হিসাবরক্ষক থেকে বিশ্বের অন্যতম সেরা মিডফিল্ডার হওয়ার গল্প

গত তিন মৌসুমে চেলসি ও লেস্টার সিটির হয়ে ১২৯ টি ম্যাচ খেলেছেন এন’গোলো কান্তে। এই ১২৯ ম্যাচে তিনি গোল করেছেন চারটি, অ্যাসিস্ট করেছেন সাতটি। এই সময়ের মধ্যে ফ্রান্সের হয়ে ম্যাচ খেলেছেন ২৯ টি, গোল আর অ্যাসিস্ট করেছেন একটি করে। অর্থাৎ তাকে গোলস্কোরার কিংবা অ্যাসিস্টদাতা- কোনটাই বলা যায় না।
N'Golo Kante
ফরাসী মিডফিল্ডার কান্তে

গত তিন মৌসুমে চেলসি ও লেস্টার সিটির হয়ে ১২৯ টি ম্যাচ খেলেছেন এন’গোলো কান্তে। এই ১২৯ ম্যাচে তিনি গোল করেছেন চারটি, অ্যাসিস্ট করেছেন সাতটি। এই সময়ের মধ্যে ফ্রান্সের হয়ে ম্যাচ খেলেছেন ২৯ টি, গোল আর অ্যাসিস্ট করেছেন একটি করে। অর্থাৎ তাকে গোলস্কোরার কিংবা অ্যাসিস্টদাতা- কোনটাই বলা যায় না।

মাত্র পাঁচ ফুট পাঁচ ইঞ্চি উচ্চতার কান্তেকে আধুনিক ফুটবলের শক্তিশালী ফুটবলারদের তুলনায় বড়ই বেমানান লাগে। আধুনিক ফুটবলের অন্যতম অনুষঙ্গ পাওয়ার ফুটবলটা ঠিক তার সাথে যায়না। কিন্তু তারপরেও গত তিন মৌসুমে কান্তের বাজারমূল্য কোথা থেকে কোথায় এসেছে ঠেকেছে দেখুন। তিন মৌসুম আগে মাত্র ৯ মিলিয়ন ইউরো দিয়ে তাকে কিনে এনেছিল লেস্টার, সেই কান্তেকেই চেলসির কাছে বিক্রি করেছে ৩৬ মিলিয়ন ইউরোতে। আর চেলসি বলে রেখেছে, এখন কান্তেকে কেউ কিনতে চাইলে তাকে পরিশোধ করতে হবে ১০০ মিলিয়ন ইউরো।

এই তিন বছরে কান্তে প্রিমিয়ার লীগের শিরোপা জিতেছেন দুবার। ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের খেলোয়াড় ও ফুটবল রাইটার্স অ্যাসোসিয়েশনের ভোটে লীগের সেরা খেলোয়াড়ের পুরষ্কারও জিতেছেন। অথচ ২১ বছর বয়স পর্যন্তও বোঝা যায়নি তিনি ফুটবলার হতে চলেছেন। সমসাময়িক বাকি ফুটবলারেরা যখন মিলিয়ন মিলিয়ন টাকা কামানোতে ব্যস্ত, কান্তে তখন অ্যাকাউন্টিংয়ে ডিপ্লোমা শেষ করছেন!

কিন্তু কান্তে ছোট থেকেই ফুটবল খেলতে চেয়েছিলেন। কেবল উচ্চতায় খাটো হওয়ার কারণে ফ্রান্সের কোন ক্লাবই তাকে ভর্তি করতে চায়নি। কিন্তু উচ্চতা না থাকলেও কান্তের ছিল প্রতিভা আর একাগ্রতা। মোনাকোর হয়ে ২১ বছর বয়সে পেশাদার ফুটবলে অভিষেক তার। এরপর থেকে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন সময়ের অন্যতম সেরা মিডফিল্ডার হিসেবে। তার সময়ের বাকি সুপারস্টাররা যেখানে ফেরারি কিংবা ল্যাম্বরগিনি চালান, কান্তে এখনও পড়ে আছেন ২০১৫ সালে ইংল্যান্ডে আসার পর প্রথম কেনা গাড়ি মিনি নিয়ে।

কান্তে গোল করেন না, করানও না। তাহলে তার এত দাম কেন? উত্তরটা যারা কান্তের খেলা দেখেছেন, তারা বেশ ভালোই জানবেন। যেখানে বিপদ হতে পারে, ঠিক সেখানেই হাজির হয়ে যান তিনি। গোল করা কিংবা অ্যাসিস্ট করা তার কাজ নয়। তার কাজ প্রতিপক্ষের পা থেকে বল কেড়ে নেয়া, প্রতিপক্ষ কখন কোন খেলোয়াড়কে বল পাস করতে পারে সেটা অনুমান করে সেই পাস দেয়ার রাস্তাটা বন্ধ করে দেয়া। কান্তে কেন ফ্রান্স দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, সেটা শুনুন কোচ দিদিয়ের দেশমের মুখেই, ‘ও আমাদের পরিকল্পনার খুব বড় একটা অংশ জুড়ে থাকে। প্রতিপক্ষের পা থেকে বল কেড়ে নিতে ও অনবদ্য।’

দলের প্রতি আক্রমণের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন কান্তে। লেস্টারে থাকতে নিজের এই গুণ অনেকবার দেখিয়েছেন কান্তে। প্রতিপক্ষের পা থেকে বল কেড়ে নিয়ে দ্রুত সেগুলো সতীর্থদের উদ্দেশ্যে বাড়াতেন তিনি, আর সেই বলগুলো ধরেই গোল করেছেন জেমি ভার্ডি-রিয়াদ মাহরেজরা। ফ্রান্স দলেও তিনি একই কাজ করেন, এখানে দেশম কাজে লাগান এমবাপের গতিকে।

ইউটিউবে কেউ তার ভিডিও দেখে না, লোকের মুখে মুখেও তার নাম ফেরে না। সমসাময়িক অনেক ফুটবলারদের মতো আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তাও নেই। কিন্তু তারপরেও একজন এন’গোলো কান্তেকে দলে পেতে চাইবেন যেকোনো কোচ। একজন মানসম্মত ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার না থাকলে দলের কী হাল হয়, সেটি তো ব্রাজিল-বেলজিয়াম ম্যাচেই কয়েকদিন আগে দেখেছেন ফুটবলপ্রেমীরা!

Comments

The Daily Star  | English
government changed office hours

Govt office hours 9am-3pm from Sunday to Tuesday

The government offices will be open from 9:00am to 3:00pm for the next three days -- from Sunday to Tuesday -- this week, Public Administration Minister Farhad Hossain said today

1h ago