কেবল মদ্রিচরা নন, হৃদয় জিতেছেন ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্টও!
পুরো ফুটবলবিশ্ব এখন মজে আছে ক্রোয়েশিয়ার ফুটবল সাফল্যে। মাঝারি শক্তির দল নিয়ে এসে দারুণ ফুটবল খেলে বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠায় শুভেচ্ছা আর অভিনন্দনে ভেসে যাচ্ছেন মদ্রিচ-রাকিটিচরা। তবে শুধু ক্রোয়েশিয়ার ফুটবল দল নয়, দর্শক-সমর্থকদের মন জয় করে নিয়েছেন আরও একজন, ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট কোলিন্দা-গ্রাবার কিতারোভিচও।
গত বিশ্বকাপে আলোচনায় এসেছিলেন উরুগুয়ের তখনকার প্রেসিডেন্ট হোসে মুজিকা। ‘বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র প্রেসিডেন্ট’ হিসেবে ব্যাপক আলোচনা হয়েছিল তাঁকে নিয়ে। নিজের আয়ের ৯০ শতাংশই দান করে দেয়া মুজিকার মাসিক বেতন তখন থাকতো মাত্র ৭৭৪ ডলার। চার বছর ঘুরে এসেছে আরেকটি বিশ্বকাপ, এবার আলোচনায় আরও এক প্রেসিডেন্ট, ক্রোয়াট প্রেসিডেন্ট কিতারোভিচ।
৪৬ বছর বয়সে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া কিতারোভিচ দেশটির ইতিহাসের সবচেয়ে কম বয়সী প্রেসিডেন্ট। ক্রোয়েশিয়ার ইতিহাসে প্রথম নারী প্রেসিডেন্টও তিনি। মদ্রিচরা কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলে দলের খেলা দেখতে দেশ থেকে রাশিয়ায় ছুটে এসেছিলেন তিনি। তাও আবার বিজনেস ক্লাসে নয়, সাধারণ ভক্ত সমর্থকদের সাথে ইকোনমি ক্লাসে উল্লাস করতে করতে রাশিয়ায় এসেছেন তিনি! শুধু তাই নয়, হাসিমুখে সমর্থকদের সাথে সেলফির ফ্রেমেও আবদ্ধ হয়েছেন তিনি। এমন প্রেসিডেন্টকে ভালো না বেসে উপায় আছে!
রাশিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দেখতে এসেও আলোচনায় ছিলেন তিনি। ভিআইপি সেকশনে নয়, বরং গ্যালারিতে দাঁড়িয়েই খেলা উপভোগ করেছেন তিনি। গায়ে জড়িয়ে এসেছিলেন দেশের জার্সি, গোলের পর শিশুতোষ উল্লাসও করেছেন। ম্যাচ শেষে ড্রেসিংরুমে গিয়ে ক্লান্ত-ঘর্মাক্ত খেলোয়াড়দের অভিনন্দন জানিয়ে এসেছেন আলিঙ্গন করে। তিনি যেন দেশের প্রেসিডেন্ট নন, ক্রোয়েশিয়ার একজন সাধারণ ফুটবলপ্রেমী!
১৯৬৮ সালের ২৯ এপ্রিল ক্রোয়েশিয়ার রিজেকাতে জন্ম নেয়া কিতারোভিচ একজন ভাষাবিদ। ক্রোয়েশিয়ান, ইংলিশ, স্প্যানিশ ও পর্তুগীজ এই চারটি ভাষায় অনর্গল কথা বলতে পারেন তিনি। এছাড়া ইতালিয়ান, জার্মান ও ফ্রেঞ্চ ভাষা সম্পর্কেও জ্ঞান আছে তাঁর। হার্ভার্ডে পড়াশোনা করে আসা কিতারোভিচ পোস্ট ডক্টরেট ডিগ্রি নিয়েছেন ক্রোয়েশিয়া থেকেই। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার আগে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে ক্রোয়েশিয়ার রাষ্ট্রদূত হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি।
Comments