চাপে ভেঙে না পড়ায় খেলোয়াড়দের বাহবা জার্মান কোচের

বিশ্বকাপে টিকে থাকতে হলে জেতার বিকল্প ছিল না জার্মানির। এমনকি ম্যাচ ড্র হলেও ঝুলে থাকত ভাগ্য। অতিরিক্ত সময়ের একদম শেষ মুহূর্তে গিয়ে টনি ক্রুসের গোলে জিতেই মাঠ ছাড়ে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। চাপের মধ্যে খেলোয়াড়দের এমন দৃঢ় মনোবল প্রশংসা পাচ্ছে কোচ জোয়াকিম লোর।
ম্যাচ শেষে লো নিজের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেছেন, ‘আমি যে জিনিসটার প্রশংসা করবো সেটা হলো, আমরা স্নায়ুচাপে ভেঙে পড়িনি। গোল খাওয়ার পরেই আতঙ্কিত হয়ে পড়িনি। সমানতালে লড়াই করে গিয়েছি। আমরা কখনোই আশা হারাইনি। যোগ করা সময়ে গোল পাওয়াটা অবশ্যই ভাগ্যের ব্যাপার, কিন্তু এটা এমনি এমনি আসেনি। আমাদের নিজেদের উপর সবসময় বিশ্বাস ছিল, আর তারই ফল এই গোল।’
ম্যাচের প্রথমার্ধে টনি ক্রুসের ভুলের সুযোগ নিয়েই ম্যাচে এগিয়ে গিয়েছিল সুইডেন। অন্য অনেক খেলোয়াড় হয়তো ওই ভুলের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে বাকি ম্যাচে আর নিজের সেরাটা দিতেই পারতেন না। তবে ক্রুস যেন অন্য ধাতুতে গড়া। নিজের ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করেছেন দলকে জয়সূচক গোল এনে দিয়ে। ক্রুসের এমন মানসিকতায়ও মুগ্ধ জার্মান কোচ, ‘ক্রুসের জন্য আমি খুব খুশি। কারণ তাঁর ভুলের সুযোগ নিয়েই প্রথমে গোল করেছিল সুইডেন। সত্যিই একটা থ্রিলার ম্যাচ ছিল এটা। শেষ বাঁশি বাজার আগ পর্যন্তও ম্যাচের ভাগ্য পেন্ডুলামের মতো দুলেছে। অনেক আবেগ জড়িত ছিল ম্যাচটার সাথে।’
তবে আবেগে ডুবে থাকার সময় বা সুযোগ কোনটাই নেই জার্মানির। শেষ ষোলো নিশ্চিত করতে হলে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষেও জিততেই হবে তাদেরকে। এমন আনন্দের মুহূর্তের মাঝেও সেটি তাই ভুলে যাচ্ছেন না লো, ‘পরের পর্বে যাওয়া নিশ্চিত করতে হলে আমাদের দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষেও জিততেই হবে।’
তবে শেষ মুহূর্তে ক্রুসের গোলের পর জার্মানদের অমন বুনো উল্লাস ভালো লাগেনি সুইডিশ কোচ ইয়ান অ্যান্ডারসনের। অমন উদযাপনের মাধ্যমে তাঁর দলের স্টাফদের অপমান করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি, ‘জার্মানির কিছু নেতৃস্থানীয় খেলোয়াড় গোলের পর আমাদের দিকে ছুটে এসে আমাদের মুখে জয় ছুঁড়ে দেয়ার মতো করে উদযাপন করেছে। এতে আমি ভীষণ ক্ষুব্ধ। আমাদের বেঞ্চে যারা ছিল তারা সবাই ওদের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ হয়েছে। ওরা এমন আচরণ করেছে যা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়।’
এমন অভিযোগ সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়েছেন জার্মান কোচ লো, ‘আমি আমার কোন খেলোয়াড়কে সুইডিশ বেঞ্চকে উদ্দেশ্য করে কোন আক্রমণাত্মক উদযাপন করতে দেখিনি। কারণ শেষ বাঁশি বাজার পর আমরা একে অপরের উপর শুয়ে পড়ে উদযাপন করছিলাম। আমরা এতটাই আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছিলাম যে একে অপরকে আলিঙ্গন করে রেখেছিলাম ওই সময়।’
Comments