দ্বিতীয় রাউন্ড পর্যন্ত রাশিয়া বিশ্বকাপের যত পরিসংখ্যান
কোয়ার্টার ফাইনাল পর্ব শুরু হওয়ার আগেই পরিসংখ্যানের পাতায় বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে রাশিয়া বিশ্বকাপ। ফিফার অফিশিয়াল ওয়েবসাইট সেই পরিসংখ্যানগুলোই তুলে ধরেছে পাঠকদের জন্য।
১) ১৯৫৮ বিশ্বকাপে মাত্র চতুর্থ টিনএজার হিসেবে বিশ্বকাপের এক ম্যাচে দুই গোল করেছিলেন পেলে। এরপর ৬০ বছরে এই কীর্তির পুনরাবৃত্তি করে দেখাতে পারেননি কেউ, যা এবার করে দেখিয়েছেন কিলিয়ান এমবাপে।
২) দুই গোলে পিছিয়ে পড়েও নকআউট পর্বের ম্যাচ জেতার সর্বশেষ ঘটনাটি ছিল ৪৮ বছর আগে। ১৯৭০ বিশ্বকাপে দুই গোলে পিছিয়ে পড়ে ইংল্যান্ডকে ৩-২ গোলে হারিয়েছিল পশ্চিম জার্মানি। সেই কীর্তির পুনরাবৃত্তি বিশ্বকাপ দেখলো বেলজিয়ামের হাত ধরে। শেষ ষোলোতে দুই গোলে পিছিয়ে পড়েও ৩-২ গোলে জাপানকে হারিয়েছে র্যাঙ্কিংয়ের তিন নম্বর দল বেলজিয়াম।
৩) রাশিয়া বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত মাঠে মোট ২৫ লাখ ৮০ হাজার দর্শকের সমাগম হয়েছে। এক বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি দর্শক সমাগমের রেকর্ডটি যুক্তরাষ্ট্রের দখলে। ১৯৯৪ যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকাপে প্রায় ৩৬ লাখ দর্শক সমাগম হয়েছিল। এছাড়া ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপে ৩৪ লাখ ও ২০০৬ জার্মানি বিশ্বকাপে প্রায় সাড়ে ৩৩ লাখ দর্শক মাঠে বসে খেলা উপভোগ করেছেন।
৪) রাশিয়া বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত গোল হয়েছে মোট ১৪৬ টি। এর মধ্যে ৩১ টি গোল হয়েছে ম্যাচের ৮০ মিনিটের পর, শতাংশের হিসেবে যা ২১%।
৫) এই বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত মোট ২৮ বার পেনাল্টির বাঁশি বাজিয়েছেন রেফারিরা। এক বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি পেনাল্টির রেকর্ড এটি। এই ২৮ পেনাল্টির মধ্যে খেলোয়াড়েরা সফল পেনাল্টি নিয়েছেন ২১ টি, মিস করেছেন ৭ টি। দুটোই নতুন রেকর্ড।
৬) এখনও পর্যন্ত ৫৬ ম্যাচের মধ্যে ২২ টিই প্রথমার্ধ শেষে গোলশূন্য ছিল। কিন্তু এই ২২ ম্যাচের মধ্যে মাত্র একটিই ৯০ মিনিট শেষেও গোলশূন্য ছিল। গ্রুপ পর্বের ফ্রান্স-ডেনমার্ক ম্যাচটি। গোলশূন্য ড্র ম্যাচের দেখা পেতে এবার অপেক্ষা করতে হয়েছে ৩৭ টি ম্যাচ, বিশ্বকাপ ইতিহাসে যা রেকর্ড। এর আগে কোন বিশ্বকাপেই গোলশূন্য ড্র ম্যাচের দেখা পেতে এতগুলো ম্যাচ অপেক্ষা করতে হয়নি।
৭) পাঁচটি ভিন্ন ভিন্ন বিশ্বকাপে অধিনায়কত্বের আর্মব্যান্ড পরা একমাত্র খেলোয়াড় হয়েছেন মেক্সিকোর রাফায়েল মার্কেজ। বিশ্বকাপে ১৭ টি ম্যাচে অধিনায়কত্ব করে তিনি ভেঙে দিয়েছেন ডিয়েগো ম্যারাডোনার রেকর্ড। অ্যান্টোনিও কার্ভাহাল ও লোথার ম্যাথাউসের পর মাত্র তৃতীয় ফুটবলার হিসেবে পাঁচটি বিশ্বকাপে খেলার কৃতিত্বও দেখিয়েছেন মার্কেজ।
৮) এখনও পর্যন্ত ১০ টি আত্মঘাতী গোল দেখেছে রাশিয়া বিশ্বকাপ, যা কি না বিশ্বকাপের এক আসরে সর্বোচ্চ আত্মঘাতী গোলের রেকর্ড। এর আগে ১৯৯৮ বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ৬ টি আত্মঘাতী গোল হয়েছিল। স্পেনের বিপক্ষে আত্মঘাতী গোল করে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে আত্মঘাতী গোল করার রেকর্ডের মালিক হয়েছেন রাশিয়ার সার্গেই ইগনাশেভিচ।
৯) এই নিয়ে টানা সপ্তম বারের মতো বিশ্বকাপের শেষ ষোলো থেকে বিদায় নিলো মেক্সিকো, যা একটি রেকর্ড।
১০) অধিনায়ক হিসেবে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ৬ গোল করার রেকর্ড ছিল ডিয়েগো ম্যারাডোনার। প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে এসেই সেটিতে ভাগ বসিয়ে ফেলেছেন ইংলিশ অধিনায়ক হ্যারি কেইন। কেইন ভাগ বসিয়েছেন আরেকটি রেকর্ডের। ইংল্যান্ডের হয়ে এক বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ৬ গোল করার রেকর্ড ছিল গ্যারি লিনেকারের, ১৯৮৬ মেক্সিকো বিশ্বকাপে ৬ গোল করেছিলেন তিনি। কেইন এরই মধ্যে এই বিশ্বকাপে ৩ ম্যাচ খেলে করে ফেলেছেন ৬ গোল। আর একটি গোল করতে পারলে একই সাথে ম্যারাডোনা ও লিনেকারের রেকর্ড ভেঙে দেবেন এই টটেনহাম স্ট্রাইকার।
১১) এই প্রথমবার টানা তিন বিশ্বকাপে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা প্রথম রাউন্ড শেষেই বাড়ির পথ ধরেছে।
১২) বিশ্বকাপ ইতিহাসের প্রথম ডিফেন্ডার হিসেবে টানা তিন ম্যাচে গোল করার রেকর্ড করেছেন কলম্বিয়ার ইয়েরি মিনা। পেনাল্টি ছাড়া এক বিশ্বকাপে তিন গোল করা প্রথম ডিফেন্ডারও তিনি।
১৩) পর্তুগালের রিকার্ডোর পর বিশ্বকাপ ইতিহাসে মাত্র দ্বিতীয় গোলকিপার হিসেবে টাইব্রেকারে তিনটি পেনাল্টি ঠেকানোর কৃতিত্ব দেখিয়েছেন ক্রোয়েশিয়ার গোলকিপার ড্যানিয়েল সুবাসিচ।
১৪) এই নিয়ে চারটি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের আট নম্বর জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় টাইব্রেকারে পেনাল্টি মিস করেছেন। ১৯৯০ বিশ্বকাপে ক্রিস ওয়াডল, ১৯৯৮ বিশ্বকাপে ডেভিড ব্যাটি, ২০০৬ বিশ্বকাপে ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ড ও এবার জর্ডান হেন্ডারসন পেনাল্টি মিস করেছেন। এদের সবাই আট নম্বর জার্সি পরে বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছিলেন।
Comments