থী শিবির এলাকায় তুমুল বৃষ্টিপাতের ফলে মাটির রাস্তাগুলো চলাফেরার অযোগ্য হয়ে উঠেছে। ফলে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণে সমস্যা হচ্ছে।

একজন রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ মহিবুল্লাহ বলেন, “বৃষ্টি মাত্র শুরু হতে যাচ্ছে। সামনে পুরো বর্ষাকাল রয়ে গেছে। কয়েকজন শরণার্থীকে স্থানান্তর করা গেলেও অধিকাংশ শরণার্থী ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করছেন।”

মহিবুল্লাহর মতোই একই আশঙ্কার কথা বলেছেন ইউএনএইচসিআর-এর মুখপাত্র ক্যারোলিন গ্লুক। দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, “আমাদের আশঙ্কা সামনের দিনগুলোতে ঝড়-বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়বে। এখনতো বৃষ্টি শুরু হচ্ছে মাত্র। এরইমধ্যে আমরা ভূমিধসের ঘটনা দেখতে পাচ্ছি। কোথাও কোথও বন্যাও হচ্ছে।”

এএফপি’কে তিনি বলেন, “ফুটবল মাঠের মতো জায়গাগুলো বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে। সেখানকার শরণার্থীদের ঘরগুলোতে পানি উঠেছে। ভূমিধসের কয়েকটি ঘটনাও ঘটেছে। আসলে পুরো পরিস্থিতিটা ভালো নয়।”

বিভিন্ন সাহায্য সংস্থার হিসাবে যেখানে ৪১ হাজার শরণার্থী ভূমিধসের চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন সেখানে মাত্র ১৪ হাজার শরণার্থীকে তুলনামূলক নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে মোট ২ লাখ শরণার্থী বন্যা ও ভূমিধসের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন বলে বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে জানা যায়।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক ডেইলি স্টারকে বলেন, “আমরা প্রস্তুত। আমাদের ইউএনওদের এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের এ বিষয়ে অনেক আগে থেকেই সতর্ক করে রাখা হয়েছে।”

ইতোমধ্যে পাঁচজন সদস্য নিয়ে একটি জরুরি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে এবং এ নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

9h ago