রোহিঙ্গাদের জন্য নিউইয়র্কে কনসার্ট

রোহিঙ্গাদের সাহায্যার্থে আয়োজিত কনসার্টে পিয়ানো, ভায়োলিন ও তবলাসহ মধ্যযুগীয় বাদ্যযন্ত্র হারপিস্ট এর সুরের-মূর্ছনায় মুখরিত হয় গোটা অডিটোরিয়াম। ছবি: জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের সৌজন্যে

মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের সাহায্যের জন্য নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে কনসার্ট হয়েছে। পারফর্মিং আর্টস গ্রুপ ‘ব্রুকলীন রাগা ম্যাসিভ’ এর সহযোগিতায় জাতিসংঘের স্টাফ রিক্রিয়েশন কাউন্সিলের ইউএন চেম্বার মিউজিক সোসাইটি গত সোমবার কনসার্টটির আয়োজন করে।

এই কনসার্ট থেকে উপার্জিত অর্থ বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক এর মাধ্যমে বাংলাদেশে আশ্রিত বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মানবিক সাহায্যার্থে প্রদান করা হবে বলে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

কনসার্ট উপলক্ষে শুভেচ্ছা বাণী পাঠিয়েছিলেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। কনসার্টে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এন্ড্রু গিলমোর এই বাণী পড়ে শোনান। জাতিসংঘ মহাসচিব রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দান ও মানবিক সহযোগিতা দেওয়ায় বাংলাদেশ উদারতার কথা উল্লেখ করে রোহিঙ্গাদের সহায়তায় এগিয়ে আসার জন্য এধরনের আয়োজনকে স্বাগত জানান।

রোহিঙ্গাদের জন্য আয়োজিত কনসার্টে উপস্থিত দর্শক-শ্রোতাদের একাংশ। ছবি: জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের সৌজন্যে

অনুষ্ঠানটিতে বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন। তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের এই মানবিক সঙ্কট আমাদেরকে বহুমুখী চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। সঙ্কটের মাত্রা এতটাই ব্যাপক যে জাতিসংঘের সংস্থাসমূহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এই সঙ্কটে পাশে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানিয়েছে। এই মানবিক সঙ্কটে আমাদের সরকার ও জনগণের পক্ষে যা করা সম্ভব আমরা তার সবটুকুই করছি।’

নিউইয়র্কের জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনার অফিসের পরিচালক মিজ্ নিনিতি কেলি রোহিঙ্গাদের দুর্দশার কথা তুলে ধরেন। রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তিনি বাংলাদেশ সরকার ও জনগণকে ধন্যবাদ জানান। এ ধরনের কনসার্টের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের সাহায্যার্থে মেধাবীদের এগিয়ে আসার উদ্যোগের প্রশংসা করেন মিজ্ কেলি।

কনসার্টে অংশগ্রহণকারী শিল্পীদের সঙ্গে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন। ছবি: জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের সৌজন্যে

অনুষ্ঠানটিতে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য পর্ব শেষে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্মিত একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়। এরপর শুরু হয় মুল আয়োজন, কনসার্ট। পিয়ানো, ভায়োলিন ও তবলাসহ মধ্যযুগীয় বাদ্যযন্ত্র হারপিস্ট এর সুরের-মূর্ছনায় মুখরিত হয় গোটা অডিটোরিয়াম। একে একে পরিবেশিত হয় ৯টি মিউজিক্যাল আইটেম। ‘ইউএন চেম্বার মিউজিক সোসাইটি’র শিল্পীদের পরিবেশিত কণ্ঠ ও যন্ত্রসঙ্গীতের পাশাপাশি স্থান পায় তবলাকে প্রাধান্য দিয়ে ‘আমারও পরানও যাহা চায়’ এই রবীন্দ্র সঙ্গীতের মিউজিক্যালটি। তবলায় সুর তোলেন ‘ব্রুকলিন রাগা ম্যাসিভ’ এর শিল্পী প্রবাসী বাংলাদেশি মীর নকিবুল ইসলাম। ‘ইউএন চেম্বার মিউজিক সোসাইটি’র শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন আরিয়েল হরোইটিস, জোনা উ, ফ্লোরি মার্শাল, মেইয়ানা জিয়াং, ক্রেইগ কেলোনোস্কি, ব্রেন্দা ভনগোভা ও ডেভিড ইয়ার্ডলি । গোটা অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ‘ইউএন চেম্বার মিউজিক সোসাইটি’র আর্টিস্টিক ডাইরেক্টর মিজ্ ব্রেন্দা ভনগোভা।

অনুষ্ঠানটিতে সংগীত পিপাসু দর্শক-শ্রোতার পাশাপাশি জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English

No justifiable reason to delay nat'l polls beyond Dec: Salahuddin

We have been able to make it clear that there is not even a single mentionable reason to hold the election after December, says the BNP leader

3h ago