মারপিটের ম্যাচে টাই-ব্রেকারে জিতে শেষ আটে ইংল্যান্ড

মেজর টুর্নামেন্টে সাত বার টাই-ব্রেকারে গিয়ে মাত্র একবার জয়। বিশ্বকাপে তো কখনোই নয়। এমন পরিসংখ্যানে ভয়টা পাওয়ারই কথা ইংল্যান্ডের। কিন্তু এদিন ভয়কে জয় করে নতুন ইতিহাস গড়ে দলটি। প্রথম বারের মতো টাই-ব্রেকারে জয় তুলে শেষ আটে জায়গা করে নিল ইংলিশরাই। আর তাতে দ্বিতীয় রাউন্ডেই শেষ হয় কলম্বিয়ার স্বপ্ন যাত্রা।

মেজর টুর্নামেন্টে সাত বার টাই-ব্রেকারে গিয়ে মাত্র একবার জয়। বিশ্বকাপে তো কখনোই নয়। এমন পরিসংখ্যানে ভয়টা পাওয়ারই কথা ইংল্যান্ডের। কিন্তু এদিন ভয়কে জয় করে নতুন ইতিহাস গড়ে দলটি। প্রথম বারের মতো টাই-ব্রেকারে জয় তুলে শেষ আটে জায়গা করে নিল ইংলিশরাই।  আর তাতে দ্বিতীয় রাউন্ডেই শেষ হয় কলম্বিয়ার স্বপ্ন যাত্রা।

ভাগ্যটা এদিন শুরু থেকেই কলম্বিয়ার সঙ্গে ছিল না। দলের সেরা তারকা হামেস রদ্রিগেজকে ছাড়াই মাঠে নামতে হয় তাদের। আর তাকে ছাড়া কলম্বিয়ার আক্রমণগুলো ঠিক যেন দানা বেঁধে ওঠেনি। পুরো ম্যাচে তার অভাব ফুটে উঠেছে প্রকটভাবে। টাই-ব্রেকারের শুরুটা অবশ্য ভালোই হয় তাদের। প্রথম তিনটি শট গোল হয়। অপরদিকে জর্ডান হেন্ডারসনের নেওয়া তৃতীয় শট ফিরিয়ে দেন কলম্বিয়ান গোলরক্ষক ডেভিড ওসপিনা।

তবে পরের দুটি শটে গোল করতে ব্যর্থ হন কলম্বিয়ার খেলোয়াড়রা। মেতিয়াস উরিবি বল লাগান বারে। আর কার্লোস বাক্কার শট ফিরিয়ে দেন জর্ডান পিকফোর্ড। আর শেষ শট নিখুঁতভাবে নিয়ে ইংলিশদের উল্লাসে মাতান এরিক দিয়ের। প্রথমবারের মতো টাই-ব্রেকারের বাধা কাটানোর মজাই যে আলাদা।

মস্কোতে এদিন শুরু থেকেই গায়ের জোরে খেলতে থাকে কলম্বিয়া। কম যায়নি ইংলিশরাও। জবাবটা দিচ্ছিলেন। চেষ্টা করেও সাঁড়াশী কোন আক্রমণ সানাতে পারছিল না ইংল্যান্ড। মাঝে মাঠ থেকে গুছিয়ে আক্রমণে গেলেও অ্যাটাকিং থার্ডে খেই হারিয়েছে কলম্বিয়ান রক্ষণভাগের সামনে। তাতে বাড়ে হতাশা। আর তা থেকেই ম্যাচে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে হাতাহাতিতেও লিপ্ত হয় দলদু’টি। 

৩৮ মিনিটে কলম্বিয়ার অর্ধে ফি কিক পায় ইংল্যান্ড। সে কিক নেয় ৪২ মিনিটে। মাঝের সময়টা তর্কেই লিপ্ত ছিল দুই দল। কলম্বিয়ার গড়া দেওয়ালে জায়গা নিতে যান ইংলিশ খেলোয়াড়রা। এক পর্যায়ে ইংলিশ এক খেলোয়াড়কে কনুই দিইয়ে আঘাত করেন উইলিয়াম বারিয়স। ফলে হলুদ কার্ড দেখেন তিনি।

সেই ফ্রি কিক থেকে দারুণ শট নিয়েছিলেন কিয়েরান ট্রাইপার। তার শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তবে প্রথমার্ধে বল মাঝ মাঠের মধ্যেই বেশির ভাগ সময় ঘোরাফেরা করেছে। বলার মতো আক্রমণ হয় একটি। ১৬ মিনিটে কিয়েরান ট্রাইপারের ক্রসে ফাঁকায় হেড দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন হ্যারি কেইন। তবে দুরূহ কোণ থেকে বল লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুটাও হয় একই রকম। ৫৭ মিনিটে আবারো একটি সেট পিসে ধাক্কাধাক্কির খেসারত দিতে হয় কলম্বিয়াকে। জর্ডান হেন্ডারসন ও কার্লোস সানচেজ দুই জনই মাথা দিয়ে একে অপরকে ধাক্কা দিলে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন রেফারি। প্রতিবাদ করে কলম্বিয়ানরা। তর্কে জড়িয়ে পড়ে ইংলিশরাও। তা নিয়ন্ত্রণে দুই দলের একজন করে খেলোয়াড়কে হলুদ কার্ড দেখাতে হয়।

তবে কলম্বিয়ানদের দাবিটা অযৌক্তিক ছিল না। ভিএআরের আবেদন করেছিল তারা। সেটা নিলে হয়তো পেনাল্টির সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হতে পারতো। কারণ সে ফাউলে দুই জনই একে অপরকে ধাক্কা দিয়েছিলেন। তবে নিজের সিদ্ধান্তে অটল রেফারি। আর সে পেনাল্টি থেকে বুদ্ধিদীপ্ত শটে গোল আদায় করে দেন হ্যারি কেইন।

গোলের পর কিছুটা গোছানো ফুটবল খেলে দুই দলই। কিন্তু উত্তেজনা থামেনি। এরপরও রেফারিকে বের করতে হয়েছে ৪টি কার্ড। তবে দিনের সবচেয়ে সেরা সুযোগটি পায় কলম্বিয়াই। ৮০ মিনিটে মাঝ মাঠে কাইল ওয়াকার বল হারিয়ে ফেললে পেয়ে যান বাক্কা। তার বাড়ানো ক্রসে একে বারে ফাঁকায় বল পেয়েছিলেন হুয়ান কুয়াদ্রাদো। তবে তার শট পোস্টের বেশ উপর দিয়ে গেলে হতাশা বাঃরে কলম্বিয়ানদের।

শেষ দিকে দারুণ চেপে ধরে কলম্বিয়া। ৮৭ মিনিটে রাদামেল ফ্যালকাওয়ের হেড দারুণ দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ড। ৯২ মিনিটে অবিশ্বাস্য এক সেভ করেন তিনি। উরিবির দারুণ এক শটে বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে কর্নারের বিনিময়ে দুর্দান্ত ভাবে ফিরিয়ে দেন পিকফোর্ড। তবে তা থেকে খুব একটা লাভ হয়নি ইংলিশদের। সেই কর্নার থেকে দারুণ এক হেডে বল জালে জড়ান ইয়েরি মিনা।  ফলে ১-১ গোলের সমতায় শেষ হয় নির্ধারিত সময়ের খেলা।

১০৩ মিনিটে দারুণ এক সুযোগ পায় কলম্বিয়া। কুয়াদ্রাদোর হাওয়ায় ভাসানো বলে ফ্রি হেড দিয়েছিলেন ফ্যালকাও। তবে লক্ষ্যে রাখতে পারেননি। ১১১ মিনিটে সুযোগ ছিল ইংলিশ দেরও । তবে দুরূহ কোণ থেকে বাঁ পায়ের শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি ড্যানি রোজ।  

 

Comments

The Daily Star  | English

Teesta floods bury arable land in sand, leaving farmers devastated

40 unions across 13 upazilas in Lalmonirhat, Kurigram, Rangpur, Gaibandha, and Nilphamari are part of the Teesta shoal region

1h ago