রাবিতে খালি পায়ে ৫ শিক্ষকের নীরব প্রতিবাদ
কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে খালি পায়ে হেঁটে প্রতিবাদ জানিয়েছেন পাঁচ জন শিক্ষক। আজ সকাল ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে প্রশাসন ভবনের সামনে শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে তারা এক ঘণ্টা খালি পায়ে অবস্থান করে সেখান থেকে চলে যান।
শিক্ষকরা হলেন, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সালেহ হাসান, রায়হানা শামস ইসলাম, কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম, ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক বাইতুল মোকাদ্দেসুর রহমান ও আরবি বিভাগের অধ্যাপক ইফতেখারুল ইসলাম। এসময় তারা কোনো সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।
রাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর গত দুদিনে দফায় দফায় ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে আজ খালি পায়ে হাঁটার কর্মসূচির কথা প্রথম ঘোষণা করেছিলেন অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. ফরিদ খান। আজ সকাল সাড়ে ৭টায় তিনি প্রতিবাদ জানানোর কথা ঘোষণা করে ফেসবুকে লিখেন, ‘দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা এবং লাঞ্ছনার প্রতিবাদে আজ আমি নগ্নপদে অফিসে যাব। সকাল ১১ থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত জোহা স্যারের মাজারে দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করব। খালিহাতে, নগ্নপায়ে এবং নীরবে যে কেউ যোগদান করতে পারেন। কোন স্লোগান না, ফেস্টুন না, বক্তৃতা না, না কোনো রাজনীতি। এই নগ্নপায়ে নীরব প্রতিবাদ বোঝাবে আমরা আর সভ্য সমাজের নাগরিক নয় যেখানে বাকস্বাধীনতা আছে যেখানে ন্যায়সঙ্গত প্রতিবাদের সুযোগ আছে।’
দ্য ডেইলি স্টারের রাবি সংবাদদাতা জানান, ক্যাম্পাসে আসার পর প্রক্টর ও বিভাগের সভাপতি ড. ফরিদ খানকে অবস্থান পালন না করার অনুরোধ জানান। এতে তিনি সামসুজ্জোহা চত্বরে না গেলেও তার প্রতি সংহতি ও হামলার প্রতিবাদে অন্য পাঁচ শিক্ষক খালি পায়ে অবস্থান ধর্মঘট পালন করেন। এসময় কয়েকশ শিক্ষার্থী শিক্ষকদের প্রতিবাদে সমর্থন জানিয়ে প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নেন। সেখানে উপস্থিত মোজাম্মেল নামে এক শিক্ষার্থী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘যে বিশ্ববিদ্যালয়ে জোহা স্যারের রক্ত মিশে আছে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা আমরা শিক্ষার্থীরা কোনোভাবে মেনে নিব না।’
তিনি বলেন, ‘অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ফরিদ খান রাবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা প্রতিবাদে আজ নীরব প্রতিবাদ করতে চেয়েছিলেন। তিনি নগ্নপায়ে জোহা চত্বরে এসে এক ঘণ্টা নীরবতা পালন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাকে বিভাগের শিক্ষকরা আটকে রেখেছেন। আমরা এঘটনারও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তিনি না আসা পর্যন্ত আমরা প্রশাসন ভবনের সামনেই অবস্থান করব।’
এ ব্যাপারে অর্থনীতি বিভাগের সভাপতি কে বি এম মাহাবুবুর বলেন, ‘বিভাগের সভাপতি হিসেবে আমার বিভাগ, আমার সহকর্মীর জন্য আমার দায়িত্ব রয়েছে। সেই দায়িত্ববোধ থেকেই আমি তাকে যেতে দিচ্ছি না।’
Comments