ইংলিশদের থামিয়ে প্রথমবারের মতো স্বপ্নের ফাইনালে ক্রোয়েশিয়া

স্বপ্নযাত্রা ছুটছেই ক্রোয়েশিয়ার। নক আউট পর্বের আগের দুই ম্যাচে জয়টা এসেছিল টাইব্রেকারে। এদিনও মনে হচ্ছিল যেন পেনাল্টি শুট আউটেই নির্ধারিত হচ্ছে তাদের ভাগ্য। কিন্তু তা হতে দেননি মারিও মানজুকিচ। তার অতিরিক্ত সময়ের গোলে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দারুণ জয় এনে দেন তিনি। ফলে ১৯৬৬ এর চ্যাম্পিয়নদের থামিয়ে দিয়ে প্রথমবারের মতো ফাইনালের টিকেট পেল ক্রোয়েশিয়া।

স্বপ্নযাত্রা ছুটছেই ক্রোয়েশিয়ার। নক আউট পর্বের আগের দুই ম্যাচে জয়টা এসেছিল টাইব্রেকারে। এদিনও মনে হচ্ছিল যেন পেনাল্টি শুট আউটেই নির্ধারিত হচ্ছে তাদের ভাগ্য। কিন্তু তা হতে দেননি মারিও মানজুকিচ। তার অতিরিক্ত সময়ের গোলে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দারুণ জয় এনে দেন তিনি। ফলে ১৯৬৬ এর চ্যাম্পিয়নদের থামিয়ে দিয়ে প্রথমবারের মতো ফাইনালের টিকেট পেল ক্রোয়েশিয়া।

১৯৯৮ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে খেলতে এসেছিল ক্রোয়েশিয়া। প্রথমবারেই সেমিফাইনালে। কিন্তু এরপর আর সেভাবে জ্বলে উঠতে পারেনি তারা। ২০ বছর পর সেরা সাফল্যটি এনে দিল তাদের সোনালী প্রজন্ম। সুযোগ আছে শিরোপা জিতে নেওয়ারও। অথচ মাঠে নামার আগে ইতিহাস ও ঐতিহ্যে এগিয়ে ছিল ইংল্যান্ডই। এমনকি শক্তির দিক থেকেও। কিন্তু শুরুতে এগিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত হারতে হল থ্রি লায়ন্সদের।

আগের দুই ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার নায়ক ছিলেন গোলরক্ষক সোবাসিচ। শেষ শট নিয়ে পার্শ্বনায়ক ছিলেন ইভান রাকিতিচ। কিন্তু এদিন ম্যাচের সব আলো কেড়ে নেন মানজুকিচ। তবে দারুণ খেলেছেন ইভান পেরিসিচও। দলকে সমতায় ফিরিয়েছেন তিনিই। বেশ কিছু সুযোগও তৈরি করেছিলেন। আর এমন হারের জন্য ইংলিশরা দুষতেই অধিনায়ক হ্যারি কেইনকে। কারণ নিশ্চিত একটা গোল মিস না করলে হয়তো নির্ধারিত সময়েই জয় পেতে পারতো তারা।

দিনের প্রথম আক্রমণেই গোল পায় ইংল্যান্ড।  ম্যাচের ৫ মিনিটে ডি বক্সের সামান্য বাইরে থেকে কিয়েরান ট্রিপিয়ারের দারুণ ফ্রি কিকে গোল পেয়ে যায় ইংলিশরা।  এগিয়ে গিয়েও আক্রমণের ধারা বজায় রাখে থ্রি লায়ন্স। ১৩ মিনিটে কর্নার থেকে হ্যারি মাগুইরের হেড লক্ষ্যে থাকেনি।

১৯ মিনিটে দূরপাল্লার দারুণ এক শট নিয়েছিলেন ক্রোয়েশিয়ার ইভান পেরিসিচ। ১০ মিনিট পর দিনের সবচেয়ে সহজ সুযোগটি পেয়েছিলেন হ্যারি কেইন। বার পোস্টের সামনে গোলরক্ষককে একা পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। পর্যাপ্ত সময়ও পেয়েছিলেন। তবে সোবাসিচকে ফাঁকি দিতে পারেননি। দারুণ দক্ষতায় সে বল ফিরিয়ে দেন ক্রোয়েট গোলরক্ষক। ফিরতি বলেও সুযোগ ছিল। কিন্তু এবার বারে মেরে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ নষ্ট করেন ইংলিশ অধিনায়ক।

৩১ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে দারুণ এক শট করেন আন্তে রেবিচ। তবে তার শট দারুণ ভাবে ফিরিয়ে দেন পিকফোর্ড। চার মিনিট পর ব্যবধান বাড়ানোর দারুণ সুযোগ ছিল ইংলিশদের। ফাঁকায় পেয়েও লক্ষ্যে রাখতে পারেননি জেসে লিংগার্ড। ৬২ মিনিটে দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন রহিম স্টার্লিং। কিন্তু বারের সামনে গিয়েও কাটাতে গিয়ে সে সুযোগ মিস করেন তিনি। দুই মিনিট পর লক্ষ্যে দারুণ এক শট নিয়েছিলেন ইভান পেরিসিচ। তবে তা ফিরিয়ে দেন কাইল ওয়াকার।

৬৭ মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোলটি পায় ক্রোয়েশিয়া। সিমি ভ্রাসাইকোর ক্রস থেকে  লাফিয়ে টোকা দিয়ে বল জালে জড়ান পেরিসিচ। সমতায় ফিরে যেন আরও তেতে ওঠে দলটি। চার মিনিট পরই এগিয়ে যেতে পারতো তারা। পেরিসিচের শট বারে লেগে ফিরে আসে। ফিরতি বলে আন্তে রেবিচের দুর্বল শট সহজেই ফিরিয়ে দেন পিকফোর্ড। ৭৬ মিনিটে এগিয়ে যেতে পারতো ইংলিশরাও।  জেসে লিংগার্ডের কোণাকোণি শট লক্ষ্যে থাকেনি। এরপর আর গোল না হলে ১-১ গোলের সমতায় শেষ হয় নির্ধারিত সময়।

৯৮ মিনিটে কর্নার থেকে ক্ষীপ্র এক হেড নিয়েছিলেন জন স্টোনস। তবে গোল লাইন থেকে হেড দিয়ে তা ফিরিয়ে দেন ভ্রাসাইকো। সাত মিনিট পর দলকে এগিয়ে নেওয়ার সহজ পেয়েছিলেন মান্দজুকিচ। তবে তার শট দক্ষতার সঙ্গে ফিরিয়ে দিয়ে দলকে রক্ষা করেন ইংলিশ গোলরক্ষক পিকফোর্ড। তবে তিন মিনিট পর আর আটকাতে পারেননি মান্দজুকিচকে। পেরিসিচের হেড থেকে বল পেয়ে দারুণভাবে বল জালে জড়ান এ জুভেন্টাস তারকা।

পিছিয়ে পড়ে গোল শোধে মরিয়া হয়ে খেললেও এরপর আর তেমন জোরালো আক্রমণ করতে পারেনি ইংলিশরা। উল্টো আরও পিছিয়ে পরতে পারতো দলটি।  ১১৫ মিনিটে মার্সেলো ব্রোজোভিচের শট ফিরিয়ে দেন ইংলিশ গোলরক্ষক। শেষ মুহূর্তেও ক্রামাসিচের দারুণ এক শট ফেরান পিকফোর্ড। এরপর কিছুক্ষণ পর শেষ বাঁশি। উল্লাসে মেতে ওঠে ক্রোয়েটরা। প্রথমবার বিশ্বকাপের মতো আসরের ফাইনালে ওঠার স্বাদই যে অন্যরকম।

 

 

Comments

The Daily Star  | English

Wage growth still below inflation

Unskilled workers wage grew 8.01% in September this year when inflation was 9.92%

4h ago