রোমাঞ্চকর জয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে আর্জেন্টিনা
পেন্ডুলামের মতই দুলছিল ম্যাচের ভাগ্য। নাইজেরিয়ার সঙ্গে ১-১ গোলে শেষ করলে বিদায় নিতে হতো লিওনেল মেসিদের। ৮৬ মিনিট পর্যন্ত ম্যাচের স্কোর লাইন ছিল ওটাই। বুকে কাঁপন নিয়ে প্রতীক্ষায় ছিলেন আর্জেন্টিনার সমর্থকরা। গ্যালারিতে ডিয়েগো ম্যারাডোনার অস্থিরতা জানান দিচ্ছিল গোটা আবহ। তখনই গোল করে সবাইকে উল্লাসে মাতান মার্কাসো রোহো। আর্জেন্টিনার প্রথম গোলটি করেছিলেন তাদের সেরা তারকা লিওনেল মেসি।
সেন্ট পিটার্সবার্গে আর্জেন্টিনা জিতেছে ২-১ গোলে। অন্য ম্যাচে ক্রোয়েশিয়া কাছে আইসল্যান্ড সমান ব্যবধানে হেরে যাওয়ায় দ্বিতীয় হয়েই শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছে হোর্হে সাম্পাওলির শিষ্যরা। দ্বিতীয় রাউন্ডে আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ ফ্রান্স, ক্রোয়েশিয়া খেলবে ডেনমার্কের বিপক্ষে।
১৪ মিনিটে মেসি আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে নিলে বিরতির পর পেনাল্টি থেকে গোল পেয়ে সমতায় ফেরে নাইজেরিয়া। আরও দুটি পেনাল্টির আবেদন ছিল নাইজেরিয়ার। তার একটি নিয়ে বিতর্ক হতেই পারে। ম্যাচ জেতানো গোল করা ডিফেন্ডার রোহোর হাতে লাগলেও ভিএআর পরীক্ষাতেও পেনাল্টি দেননি রেফারি।
ম্যাচের শুরুতে বল নিয়ন্ত্রণে নিতে কিছুটা সময় নেয় আর্জেন্টিনা। ওই সুযোগে কাউন্টার অ্যাটাকে যাচ্ছিল নাইজেরিয়া। আর্জেন্টিনার রক্ষণের ভুলে বলও পেয়ে গিয়েছিলেন আহমেদ মুসা, তবে কাজে লাগাতে পারেননি।
এই ম্যাচে যার পা জোড়ার দিকে তাকিয়েছিল গোটা আর্জেন্টিনা, এমনকি গোটা বিশ্ব। সেই লিওনেল মেসিই কাজের কাজটি করেন।
১৪ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে এবার বনেগার লব ধরে বক্সের মধ্যে দারুণ দক্ষতায় গোল করে দলকে ১-০ তে এগিয়ে নেন মেসি।
বিরতির খানিক আগে বক্সের মধ্যে লাফিয়ে রোহো পা দিয়ে ফেলে দেন ইনহানচোকে। নাইজেরিয়ার পেনাল্টি আবেদনে সাড়া দেননি রেফারি। বিরতির পরই অবশ্য পেনাল্টি পায় নাইজেরিয়া। ৪৯ মিনিটে বক্সের মধ্যে হ্যাভিয়েচ মাশ্চেরানো জড়িয়ে ধরে ফেলে দেন বালোগনকে। শুধু পেনাল্টি না, হলুদ কার্ডও পেতে হয় মাশ্চেরানোকে। ওই পেনাল্টি থেকে ভিক্টর মোজেসের গোলে সমতায় ফেরে নাইজেরিয়া।
৭১ মিনিটে পালটা আক্রমণ থেকে উইলফ্রেড এনদিদির জোরালো শট বার ঘেঁষে উপর দিয়ে চলে গেলে বিপদ থেকে রক্ষা পায় আর্জেন্টিনা। ৭৫ মিনিটে আরও এক গোলের সুযোগ নষ্ট করে নাইজেরিয়া। ফাঁকায় বল পেয়ে গোলে রাখতে পারেননি মুসা। তবে তখন হেড করতে গিয়ে হাতে লাগিয়েছিলেন রোহো। ভিএআর পরীক্ষার পরও পেনাল্টি দেননি রেফারি। চটে গিয়ে বেশ খানিকক্ষণ ধরে প্রতিবাদ করে নাইজেরিয়ানরা।
মিনিট তিনেক পরই গোল পেতে পারতেন গঞ্জালো হিগুয়েইন। বক্সের মধ্যে বলটা প্লেসিং শটেই জালে দিতে পারতেন। কিন্তু তিনি মারেন আকাশে। ৮৪ মিনিটে বক্সের খানিক বাইরে থেকে নাইজেরিয়ার ফ্রি-কিক যায় সাইড নেটে। এর দুই মিনিট পরই ওই মুহূর্ত। মার্কাডোর ক্রস থেকে গোল করেন রোহো। ততক্ষণে সেন্ট পিটার্সবার্গে আইসল্যান্ডের হারের খবর এসে গেছে। একে অন্যকে জড়িয়ে আবেগের প্রকাশ ঘটাচ্ছেন মেসিরা। আর তাদের ওস্তাদ সাম্পওলি সোজা হাঁটা ধরেন ড্রেসিং রুমের দিকে। বিস্তর সমালোচনার পর হয়ত অনেকটা অভিমানে।
Comments