নাটকীয়তার পর গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন স্পেন
শেষ মিনিট দশেক পেন্ডুলামের মতো দুলছিল ম্যাচের ভাগ্য। এমনকি দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার তিন দলের সমীকরণও। মরক্কোর বিপক্ষে ৮১ মিনিটে পিছিয়ে পড়া স্পেনের শঙ্কা জেগেছিল বাদ পড়ার। শেষ পর্যন্ত বাদ তো পড়েইনি। পর্তুগালকে ইরান রুখে দেওয়ায় গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তারাই।
মরক্কোর বিপক্ষে স্পেনের ১-১ সমতায় খেলা এগিয়ে চলছিল। শেষের বাঁশির তখন মিনিট দশেক বাকি। ওদিকে ইরানের বিপক্ষে পর্তুগাল এগিয়ে থাকায় ছিল না শঙ্কা। সমতায় শেষ হলেও রানার্সআপ হয়ে পরের রাউন্ডে যেত স্পেন। কিন্তু তখনই গোল করে বসে মরক্কো। উল্টো বাদ পড়ার শঙ্কা জাগে স্পেনের। পরে যোগ করা সময়ে দারুণ গোল করে স্বস্তি আনেন ইয়োগো আসপাস। যদিও ওই গোল স্পেনকে পেতে হয়েছে ভিএআরের সহায়তায়।
ঠিক ওই মুহূর্তে আরেক ম্যাচে তখন পর্তুগালের গোল ফিরিয়ে দিয়েছে ইরান। এই অবস্থায় দুই খেলা শেষ হওয়ায় গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই পরের রাউন্ড নিশ্চিত হয়েছে স্পেনের। রানার্সআপ হয়েছে পর্তুগাল।
আগেই বাদ পড়া মরক্কো রোমাঞ্চ জাগিয়ে স্পেনের সঙ্গে ড্র করার গর্ব করতেই পারে। ওদিকে পর্তুগালের সঙ্গে ১-১ গোলের ড্রয়ের পরও আফসোস থাকছে ইরানের।
দ্বিতীয় রাউন্ডে স্পেন খেলবে স্বাগতিক রাশিয়ার বিপক্ষে। পর্তুগালের প্রতিপক্ষ উরুগুয়ে।
কালিনিনগ্রাদ স্টেডিয়ামে শুরু থেকে নিজেদের স্বাভাবিক ছন্দেই খেলেছে স্পেন। তবে প্রথম গোল খেয়েছে ডিফেন্ডার সার্জিও রামোসের ভুলে।
১৩ মিনিটের সময় মাঝমাঠে হাইলাইন ডিফেন্ড করছিল স্পেন। নিজেদের মধ্যে বল দেওয়া-নেওয়ার জন্য আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা টোকা দিয়েছিলেন সার্জিও রামোসকে। রামোস আলসে ভঙ্গিতে তা ধরতে যাওয়ায় বল পেয়ে যান খালিদ বাউতাইয়েব। গোলরক্ষক ডেভিড ডি গিয়াকে একা সামনে পেয়ে ক্ষিপ্র গতিতে ছুটি গিয়ে বল জালে জড়ান তিনি।
গোল খেয়ে যেন আরও জ্বলে উঠে স্পেন। মাঝমাঠে বারবার সুযোগ তৈরি করতে থাকেন ইনিয়েস্তা। তাতে ফল আসে মিনিট পাঁচেক পরই। বা দিক দিয়ে ইনিয়েস্তা বল নিয়ে বক্সে ঢুকে ক্রস করেন, ফাঁকায় দাঁড়ানো ইস্কো সহজেই তা জালে পাঠান।
২৪ মিনিটে আরেকটি কাউন্টার অ্যাটাক প্রায় সফল করে ফেলেছিল মরক্কো। ফের এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল আফ্রিকার দলটি। আবারও গোলরক্ষককে একা পেয়ে ছুটে গিয়েছিলেন বাউতাইয়েব। এবার ডি গিয়ার কাছে বল খানিকটা আগে চলে যাওয়ায় সুবিধা করতে পারেননি তিনি।
প্রথমার্ধের বাকিটা সময় বড় কোন সুযোগ আর তৈরি হয়নি। স্পেন খেলেছে তাদের চিরায়ত টিকিটাকা। বল পজিশন ধরে চক্কর দিয়ে মেরেছে মরক্কোর ডিফেন্ডারদের।
বিরতির পর আক্রমণের ধার বাড়ায় স্পেন, তবে কাউন্টার অ্যাটাক থেকে সুযোগ পেলেই বিপদজনক মুভ করেছে মরক্কো। ৫৫ মিনিটে মোহাম্মদীর শট বারে লেগে ফিরে এলে আক্ষেপে পুড়তে হয় তাদের।
বিশ্বকাপে তিন গোল করে ফেলা ডিয়েগো কস্তা এদিন ছিলেন না ছন্দে। ৭৪ মিনিটে তাকে উঠিয়ে নামানো হয় রিয়াল মাদ্রিদ তারকা ইয়াগো আসপাসকে। কিন্তু খেলার ধারার বিপরীতে ৮১ মিনিটে গোল পেয়ে যায় মরক্কো। ফয়সাল ফাজিরির কর্নার থেকে ক্ষিপ্র হেডে গোল করেন ইউসুফ নাসিরি।
মরক্কো ওই গোল ধরে রাখতে পারে আর ১০ মিনিট। অতিরিক্ত সময়ের শুরুতেই ডানি কারবাহালের কাছ থেকে বল পেয়ে গোল ফিরিয়ে দেন বদলি নামা আসপাস। তখনই হাঁফ ছেড়ে বাঁচে স্প্যানিশরা।
Comments