পাওলিনহো, সিলভার গোলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল

বর্তমান চ্যাম্পিয়ন জার্মানির বিদায়ের তীব্রতা বিশ্বকাপ সইতে না সইতেই ব্রাজিলের খেলা। তারা হারানোর ভয়ে যেন ছিল বিশ্বকাপও। ব্রাজিলের সামনে যদিও অমন শঙ্কা কিছু ছিল না, ড্র করলেই চলত। তবে পচা শামুকে পা কাটতে আর কতক্ষণ। সার্বিয়াকে পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা সে সুযোগ দেয়নি। পাওলিনহো আর থিয়াগো সিলভার দুই গোলে জিতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই পরের রাউন্ডে উঠেছে সেলেসাওরা।
প্রথম গোলের পর পাওলিনহোকে ঘিরে ব্রাজিলিয়ানদের উল্লাস। ছবিঃ রয়টার্স

বর্তমান চ্যাম্পিয়ন জার্মানির বিদায়ের তীব্রতা বিশ্বকাপ সইতে না সইতেই ব্রাজিলের খেলা। তারকা হারানোর ভয়ে যেন ছিল বিশ্বকাপও। ব্রাজিলের সামনে যদিও অমন শঙ্কা কিছু ছিল না, ড্র করলেই চলত। তবে পচা শামুকে পা কাটতে আর কতক্ষণ। সার্বিয়াকে পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা সে সুযোগ দেয়নি। পাওলিনহো আর থিয়াগো সিলভার দুই গোলে জিতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই  পরের রাউন্ডে উঠেছে সেলেসাওরা।

কাজান থেকে মস্কোর দূরত্ব যতোই হোক। জার্মানির হেরে যাওয়ার খবরের রেশ স্পার্টাক স্টেডিয়ামেও থেকেছে। তবে তাতে ভড়কায়নি ব্রাজিল। ৮ মিনিটে মার্সেলোকে হারানোর ধাক্কাও সামলেছে পেশাদার ফুটবলে। এই ম্যাচ জেতায় ২ জুলাই দ্বিতীয় রাউন্ডে ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ 'এফ' গ্রুপের রানার্সআপ মেক্সিকো।

খেলার শুরুর মিনিট থেকেই প্রেসিং ফুটবলে গিয়েছে ব্রাজিল। প্রথম তিন মিনিটের মধ্যেই দুবার সার্বিয়ার বক্সে বিপদজনকভাবে ঢুকে গিয়েছিলেন নেইমার আর  কৌতিনহো। দুবারই অবশ্যই পরে বাধা পায় অফ সাইড ফ্লাগে। জুতসই আক্রমণের সন্ধানে থাকা ব্রাজিল ৮ মিনিটেই বড় এক ধাক্কা খায়। দলের অন্যতম সেরা তারকা লেফট ব্যাক মার্সেলো চোটে পড়ে নেমে যেতে বাধ্য হন। তার জায়গায় নামানো হয় ফিলিপ লুইজকে। পুরো ম্যাচে খারাপ করেননি তিনি। মার্সেলোর অভাব পুষিয়েছেন ঠান্ডা মাথায়। 

মার্সেলোকে হারিয়ে খানিকক্ষণ অগোছালো ফুটবল খেলে সামলে নিয়ে ফের আক্রমণে যায় সেলেসাওরা। ২৪ মিনিটে জেসুসের সঙ্গে বল দেওয়া নেওয়া করে বক্সে ঢুকে গিয়েছিলেন নেইমার। শটও রেখেছিলেন বক্সে। তার নেওয়া শট ফিরিয়ে দেন সার্বিয়ান গোলরক্ষক ভ্লাদিমির স্টোকোভিচ।

২৯ মিনিটে সুর্বণ সুযোগ মিস করেন গ্যব্রিয়েল জেসুস। মাঝমাঠ থেকে বল পাওয়ার পর তার সামনে ছিলেন কেবল গোলরক্ষক। তবু নিশানা রাখতে পারেননি তিনি, দুর্বল শট তোলে দেন গোলরক্ষকের হাতেই।

৩৫ মিনিটে অপেক্ষার অবসান ঘটান পাওলিনহো। মাঝমাঠ থেকে ফিলিপ কৌতিনহোর ডিফেন্স চেরা অসাধারণ পাস পেয়ে গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে টোকা মেরে জালে পাঠিয়ে উল্লাসে মাতেন।  বিরতির খানিক আগে নেইমারের বাঁকানো শট তেকাঠির একটু উপর দিয়ে চলে গেলে তখন ব্যবধান বাড়ানো যায়নি।

বিরতির পর কিছুক্ষণ যেন খেই হারায় ব্রাজিল। ভুল পাসের ছড়াছড়ির  সুযোগ পেয়ে আক্রমণ উঠে গোলের সম্ভাবনাও তৈরি করে ফেলেছিল সার্বিয়া।

৫৬ মিনিটে পালটা আক্রমণ থেকে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পেয়েছিলেন নেইমার। সেই কৌতিনহোর কাছ থেকে পাওয়া দারুণ এক পাসে এগিয়ে যাচ্ছিলেন গোলের দিকে। কিন্তু তার শট ফিরিয়ে দেন স্টোকোভিচ। এর চার  মিনিট পর সমতায় ফেরায় সবচেয়ে বড় সুযোগ আসে সার্বিয়ার সামনে। সেবিটিচের শট প্রথমে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক এলিসন। ওই বল পেয়ে গিয়েছিলেন মিলানকোভিচ। তার শট পা দিয়ে ঠেকান থিয়াগো সিলভা। পরে এলিসন নিরাপদ তা হাতে জমান। দুই মিনিট পর মিলানকোভিচের আরেক হেডও ঠেকান এলিসন।

৬৭ মিনিটে ভয় কাটিয়ে ব্রাজিলের ব্যবধান বাড়ান থিয়াগো সিলভা। নেইমারের কর্নার থেকে দারুণ হেডে গোল করেন এই ডিফেন্ডার। পরের তিন মিনিটে একের পর এক সুযোগ তৈরি করে তিতের শিষ্যরা। বাম প্রান্ত দিয়ে দুরন্ত গতিতে ছুটে গিয়ে নেইমার বক্সে ঢুকে পাস দেন ফাঁকায় দাঁড়ানো কৌতিনহোকে। কৌতিনহোর শট সার্বিয়ান ডিফেন্ডারদের পায়ে লেগে ফেরত আসে। ওই আক্রমণ থেকেই ফিলিপ লুইজের জোরালো শট ফিরিয়ে দেন স্টোকোভিচ।

৮২ মিনিটে ডান দিকে বল পেয়ে উইলিয়ান দারুণ দক্ষতায় বল বাড়িয়েছিলেন নেইমারের দিকে। নেইমারের শট বারের উপর দিয়ে চলে যায় বাইরে। ৮৫ মিনিটে নেইমার নিজেই নিজের তৈরি করা আক্রমণ থেকে দারুণ গোল পেতে পারতেন। বা দিকে বল নিয়ে ঢুকে প্রান্ত বদল করে দিয়েছিলেন উইলিয়ানের কাছ। উইলিয়ানের বাড়ানো বল টোকা দিয়ে জালে ঢুকাতে গেলে তা হাত দিয়ে ফিরিয়ে দেন সার্বিয়ান গোলরক্ষক।

শেষ পর্যন্ত আর গোল পায়নি ব্রাজিল। তবে দাপট রেখেই দ্বিতীয় রাউন্ডে পা রাখল আসরের অন্যতম ফেভারিটরা।

 

 

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

5h ago