ভিএআর থাকলে বিশ্বকাপে ফাঁসতেন যারা

ক্রীড়া বিশ্বে ধীরে ধীরে অনেকটা জায়গা দখল করে নিচ্ছে প্রযুক্তি। ক্রিকেট, টেনিসের মতো খেলায় এর ব্যবহার বহু আগের থেকেই। কিন্তু সম্প্রতি ফুটবলেও লেগেছে প্রযুক্তির ছোঁয়া। গত বিশ্বকাপে গোল লাইন প্রযুক্তি। এবার তাতে আরও যোগ হয়েছে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির (ভিএআর)। বিতর্ক এড়াতে ভিডিও রিপ্লে দেখে সিদ্ধান্ত নেন রেফারিরা।

ক্রীড়া বিশ্বে ধীরে ধীরে অনেকটা জায়গা দখল করে নিচ্ছে প্রযুক্তি। ক্রিকেট, টেনিসের মতো খেলায় এর ব্যবহার বহু আগের থেকেই। কিন্তু সম্প্রতি ফুটবলেও লেগেছে প্রযুক্তির ছোঁয়া। গত বিশ্বকাপে গোল লাইন প্রযুক্তি। এবার তাতে আরও যোগ হয়েছে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির (ভিএআর)। বিতর্ক এড়াতে ভিডিও রিপ্লে দেখে সিদ্ধান্ত নেন রেফারিরা।

ইতোমধ্যেই ভিএআরের উপকারিতা দেখেছে ফুটবল বিশ্ব। আর তাতে আফসোসে পুড়ছেন অনেক সাবেক খেলোয়াড় ও দলেরা। ওই সময় ভিএআর থাকলে হয়তো পাল্টে যেত অনেক বিশ্বকাপের ইতিহাস। অনেকেই জেতেন ফেঁসে। তার উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা তুলে ধরা হলো-

লুইস সুয়ারেজ, উরুগুয়ে, ২০১৪

গত বিশ্বকাপের ঘটনা। ম্যাচে তখন গোলশূন্য সমতা। ক্লাদিও মারচিসিও লাল দেখায় ১০ জন নিয়ে খেলছে ইতালি। লুইস সুয়ারেজ তখন হঠাৎ করেই জর্জিও কিয়েলিনির ঘাড়ে কামড় দিয়ে বসেন। রেফারির দৃষ্টি এড়িয়ে যায় ঘটনা। ফলে বেঁচে যান সুয়ারেজ। এর কিছুক্ষণ পরই দিয়াগো গডিনের গোলে ম্যাচ জিতে দ্বিতীয় রাউন্ডের টিকেট কাটে উরুগুয়ে। অথচ ম্যাচ ড্র হলেই দ্বিতীয় রাউন্ডে যেত ইতালিই। সিদ্ধান্তটা পক্ষে গেলে এমন কিছু হতেও পারতো।

বেলজিয়াম, ১৯৮৬

একটি নয় দুই-দুইটি সিদ্ধান্ত যায় সোভিয়েত ইউনিয়নের বিপক্ষে। ফলে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা পূর্ণ ম্যাচটি ৪-৩ গোলে জিতে নেয় বেলজিয়াম। কিন্তু অফসাইডের অজুহাতে গোল দু’টি বাতিল না হলে জয় পেতে পারতো সোভিয়েত ইউনিয়নই। প্রথম গোলটায় কিছুটা কঠিন সিদ্ধান্তের হলেও দ্বিতীয় গোল বাতিল হওয়ার কারণ আজও খুঁজে পায়নি ফুটবল বোদ্ধারা।

রিভালদো, ব্রাজিল, ২০০২

কর্নার পায় ব্রাজিল। স্পট কিক নিতে যান ওই বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম সেরা নায়ক রিভালদো। বল তখন ছিল মাঠের মাঝেই। সেটা এগিয়ে দিতে কিক নেন তুরস্কের হাকান উনসাল। কিন্তু রিভালদোর অভিসন্ধি ছিল ভিন্ন। বল ধরেননি। লাগে তার পায়ে। এরপর মুখ ধরে এমন অভিনয় করেন যেন বল লেগেছে মুখে। তাই দেখে হাকানকে লাল কার্ড দেখান রেফারি।

দক্ষিণ কোরিয়া, ২০০২

অনেকটা স্বপ্নের মতো সেমিফাইনালে দক্ষিণ কোরিয়া। কিন্তু এর আগে তিন তিনটি ম্যাচে স্পষ্ট রেফারিদের সহায়তায় ওই পর্যন্ত গিয়েছিল দলটি। পর্তুগালের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ দিয়ে শুরু। দ্বিতীয় রাউন্ডে শক্তিশালী ইতালির বিপক্ষে তো লজ্জাহীনভাবেই সহয়তা করেছে রেফারি। ইতালির একটি পরিষ্কার গোল অফসাইডের অজুহাতে বাদ দেয় রেফারি। এরপর দলের সেরা খেলোয়াড় ফ্রান্সিসকো টট্টিকে লাল কার্ড দেখায় বিনা কারণেই। ডি বক্সের মধ্যে তাকে ফাউল করেন কোরিয়ার ডিফেন্ডার। ডাইভ দিয়েছেন ভেবে তাকে লাল কার্ড দেখান রেফারি। এছাড়াও কোরিয়ার করা প্রথম গোলেও রয়েছে বিতর্ক।

এরপর কোয়ার্টার ফাইনালে স্পেনের বিপক্ষেও সেই একই গল্প। এবারও নিশ্চিত একটি গোল বাদ দেওয়া হয় অফসাইডের অজুহাতে। অন্যথায় গোল্ডেন গোলে সেমিফাইনাল খেলত স্প্যানিশরাই। পরের টাই ব্রেকারে হেরে যায় তারা।

জিওফ হার্স্ট, ইংল্যান্ড, ১৯৬৬

বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচে পশ্চিম জার্মানির মুখোমুখি হয় ইংল্যান্ড। ম্যাচে তখন ২-২ গোলে সমতা। অতিরিক্ত সময়ের খেলা চলছে। তখন জিওফ হার্স্টের একটি শট বারে লেগে নিচে পড়লে সে বল ধরে ফেলেন জার্মান গোলরক্ষক। কিন্তু রেফারি তখন লাইন্সম্যানের সঙ্গে আলোচনা করে সেটা গোল ঘোষণা করেন। ভিডিও রিপ্লেতেও পরিষ্কার দেখা গিয়েছে বল পড়েছে লাইনের বাইরেই। এই গোলের জেরে অলআউট খেলতে গিয়ে পড়ে অবশ্য আরও একটি গোল খায় জার্মানি। তবে সেটা না হলে ফলাফল ভিন্নই হতে পারতো ১৯৬৬ বিশ্বকাপের।

রুডি ফলার, আর্জেন্টিনা, ১৯৯০

১৯৯০ সালের বিশ্বকাপের ফাইনালের শেষ মুহূর্তের ঘটনা। ৮৫ মিনিটে ডি বক্সের মধ্যে সতীর্থ বাড়ানো বলে নিয়ন্ত্রণ নিতে চেয়েছিলেন রুডি ফলার। কিন্তু তার আগেই বলে টোকা মেরে দেন আর্জেন্টিনার ডিফেন্ডার রবার্তো সেনসিনি। তখন ফলার ডাইভ দিলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। আর সেই গোলেই টানা দ্বিতীয় শিরোপা জয়ের স্বপ্ন শেষ হয় আর্জেন্টাইনদের।

ম্যারাডোনা, ইংল্যান্ড, ১৯৮৬

সেমিফাইনাল ম্যাচ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের ৫১ মিনিটে উড়ে আসা বলে হেড দিতে চেয়েছিলেন ম্যারাডোনা। কিন্তু তার আগেই বলে কাছে চলে যান ইংলিশ গোলরক্ষক পিটার শিল্টন। ৬ ফুট ১০ ইঞ্চি উচ্চতার শিল্টনকে টপকাতে হাত দিয়ে খোঁচা মারা ছাড়া কোন উপায় ছিল না ৫ ফুট ৫ ইঞ্চি উচ্চতার ম্যারাডোনার। করেছেনও তাই। রেফারি-লাইন্সম্যানদের চোখ এড়িয়ে গেলে গোল পেয়ে যান আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি। সে গোলটি না পেলে হয়তো সেমিতেই থেমে যেতে পারতো ম্যারাডোনার স্বপ্ন যাত্রা।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

6h ago